গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, ২৯ জুলাই বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের ছত্রছায়ায় বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর প্রকাশ্যেই সন্ত্রাসী কায়দায় উপর্যুপরি হামলা-আক্রমণ চালানো হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতেই পরিকল্পিতভাবে বাসে আগুন দেওয়া হয়। গণমাধ্যমে এসব খবরাদি বিস্তারিত প্রকাশ পেয়েছে। এখন বিএনপিসহ বিরোধীদের দমন করার অজুহাত হিসেবে বাসে আগুন দেওয়ার এসব ঘটনাকে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু দেশের মানুষ সরকারের এসব অপকৌশল এবার ধরে ফেলেছে।
সোমবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তারা।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূমের সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ঈমনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল।
সমাবেশে সাইফুল হক বলেন, সরকারি দলের বিক্ষোভ গণতামাশার জন্ম দিয়েছে। মনে হয় দেশের মানুষের বিরুদ্ধেই তারা বিক্ষোভ করছে। সরকার ও সরকারি দল পুরোপুরি দেউলিয়া বলেই তাদের বিরোধীদলের লেজুড়বৃত্তি করতে হচ্ছে, বিরোধী দলের পিছনে পিছনে হাঁটতে হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার ও সরকারি দল যেভাবে আগুন নিয়ে খেলছে, এই আগুনেই হয়তো একদিন তাদের পুড়ে মরতে হবে।
শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, কোনো উসকানি ছাড়াই আমাকে ও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অথচ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলাকারী সরকারি দলের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তিনি বলেন, যত বাধা আর হামলা-আক্রমণ আসুক না কেন, দেশের মানুষ এবার এই সরকারকে বিদায় দিয়েই ঘরে ফিরবে।
অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, এই সরকার এখন পুলিশনির্ভর হয়ে দমন-নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার অপচেষ্টায় লিপ্ত। এরা মুখে গণতন্ত্র আর সংবিধানের কথা বললেও বাস্তবে তারা মানুষের ভোটের অধিকারসহ সব গণতান্ত্রিক অধিকারের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে। সে কারণে এই সরকারকে বিদায় দিতে আমরা এক দফা এবং ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের ভিত্তিতে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছি। তিনি আগামীকাল মঙ্গলবার বিভাগীয় শহরসহ জেলায় গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করারও আহ্বান জানান।
শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন , বিরোধী দলসমূহের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকারদলীয়দের হামলা-আক্রমণ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসেরই নমুনা। নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আতংক থেকেই তারা দমন, নিপীড়ন ও সন্ত্রাসের পথ গ্রহণ করেছে। এসব মোকাবিলা করেই দেশের মানুষ এবার নিজের অধিকার ও মুক্তি অর্জন করবে।
নেতৃবৃন্দ গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতা ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আবু ইউসুফ সেলিমের বিরুদ্ধে মামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং অনতিবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেন।
সমাবেশ শেষে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিল রাজপথ প্রদক্ষিণ করে বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, জেএসডির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফরিদুল হক প্রমুখ।
মন্তব্য করুন