সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচন নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য এএম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) শাকসু নির্বাচন আয়োজন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। আমরাও চাই, শিগগির শাকসু নির্বাচন হোক। তবে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা জরুরি। সংঘাত বা পাঠদান ব্যাহত হলে তা ক্ষতির কারণ হবে। আশা করি, শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি উৎসবের আমেজে নির্বাচনে অংশ নেবে এবং নির্বাচিত প্রতিনিধি পাবে।
উপাচার্য এএম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী আরও বলেন, বর্তমানে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলমান, যা অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে শেষ হবে। এরপর নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য দ্রুত নির্বাচন কমিশন গঠন, হল সংসদের গঠনতন্ত্র চূড়ান্তকরণ এবং পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ প্রকাশ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, শাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আলোচনা চলছে। আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তবে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। খুব শিগগিরই আলোচনায় বসে রোডম্যাপসহ প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হবে। আমাদের লক্ষ্য হবে সুষ্ঠু এবং বিতর্কমুক্ত একটি নির্বাচন।
শাকসু নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে নির্বাচন নিয়ে ভিন্নমত দিয়েছে সংগঠনগুলো।
শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, আমরা চাই নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করে ভোটার তালিকা ও রোডম্যাপ দ্রুত প্রণয়ন করা হোক। পাশাপাশি একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের আহ্বান জানাই। নির্বাচন কমিশন শক্ত ও নিরপেক্ষ হতে হবে যাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কোনো নির্বাচন কমিশনার নিজেকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিয়ে কমিশন থেকে পদত্যাগ না করেন।
অন্যদিকে শাবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে কিনা এমন প্রশ্ন তুলে বলেন, ৫ আগস্ট থেকে প্রশাসন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করেছে। ফলে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীরাও বিভ্রান্ত। তাই ন্যূনতম সময়সীমা দিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালুর পর নির্বাচন হলে সেটি বেশি ফলপ্রসূ হবে।
শাবিপ্রবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মাসুদ রানা তুহিন বলেন, ৫ আগস্টের পর প্রথম শাকসু নির্বাচনের দাবি আমরাই তুলেছিলাম। প্রশাসনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমরা চাই ছাত্ররাজনীতি কল্যাণমুখী হোক। সেই লক্ষ্যেই আমরা নতুন কাঠামো প্রস্তাব করেছি এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ শাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। এর আগে ১৯৯৩ সাল থেকে তিনবার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ২৮ বছর পর আবারও শাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি করেছে।
মন্তব্য করুন