সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় উধুনিয়া ইউনিয়নে গোহালা নদী ইজারা বিতর্ক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই একই এলাকার উন্মুক্ত জলাশয় হিসেবে পরিচিত ধলাই বিল ইজারা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে বিলের মাঝখানে লাল নিশান টানিয়ে মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
উধুনিয়া ইউনিয়নের আগদিঘল জামে মসজিদের পক্ষ থেকে ১৬০ একর বিস্তৃত এ বিলটি ইজারা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে গত ২ অক্টোবর উধুনিয়া এলাকায় গোহালা নদীর আড়াই কিলোমিটার এলাকা ইজারা দেওয়া হয়। এ নিয়ে কালবেলাসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ইজারা বাতিল করে স্থানীয় প্রশাসন।
আগদিঘল এলাকার একাধিক মৎস্যজীবী বলেন, আগদিঘল গ্রামে চলনবিল অধ্যুষিত প্রায় ১৬০ একর বিস্তৃত এ ধলাই বিলে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
উন্মুক্ত জলাশয় হিসেবে এখানে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা মাছ ধরে জীবিকানির্বাহ করেন। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে আগদিঘল গ্রামের মসজিদের নামে এ বিলটি ইজারা দেওয়া হচ্ছিল। ২০২৪ সালের পর আর ইজারা দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি ফের ২ লাখ টাকায় বিলটি ইজারা দেওয়া হয়েছে।
গ্রামের আবু ইউনুস সরকার, সাইদুল সরদার, রহমান সরকার, আব্দুল ওহাব সরকার, রব্বান সরকারসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বিলটি ইজারা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জেলেরা। তারা বলেন, আশ্বিন মাসের শুরুতেই বিলের চারপাশে লাল পতাকা টানিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এমনকি স্থানীয়ভাবে মাইকিং করে জনসাধারণকে মাছ না ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছরই একইভাবে মসজিদ কমিটির নামে সিন্ডিকেট করে বিলের মাছ বিক্রি করে আসছে একটি মহল।
ইজারা প্রদানকারী রব্বান সরকার বলেন, গ্রামের সবার সিদ্ধান্তে বিল ইজারা দেওয়া হয়েছে। এই টাকা মসজিদ, মাদ্রাসা ও কবরস্থান উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে। এটি মুক্ত জলাশয় হলেও সরকারি জমি নয়, তাই ইজারা দিতে কোনো সমস্যা নেই।
উধুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন এই দাবির বিরোধিতা করে বলেন, কিছু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে বিল ইজারা দিয়েছেন। লাল পতাকা টানিয়ে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে দিচ্ছেন না। এতে সাধারণ জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ইজারার টাকা মসজিদে জমা দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ দরকার।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান কালবেলাকে বলেন, ধলাই বিল ইজারা দেওয়ার ব্যাপারে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। মঙ্গলবার (আজ) সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করা হবে।
উল্লাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন আক্তার রিমা কালবেলাকে বলেন, ধলাই বিলটি খাস খতিয়ানভুক্ত উন্মুক্ত জলাশয়। এটা ইজারা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিলটি ইজারা দেওয়ার বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন