

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নারী-পুরুষসহ ২৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট থানার ওসি।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহদী জানান, রাজনৈতিক নাশকতা ঠেকাতে জেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬ জনকে। তারা হলেন ভুঁইগড় পুরান বাজার এলাকার মোহাম্মদ নিজাম ওরফে সাউদ, ধর্মগঞ্জের সাইফুল ইসলাম, মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, পিলকুনির মো. সানি মোল্লা, তল্লা বড় মসজিদ এলাকার মিজানুর রহমান ফাহিম ওরফে ‘সুইচ গিয়ার ফাহিম’ ও পশ্চিম তল্লার আকাশ।
তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগ ও তারা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানান ফতুল্লা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন।
একই রাতে আড়াইহাজার থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ জনকে। তারা হলেন- বীনা আক্তার, আমিনুল ইসলাম, আপন, অনিক, নিলয়, নাজমুল, ইয়ামিন ইসলাম ও সালমান।
তারা আওয়ামী লীগের ঢাকা ১৩ নভেম্বরের লকডাউন সফল করতে ঝটিকা মিছিল ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করার জন্য বোতলভর্তি পেট্রল ও টায়ার হাতে নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়েছিল বলে জানান আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাছির উদ্দিন। বীনা আক্তার নরসিংদী জেলার কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন মহিলা লীগের সভাপতি। তারা বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় করা তিনটি হত্যা মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন : ‘আ.লীগের প্রভাবে’ যেভাবে সরকারি চাকরি পান ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস!
একই রাতে জেলার রূপগঞ্জ উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ৭ নেতাকর্মীকে। তারা হলেন মোস্তফা সারোয়ার নিশাত, রহুল আমিন নেভী, জাহিদুল হাসান, মো. সাইফুল ইসলাম, মনি শিকদার, মো. রায়হান ও মো. রফিকুল। তারাও লকডাউন সফল করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানান রূপগঞ্জ থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম।
অন্যদিকে একই রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪ জনকে। তারা হলেন- মো. ভোলা মেম্বার, মো. মাইন উদ্দিন, জিয়াউল হক জিয়া ও মো. রবিন। তারাও নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানান সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক মামলা করে সবাইকে আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠান বলে জানা গেছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী জানান, যেহেতু এটা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি তাই আমরা গত ১০ নভেম্বর থেকেই আমাদের কার্যক্রম শুরু করেছি। জেলার সর্বক্ষেত্রে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া রিজার্ভ থেকেও ৫০ সদস্য বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন আছেন। লকডাউন কর্মসূচি মোকাবিলায় জেলার ২৬টি স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা যাওয়ার সড়ক ও মহাসড়কগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আমাদের মোবাইল টিম ও যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
মন্তব্য করুন