আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো আমলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এ দেশে নির্বাচন এখন সরকারি দলের একটা খেলায় পরিণত হয়েছে। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে না।
‘আওয়ামী লীগের আমলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়’—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের জবাবে আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহজাদপুরে সুবাস্তু শপিংমলের সামনে শ্রমিক-কর্মচারীর সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সীমাহীন দুর্নীতি, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, সরকারের পদত্যাগ ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।
ফখরুল বলেন, এ সরকার নির্বাচিত সরকার নয়। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়নি। ২০১৪ সালে তারা একতরফা নির্বাচন করেছে। ১৫১ জনকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করে সরকার গঠন করেছে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করে তারা জোর করে ক্ষমতা দখল করেছে।
ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে দেশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না। চাল, ডাল, তেল, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ কর্মজীবী মানুষের তা কিছুতেই কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমেরিকা থেকে ফিরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, আমেরিকা নাকি তাকে সরাতে চায়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন বক্তব্য আমরা আশা করিনি। তার মানে তিনি জেনে গেছেন—আন্তর্জাতিক বিশ্ব আপনাকে সমর্থন দিচ্ছে না; বাংলাদেশে তো আপনার সমর্থন নাই। প্রধানমন্ত্রী যে কথাগুলো বলছেন, তা দেশকে বিপদে ফেলে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ একটাই কথা বলছে, আপনি এই মুহূর্তে চলে যান। পরিষ্কার কথা, পদত্যাগ করুন। পদত্যাগ করে একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন। কারণ, এ দেশে শেখ হাসিনা সরকারের অধীন কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এ ব্যাপারে এই দেশের মানুষ নিশ্চিত।’
শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব বদরুল আলম এবং উত্তরের সদস্য সচিব কামরুল জামানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, শ্রমবিষয়ক সহসম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ উজ জামান, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ইশরাক হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবদলের মামুন হাসানসহ অনেকে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হক, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়া, উত্তরের আহ্বায়ক কাজী শাহ আলম রাজাসহ অনেকে।
বিকেল চারটার দিকে সমাবেশ শেষে পদযাত্রা বের হয়। সমাবেশস্থল থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে রামপুরার আবুল হোটেলের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন