রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আরও কোনো সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা হবে কি না, জানালেন প্রেস সচিব

প্রেস সচিব শফিকুল আলম। পুরোনো ছবি
প্রেস সচিব শফিকুল আলম। পুরোনো ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। এরপর সামাজিক মাধ্যমে কেউ কেউ দাবি করেন, সামনে আরও অনেক সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একইরকম আদেশ আসতে পারে। এ বিষয়টিকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন গুজব’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শনিবার (১১ অক্টোবর) রাত ৮টা ২০ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এ-সংক্রান্ত পোস্ট দেন তিনি।

পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, ‘আইসিটির প্রধান প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে প্রতিরক্ষা বাহিনীর আর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির কোনো পরিকল্পনা নেই।’

জনগণকে গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রেস সচিব যোগ করেন, ‘এসব সাধারণ জনগণ এবং বিশেষত সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির অপচেষ্টা।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই বিদ্বেষপূর্ণ গুজবের উদ্দেশ্য হলো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করা।’

এদিকে শনিবার ঢাকা সেনানিবাসের মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান ‘গত ৮ অক্টোবর আইসিটিত প্রথম দুটি চার্জশিট জমা পড়ে। এরপর তৃতীয় আরেকটা চার্জশিট জমা পরে। এই সংবাদটি আসা শুরু করেছে ওইদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে। আমরা টিভি স্ক্রলের মাধ্যমে জানতে পেরেছি চার্জশিট জমা পড়েছে এবং ট্রাইব্যুনাল এক্সেপটেড হয়েছে। চার্জশিটগুলোর মধ্যে একটা ছিল গুমসংক্রান্ত। যারা তখন ডিজিএফআইয়ে কর্মরত ছিলেন, তাদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ। আরেকটা ছিল র‍্যাবের টিএফআই নিয়ে, আরেকটা গত বছরের ৪-৫ আগস্টের রামপুরার ঘটনা নিয়ে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়ে গেল। পরোয়ানার পর আইজিপির কাছে চলে যায়। নিয়ম অনুযায়ী এবং ২২ তারিখ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো চার্জশিট কিংবা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাইনি। চার্জশিটে প্রায় ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার নাম এসেছে। এর মধ্যে অবসরে আছেন ৯ কর্মকর্তা, এলপিআরে আছেন একজন কর্মকর্তা ও কর্মরত আছেন ১৫ জন। যারা অবসরে চলে গেছেন তাদের প্রতি আমাদের সেনা আইন ওইভাবে খাটে না।’

তিনি বলেন, ‘তবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সংবিধান স্বীকৃতি বাংলাদেশের সকল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ অক্টোবর কর্মরত ১৫ ও এলপিআরে থাকা ১ সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে আসার জন্য একটা আদেশ সংযুক্তি করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আদেশে তাদের বলা হয়, ৯ অক্টোবর তারা যেন ঢাকা সেনানিবাসে সেনা হেফাজতে চলে আসেন। আমরা কিন্তু এখনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাইনি বা পুলিশও আমাদের কিছু জানায়নি। তারপরও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে এসব কর্মকর্তাদের হেফাজতে আসার জন্য আদেশ দিয়ে দেয়।’

মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এরকম প্র্যাকটিস করে। এটার মতো না হলেও এরকম কিংবা অনেক সেনসিটিভ কেসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৫৪ বছর পার করে এসেছে। যাদের নামে অভিযোগ উঠে, প্রথমে তাদের আমরা হেফাজতে নিয়ে নেই। তখন বিভিন্ন কোর্ট মার্শাল হয়। কোর্ট মার্শালের রায় অনুযায়ী তখন বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যাদের হেফাজতে আসতে বলেছি, তাদের মধ্যে সবাই রেসপন্স করেছে। কিন্তু এরমধ্যে শুধু একজন রেসপন্স করেননি। ওই কর্মকর্তা ৯ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো রেসপন্স করেননি। পরে ১০ অক্টোবর আমরা তার সঙ্গে আবার যোগাযোগের চেষ্টা করি এবং তার পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করি। আমরা জানতে পারি, উনি ৯ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন একজন আইনজীবী সঙ্গে দেখা করার কথা বলে। কিন্তু পরে তিনি আর বাসায় ফেরত আসেননি। তারপর তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও যোগাযোগ করতে পারেনি। তিনি হলেন মেজর জেনারেল কবির।’

জেনারেল কবির ইস্যুতে তিনি আরও বলেন, ‘এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নিয়ম অনুযায়ী তাকে (কবির আহমেদ) ইলিগ্যাল অ্যাবসেন্ট হিসেবে ঘোষণা করি । এরপর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আরও কিছু অফিসিয়াল কাজ সম্পন্ন করি ১০ অক্টোবর। এ বিষয়ে আমরা আরও কিছু কাজ করেছি। সঙ্গে সঙ্গে আমরা ডিজিএফআই, এনএসআই ও বিজিবিকে আমরা বলেছি, তোমরা যে যেখানে আছো স্থলবন্দর, বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে যেন উনি অবৈধভাবে দেশের বাইরে না যেত পারেন। ওনার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনাতেও আমরা লোক পাঠিয়েছি। উনি দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন। এ বিষয় মাথায় রেখেও আমরা খোঁজ নিয়েছি। উনি যাতে দেশের বাইরে না যেতে পারে, সেজন্য আমি নিজে ডিজি ডিজিএফআই, ডিজি এনএসআই ও ডিজি বিজিবির সঙ্গে কথা বলেছি।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অসুস্থ বিএনপি নেতা ডা. রফিকের খোঁজ নিতে বাসায় জোনায়েদ সাকি

আফগানদের কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে বাংলাদেশের সিরিজ হার

যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল ম্যাচ শেষে এলোপাতাড়ি গুলি, নিহত ৪

চট্টগ্রামে কনসার্টে গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১

চিহ্নিত ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের ওপর দেওয়া উচিত নয় : বিএনপি

জবি তরুণ কলাম লেখক ফোরামের নেতৃত্বে ইমন-সোহান

এনসিপির ‘পলিসি ও রিসার্চ উইং’ গঠন, দায়িত্ব পেলেন যারা

নড়াইলে সাংবাদিকদের মিলনমেলা

‘তিন মাসের মধ্যে ৬ লেনের কাজ দৃশ্যমান হবে’

শাবিপ্রবির ২৫ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত

১০

ওমরজাইয়ের বোলিং তোপে বিপদে বাংলাদেশ

১১

প্রবীণদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে : টুকু

১২

শুধু বক্তব্যে নয়, বাস্তব কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে বিএনপি মানুষের পাশে রয়েছে : আনোয়ারুজ্জামান

১৩

গুম-খুনে জড়িতদের সঙ্গে আপস নেই : আখতার হোসেন

১৪

বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান দুলুর

১৫

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার

১৬

গুম-দুর্নীতি বন্ধে ধানের শীষে ভোট দিন : আশিক

১৭

গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণ, ভাইয়ের পর চলে গেল বোনও

১৮

ইতিহাস গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল নামিবিয়া

১৯

জিয়া পরিবারের ত্যাগ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য : কফিল উদ্দিন

২০
X