সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরের চাঁদপুরে যমুনার তীব্র স্রোতে প্রায় ২৫টি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। গবাদিপশুসহ ঘরবাড়ির টিনের চাল চোখের সামনে নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় এলাকাজুড়ে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে বাড়ি-ঘর ছাড়াও মসজিদ, মাদ্রাসা, সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যেতে পারে।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেউ ঘরের খুঁটি খুঁলছে, কেউবা টিনের চাল সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। নারীরা বিছানাপত্র ও রান্নার জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। আশপাশের বহু মানুষসহ যমুনা পাড়ে বয়স্ক ও শিশুদের ভিড়।
জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকেলের দিকে যমুনার তীব্র স্রোত ও ঘূর্ণবর্তের সৃষ্টি হয়ে সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর চরের বসতি লালচাঁন, জুড়ানো, সাইফুল, রবি, ইয়াদুল, ডা. এরশাদের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়ি কয়েক মিনিটের মধ্যে নদীতে চলে যায়।
বয়োবৃদ্ধ আতাহার মন্ডল বলেন, ৭৩ বছর বয়সে প্রায় ২০ বার নদীগর্ভে চলে গেছে বসতভিটা। তবে এভাবে হঠাৎ করে যমুনার আগ্রাসী থাবায় লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া দেখলে কেউ স্বাভাবিক থাকতে পারবে না। বেশ কয়েক বছর ধরেই চাঁদপুর এলাকায় নদী ভাঙনে কয়েকশত বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। অবশিষ্ট এলাকা রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি। এখন আমরা যাবো কোথায়?
এ বিষয়ে সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, ভাঙন এলাকা থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে হাইস্কুল কমপ্লেক্স ভবন। এছাড়া অন্তত ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকিতে রয়েছে। কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিতের দিকে। দ্রুত তীর সংরক্ষণে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে হবে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে স্কুলগুলো নদীগর্ভে চলে যাবে।
সমাজসেবক হাফিজুর রহমান, শিক্ষক ইকবাল হোসেন ও আব্দুল মমিন, শিক্ষার্থী জহুরুল ইসলাম বলেন, নদীভাঙনের ভয়াবহতা দেখে আমরা হতবাক। চোখের সামনে কয়েশ মিটার এলাকা বিলীন হয়েছে। প্রায় ২৫/৩০টি বসতভিটা নদীতে চলে যাওয়ায় আমরাও আতঙ্কিত। এই চরের আশপাশের অন্তত ১২টি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ বসতি স্থাপন করেছিল। ভাঙনে সবাই এখন আতঙ্কিত। ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারকে বিশেষ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানায়।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, প্রায় ৪০০ মিটার এলাকা ও বেশ কিছু বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। আমরা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন