কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের প্রাক্তন স্ত্রী গুলতেকিন খান সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন, যেখানে তিনি হুমায়ূনের সঙ্গে দাম্পত্য জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। এই পোস্ট ঘিরে এখন চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
গুলতেকিন তার লেখায় যুক্তরাষ্ট্রে কাটানো এক শীতের রাতের দুঃখজনক ঘটনা তুলে ধরেন। তার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি তরুণীদের উদ্দেশে বার্তা দেন—অল্প বয়সে যেন কেউ তার মতো ভুল না করে।
এই ঘটনার দুদিন পর হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখকের আত্মজীবনী ‘নিউইয়র্কের নীল আকাশে ঝকঝকে রোদ’ বইয়ের একটি অংশ শেয়ার করেন, যেখানে হুমায়ূন আহমেদ ক্যানসারে আক্রান্ত অবস্থায় নিউইয়র্কে চিকিৎসার সময়কার অভিজ্ঞতা লিখেছিলেন।
শাওনের পোস্টে উঠে আসে—কীভাবে মানসিকভাবে অসুস্থ ও বিদ্বেষপূর্ণ কিছু মানুষের মন্তব্য তাকে কষ্ট দিয়েছিল, আর কীভাবে হুমায়ূন আহমেদ তাকে সান্ত্বনা দিতেন।
শাওনের শেয়ার করা অংশটি অনেককে নাড়া দিয়েছে। সেখানে লেখা আছে, কেউ একজন ফেসবুকে কমেন্ট করেছিল—‘তোমার উচিত শিক্ষা হয়েছে, আল্লাহ ক্যানসার দিয়ে তোমার স্বামীকে শাস্তি দিয়েছেন।’ এমন ঘৃণ্য মন্তব্য শাওন আগেও পেয়েছেন, যেমন—মেয়ের মৃত্যুর পর কেউ লিখেছিল, ‘তোমার আরও শাস্তি হবে।’
এই অবস্থায় হুমায়ূন শাওনকে বলেছিলেন, ‘পৃথিবীতে মানসিকভাবে অসুস্থ অনেক মানুষ আছে। তাদের নিয়ে ভাবার দরকার নেই। যারা ভালো কথা বলছে, ভালোবাসা দিচ্ছে, তাদের কথাই ভাবো।’
শাওনের ফেসবুক পোস্টে আরও একটি ঘটনা উঠে এসেছে—একজন তরুণ হুমায়ূনের সঙ্গে দেখা করতে এসে সরাসরি বলে, ‘আপনার লেখা আমার জঘন্য লাগে’ এবং ‘আমি চাই আপনি তাড়াতাড়ি মারা যান।’
এই কথা শুনেও হুমায়ূনের প্রতিক্রিয়া ছিল শান্ত। তিনি বলেন, ‘আমি চাই তোমার জীবন দীর্ঘ হোক এবং তা অর্থবহ হোক।’ এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেকেই প্রশংসা করেন লেখকের সহনশীলতা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির।
মন্তব্য করুন