বঙ্গবন্ধু আমাকে চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলার পরও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে আমার চাকরি ফিরে পেতে দুই বছর লেগেছিল। এই কারণে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। আমার মতো ক্ষুদ্র একজন মানুষ বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাৎ পেয়েছিলাম।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ স্মৃতিচারণ করেন তিনি।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রথমে যখন বঙ্গবন্ধুর দেখা পেলাম তখন বঙ্গবন্ধু বলেন তুমি কেন এসেছ। তখন আমি বলি স্যার, চাকরি ফিরে পেতে এসেছি। এরপরে তিনি বলেন, তোফায়েল দেখ; আমাদের ছেলে-মেয়েদের দরকার। এরপর বঙ্গবন্ধু বলেন, তোমরা যাও; আমি দেখছি। বঙ্গবন্ধু বলার পরও আমলাতান্ত্রিক কারণে চাকরি ফিরে পেতে দুই বছর লেগেছে। পল্টন ময়দানে দূর থেকে জাতির পিতাকে দেখতাম। কাছ থেকে দেখতে পাব এটা ছিল কল্পনা। আমি একসময় কেয়ারে চাকরি করতাম, এই সুবাদে টাঙ্গাইলে একবার জাতির পিতার সঙ্গে মিষ্টি খেয়েছিলাম।
তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় সচেতন ছিলাম। তখন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বিষয়টি সামনে আসে। পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যের বিষয়টি আমরা বুঝতে পারি। আমাদের এই বৈষম্য থেকে রক্ষা করবে কে? এই প্রশ্ন সবসময় মনে ঘুরপাক খেত। তখন জাতির পিতা নতুন সূর্য হিসেবে উদয় হন। আমাদের অন্ধকার জাতিকে আলোর পথ দেখান জাতির পিতা।’
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে একটা বিষয় পীড়া দেয়। সেটা হলো মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধে যাইনি, বন্দুক ধরিনি। আমি মানুষ হিসেবে ভীতু ছিলাম।’
এম এ মান্নান বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যা আমাদের জন্য লজ্জা ও কলঙ্কের। এমন জঘন্য কাজ এই পৃথিবীতে আর নেই। বন্ধুরূপী কিছু শত্রু জাতির পিতাকে হত্যা করেছে। সে সময় মালিবাগে ২০০ টাকায় মেসে ভাড়ায় থাকতাম, তখন সদ্য বিবাহিত জীবন। জাতির পিতার হত্যার কথাটা যখন প্রথম শুনলাম, তখন শোকে স্তব্ধ হয়ে গেলাম। প্রথমে আমি খবরটা বিশ্বাস করতে পারিনি।’
জাতির পিতার ছায়া প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করছি। ওনার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর মতো সাহস দেখা যায়। ন্যায়বিচার ও সাধারণ মানুষের জন্য তার মধ্যে মায়া দেখতে পাই। তিনি গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য দেখতে চান না। দেশ থেকে দারিদ্র্য বিতাড়িত করলে, সুখীসমৃদ্ধ দেশ গড়লে জাতির পিতার স্বপ্নপূরণ করতে পারব। এ জন্য চলুন আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করি। ‘
এ সময় পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকারের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় অংশ নেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মো. কাউসার আহাম্মদ, আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব), আবদুল বাকি, রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক (ডিজি) ড. বিনায়ক সেন, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) একেএম ফজলুল হক প্রমুখ।
মন্তব্য করুন