‘ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব’ শীর্ষক সেমিনার ও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ঢাকসু)।
মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার হলে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে রাজনৈতিক বিশ্লেষক, শিক্ষাবিদ, ছাত্রনেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. আব্দুর রব, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী এবং শহীদ আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজ।
আবরার ফাইয়াজ বলেন, বেশ কয়েক বছর পার হলেও এখনো আমার ভাই আবরার ফাহাদের হত্যার বিচার হয়নি। আমরা বিচার চাই। আবরার কোনো দলের প্রতিনিধি ছিলেন না- তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সন্তান।
ঢাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, জুলাই আন্দোলনের বীজ বপন করেছিলেন শহীদ আবরার ফাহাদ। সে সময় শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে হত্যা করা হতো, কিন্তু কোনো প্রতিবাদ উঠত না। আজ আমরা সেই ভয় ভাঙার প্রজন্ম। জাতির প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী বলেন, আবরার ফাহাদ বাংলাদেশের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। আমরা কুষ্টিয়ায় তার কবর জিয়ারত করেছি। তার মা আমাদের বলেছিলেন- ‘আমার ছেলের মতো যেন আর কোনো ছেলের ভাগ্য না হয়।’ আমরা চাই বঙ্গবন্ধু এভিনিউর নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ আবরার ফাহাদ এভিনিউ’ করা হোক।
ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে ইসলামপন্থি নেতাদের ফাঁসি পর্যন্ত সবকিছুই পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। যারা নামাজ পড়ে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাদের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আব্দুর রব বলেন, আমি ৪১ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছি। একসময় ‘আল্লাহু আকবর’ বললে এখানে লাশ পড়ত। আমাদের সমুদ্র এলাকা পর্যন্ত তারা বিক্রি করে দিয়েছে- এখন স্বাধীনতার নামে বাংলাদেশকেই বন্দি করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি আর আবরার একই বিভাগের ছাত্র ছিলাম। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণেই আবরারকে হত্যা করা হয়। আমাদের দেশে প্রগতিশীলতার নামে ইসলামবিদ্বেষ ও ভারতপ্রীতি লালিত হচ্ছে। আবরারের গল্প আমাদের প্রজন্মের সাহসের গল্প।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, আবরার ফাহাদ শুধু এক ব্যক্তির নাম নয়- তিনি প্রতিরোধের প্রতীক। তাকে ভুলে গেলে বাংলাদেশ নিজের আত্মপরিচয় হারাবে।
মন্তব্য করুন