বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায় জনগণ মানবে না দাবি করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি।
বুধবার (০২ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আজকে ফরমায়েশি রায় সরকারপ্রধানের হিংসা ও আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ। দেশজুড়ে যখন আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনগণের মধ্যে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে- সেটিকে বিভ্রান্ত করতে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের এটি একটি কূটচাল। একদফার আন্দোলনকে নেতৃত্বশূন্য করতে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে প্রতিহিংসা মেটানো হয়েছে। তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলার ফরমায়েশি রায় জনগণ মানে না। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দেশের জনগণ বিচারের নামে এই প্রহসন, এই ফরমায়েশি রায় ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।’
অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার সাজা প্রত্যাহারের আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৭ সালে তথাকথিত ওয়ান-ইলেভেনের জরুরি সরকার প্রতিপক্ষ দমনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে জিয়া পরিবারকে হেয় ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডল থেকে উচ্ছেদ করার গভীর চক্রান্তে মেতে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগে মামলাটি দিয়েছিল। কারণ তথাকথিত জরুরি সরকার ছিল বর্তমান আওয়ামী লীগেরই আন্দোলনের ফসল। জরুরি সরকারের সময়ে শেখ হাসিনার নামে ১৫টি দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির মামলা করা হলেও প্রধানমন্ত্রী পদের ক্ষমতা ব্যবহার করে অনুগত বিচারপতিদের দিয়ে সব মামলা প্রত্যাহার করিয়ে দেন শেখ হাসিনা। তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি। অথচ তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের এই মামলা চলার মতো কোনো আইনগত ভিত্তি উপাদান না থাকা সত্ত্বেও হিংসা চরিতার্থ করার আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান দুদককে দিয়ে শেখ হাসিনা তার নীলনকশা কার্যকর করার জন্য জোড়াতালি দিয়ে প্রতিহিংসা পূরণের রায় বের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সরকার তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সরিয়ে দেওয়া, আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া- এটাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে এসব করে বিএনপির চলমান আন্দোলন দমানো যাবে না। প্রধানমন্ত্রী, আপনি হিংসার পথে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের মজলুম নেতা তারেক রহমানকে নতজানু করতে পারবেন না।’
আরও পড়ুন : যেসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে
রায়ের প্রতিবাদে দলের পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি দেওয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি তো একটাই। এই সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত। ইতোমধ্যে সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নেতাকর্মীরা।’
সংবাদ সম্মেলনে মামলার অভিযোগে সম্পদের যেসব বিবরণী দাখিল করা হয়েছে তা মিথ্যা, কাল্পনিক, সাজানো ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন