সিন্ডিকেটে জিম্মি বেপারীরা
সংকট কাটিয়ে নতুন ধানে জমজমাট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোকাম। দেশের অন্যতম বৃহৎ এই মোকামে বৃহত্তর সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মাধবপুরসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন হাওরাঞ্চল থেকে হাজার হাজার মণ ধান নিয়ে আসছেন বেপারিরা। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ হাজার মণ ধান, যা টাকার অঙ্কে ৭-৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে এখন মুখর আশুগঞ্জ মোকাম। তবে দূর-দূরান্ত থেকে ধান নিয়ে আসা বেপারিদের অভিযোগ সিন্ডিকেটসহ নানা কারণে কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। আশুগঞ্জ মোকাম ঘুরে দেখা যায়, মেঘনা নদীর তীরবর্তী বিওসি ঘাটে অবস্থিত মোকামে এক মাস আগেও ছিল ধানের সংকট; কিন্তু বৈশাখে নতুন ধানের সরবরাহ বেড়েছে। জেলাসহ দেশের বিভিন্ন হাওরাঞ্চলের ধান নিয়ে মোকামে ভিড় করছেন বেপারিরা। মোকামজুড়ে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে নানা জাতের হাজার হাজার মণ ধানের বস্তা। এতে নতুন ধানে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বেচাকেনা। বৃহত্তর এই মোকামের ধান দিয়ে জেলার আড়াইশ চালকলের চাহিদা পূরণ করা হয়। প্রতিদিন ৬০-৭০ হাজার মণ ধান বিক্রি হচ্ছে, যা টাকার অঙ্কে ৭-৮ কোটি টাকা। এখানে বিআর-২৮ ধান শুকনা এবং ভেজা ভেদে মণপ্রতি ১ হাজার থেকে ১১২০ টাকা, বিআর-২৯ ধান ৯২০ থেকে ১ হাজার ২০ টাকা এবং মোটা ধান সাড়ে ৭শ থেকে ৯শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেপারিদের অভিযোগ, মোকামে সিন্ডিকেটসহ নানা কারণে তারা ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত। যে দামে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে আনেন। মোকামে তার চেয়েও ৪০-৫০ টাকা কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে তাদের মোটা অঙ্কের টাকা লোকসান হচ্ছে। সুনামগঞ্জ থেকে ১ হাজার মণ ধান নিয়ে আসা বেপারি মিজানুর রহমান জানান, তিনি ৯৫০ টাকা দরে স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে এনেছেন। অথচ মোকামে ধানের দাম ধরা হয় ৯২০ টাকা; কিন্তু ১০-১৫ বস্তা মাপার পর দাম হয়ে যায় ৯শ টাকা। আর ৫০ বস্তা মাপার পর দাম ধরা হয় ৮৭০ টাকা। সিন্ডিকেটের কারণে ধানের দাম কম। আমাদের কিছুই করার নেই। ধান নিয়ে তো আর ফিরে যেতে পারব না। তাই বিক্রি করে দিচ্ছি। আমার ৫০ হাজার টাকা লোকসান হবে। অন্য বেপারি শামীম মিয়া জানান, এই মোকামে ধানের দাম কম। আমাদের অবস্থা খারাপ, অনেক লোকসান হবে। কৃষকের কাছ থেকে ১১শ টাকা দরে ধান কিনে এনে ১ হাজার ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের পরতা হচ্ছে না। ৬-৭ জন শ্রমিক খাটিয়ে লাভের মুখ দেখছি না। জেলা চাল কল মালিক সমিতির সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বেপারিরা সিন্ডিকেটের যে অভিযোগ করেছে, তা সত্য নয়। আশুগঞ্জ মোকাম একটি মুক্ত মোকাম। এখানে প্রতিদিন ৭-৮ কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। বেপারিরা মুক্তভাবে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তবে ধানের মানভেদে দাম কিছুটা কমবেশী হয়। এখানে শুকনো ধানের তুলনায় ভেজা ধানের দাম স্বাভাবিকভাবেই কম থাকে। সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. কাউসার সজীব বলেন, দেশের অন্যতম বৃহৎ আশুগঞ্জ মোকাম এখন নতুন ধানে জমে উঠেছে। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ধানের বেচাকেনা চলছে। মোকামে বেশিরভাগ ধান স্থানীয় মিল মালিকরা কিনে থাকেন। তবে অতিরিক্ত মজুদের পাশাপাশি বেপারিদের হয়রানি মুক্ত রাখতে মোকামে মনিটরিং চলমান রয়েছে।
১৪ মে, ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাত্রলীগ দখল করে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করেছে : ছাত্রদল সভাপতি
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাত্রলীগ দখল করে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। তিনি বলেন, হলগুলোকে কুক্ষিগত করেছে। সেখানে ছাত্রদল বা অন্যদলের শিক্ষার্থীদের থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার ( ৯ মে) সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগ কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে হেলমেট বাহিনী হয়ে কীভাবে হাতুড়িপেটা করেছে তা সবাই দেখেছে। ক্যাম্পাসে আপনাদের তারা অবাধে ক্লাস করতে দেয় না, হলে থাকতে দেওয়া হয় না, পরীক্ষা থাকলে বাধা দেওয়া হয়। তারপরও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা থেমে থাকেনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব বীর ছাত্রদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আপনাদের স্বার্থ একটি তা হলো আপনারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছেন। যখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে সেদিন আপনারা বীর পুরুষ হিসেবে সম্মান পাবেন। খুব দ্রুতই সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, হল শাখা ও অন্যান্য কমিটির অনুমোদন দিব এবং এর তদারকি করব। সম্মেলনের প্রধান বক্তা ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ভাষা আন্দোলনের পর থেকে এখন পর্যন্ত সব আন্দোলন ছাত্রদল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। রাবিতে গত কয়েক বছর ধরে শাখা ছাত্রলীগ যেভাবে শিক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে তা আপনারা সবাই জানেন। তারা ২১ সালে এক হিন্দু শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে এমনকি  শিবির ট্যাগও দিয়েছে। তারা হলের খাবার চুরি করেছে। শিক্ষক আবু বকরকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, বুয়েটে আবরার হত্যা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হিন্দু শিক্ষার্থীকে হত্যা করেছে। সারা দেশে এমন ঘটনা ঘটে চলেছে তাদের দ্বারা। যেসব শিক্ষক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের এই কাজকে সমর্থন করছে তাদের নাম ইতিহাসে ঘৃণাক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময় ন্যায় এবং মানবিক মূল্যবোধের রাজনীতি ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে চায়‌। আমরা আশা করছি রাবি শাখা ছাত্রদল আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাবে। তিনি আরও বলেন, আপনারা আমাকে বীজ বপনের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি বপন করেছি। আমি জানি কোন গাছের ফল ভালো। সুতরাং প্রতিটি বিভাগ, হল, থেকে শুরু করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক পাতায়-পাতায় যেন ছাত্রদল স্থান পায় সে জন্য কারা কাজ করে যেতে পারবে তা আমি ভালো বলতে পারব। আমরা খুব শিগগিরই রাবি ক্যাম্পাসে স্লোগানে-স্লোগানে মুখরিত করতে চাই। আমরা একটি শক্তিশালী কমিটির অনুমোদন দিয়ে সাংগঠনিক গতিশীলতা ফিরিয়ে আনবো ইনশাআল্লাহ। রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমদ রাহীর সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ আলীর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালু প্রমুখ।
০৯ মে, ২০২৪

প্রবাসে স্বামীদের জিম্মি করে দেশে স্ত্রীদের ধর্ষণ (ভিডিও)
সুন্দরী স্ত্রীদের টার্গেট করে প্রথমে তাদের স্বামীকে বিদেশ নেওয়ার ব্যবস্থা করেন দেলোয়ার হোসেন আল মামুন। এরপর প্রবাসে স্বামীকে জিম্মি করে দেশে থাকা স্ত্রীকে ভিডিও কলে নগ্ন হতে বাধ্য করেন। এক পর্যায়ে দেশে এসে স্ত্রীদের ধর্ষণ করেন। এভাবে চলতে থাকে দিনের পর দিন। যখনই স্ত্রী বেঁকে বসে, তখনই বিদেশে স্বামীকে নির্যাতন করা হয়। এরপর স্ত্রীকে আবারও তার কাছে যেতে বাধ্য হয়। লোমহর্ষক এক ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদ পেতেছেন বরগুনার পাথরঘাটার দক্ষিণ চরদুয়ানি এলাকার বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী দেলোয়ার হোসেন আল মামুন। এই ফাঁদ পেতে ওই এলাকার অনেক গৃহবধূকে বিছানায় নিতে বাধ্য করেন তিনি। কিন্তু মান সম্মানের ভয় এবং স্বামীকে বাঁচাতে মুখ খুলছেন না কোনো নারী। তবে মাসের পর মাস ধর্ষিত হওয়ার পর কালবেলার কাছে মুখ খুলেছেন এক নারী। জানিয়েছেন, ভয়ংঙ্কর সব অভিযোগ ও অভিজ্ঞতার কথা। জানা গেছে, প্রায় তিন দশক ধরে প্রবাসে থাকেন আল মামুন। সেখানে অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়ার পর থেকেই এভাবে গৃহবধূদের টার্গেট করে আসছেন তিনি। গৃহবধূদের সঙ্গে তার অন্তত ডজন খানেক ভিডিও কালবেলার হাতে রয়েছে।  স্থানীয়রা জানান, নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাত দেলোয়ার হোসেন আল মামুন। বিদেশে যাওয়ার পর এলাকার বেকার যুবকদের সেখানে নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছেন এই প্রতারক। এভাবে হঠাৎ আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার পর টার্গেট করেন এলাকার গৃহবধূদের। এলাকাবাসী এসব ঘটনা জানলেও তারা কিছুই করতে পারছে না। শুধু প্রশাসনের কাছে মামুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।  স্বামীকে বাঁচাতে এবং মান-সম্মানের ভয়ে এসব ঘটনা মুখ বুজে সহ্য করছেন ভুক্তভোগীরা।  পাথরঘাটা থানা ওসি আল মামুন জানান, দ্রুতই তারা এসব ঘটনা তদন্ত করে দেখবেন। কোনো নারী অভিযোগ দায়ের করলে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সেই নারীকে সকল প্রকার আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।
০৩ মে, ২০২৪

গাজা ঘিরে অস্থিরতা বাড়ছে ইসরায়েলে / জিম্মি মুক্তির আন্দোলনে আরও চাপে নেতানিয়াহু
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। প্রায় সাত মাস ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থীশিবির, মসজিদ, গির্জাকেও লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। তবে এরপরও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে আটক থাকা বেশিরভাগ বন্দিকেই উদ্ধার করতে পারেনি ইসরায়েল। এই পরিস্থিতিতে গাজায় আটক বন্দিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে শনিবারও ইসরায়েলে রাস্তায় বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ। এ সময় তারা ইসরায়েলে আগাম নির্বাচনেরও দাবি জানান। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে এবং আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে শনিবার হাজার হাজার মানুষ ইসরায়েলজুড়ে বিক্ষোভ করেন। ইসরায়েলি সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের কাপলান স্কোয়ারে জড়ো হন এবং হামাসের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি এবং আগাম নির্বাচনের দাবি জানান। গাজায় আটক জিম্মিদের পরিবারও এদিনের বিক্ষোভে অংশ নেয় এবং বিক্ষোভকারীদের সামনে বক্তৃতা দেয়। বিক্ষোভের একপর্যায়ে কাপলান স্কোয়ারে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ছাড়া আরও হাজার হাজার ইসরায়েলি তেল আবিবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে বিগিন স্ট্রিটেও জড়ো হয়েছিলেন। অনেক লোক পশ্চিম জেরুজালেমে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগের বাড়ির কাছেও বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা গাজায় আটক থাকা ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনার দাবির পাশাপাশি আগাম নির্বাচনের আহ্বানও জানান। এ ছাড়া হাজার হাজার ইসরায়েলি সিজারিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনের কাছে এবং হাইফায়ও হাজার হাজার ইসরায়েলি বিক্ষোভ করেন। আনাদোলু বলছে, হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে গাজায় আটক দুই জিম্মিকে ইসরায়েলি সরকারের কাছে তাদের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য বন্দি বিনিময় চুক্তি করার দাবি জানাতে দেখা যাওয়ার পর ইসরায়েলে বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে। এ ছাড়া এই পরিবারগুলো গাজায় আটক বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারি সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, এমনকি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে হলেও এই পথে হাঁটার দাবি জানিয়েছে তারা। তেল আবিব বিশ্বাস করে, গাজায় এখনো ১৩৪ ইসরায়েলি নাগরিককে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েল তার কারাগারগুলোতে প্রায় ৯ হাজার ফিলিস্তিনিকে আটকে রেখেছে। অবশ্য ইসরায়েলি মিডিয়া ২৪০ থেকে ২৫৩ ইসরায়েলি বন্দির গাজায় আটক থাকার কথা বলে থাকে। যার মধ্যে তিনজনকে ইসরায়েল মুক্ত করেছিল এবং ১০৫ জনকে হামাস গত বছরের নভেম্বরে বন্দি বিনিময় চুক্তির সময় মুক্তি দিয়েছিল। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলার কারণে আরও ৭০ বন্দির নিহত হওয়ার কথা বলে থাকে হামাস।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

রমজান বাহিনীর হাতে জিম্মি তিস্তা চরের মানুষ
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা তিস্তা চর এলাকায় গড়ে ওঠা রমজান বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে তিস্তা চরের মানুষ। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ চরের বাসিন্দারা। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহির তাহু রমজান বাহিনীকে মদদ দিচ্ছেন। এ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করছেন একই ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রমজান আলী। সম্প্রতি এ বাহিনীর সদস্যরা ওই ইউনিয়নের এক যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কেটে দেওয়ার ঘটনায় আবারও আলোচনায় চলে আসে। জানা গেছে, কাকিনা ইউনিয়নের আয়নাল হক নামে এক যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটার ঘটনায় মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রমজান আলীকে গ্রেপ্তার ও তার ইউপি সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে সোমবার (২২ এপ্রিল) মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।  মানববন্ধন থেকে এলাকাবাসী জানান, ইউপি সদস্য রমজান আলী প্রভাব খাটিয়ে সরকারি ঘর টাকার বিনিময়ে ভূমিহীন মানুষের নিকট বিক্রি করে আসছে। গত ১৫ এপ্রিল ঘর না পাওয়া একজনের টাকা ফেরত চাওয়ায় রমজান বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে যুবলীগ কর্মী আয়নাল হকের ওপর হামলা করে তাকে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে ও বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার পায়ের রগ কেটে দেয়। বর্তমানে সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার এক সপ্তাহ পার হলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। সে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা বলেন, রমজান আলী ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিস্তা চর এলাকায় তিনি গড়ে তুলেছে সন্ত্রাসী বাহিনী। যা এলাকায় রমজান বাহিনী নামে পরিচিত। এই রমজান বাহিনী চরের জমিদখলসহ নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি ইউপি সদস্য রমজান আলী এক ভুক্তভোগী পরিবারকে ভয় দেখিয়ে একটি ধর্ষণ মামলার ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছে। তারা আরও বলেন, এই বাহিনীর সাহায্যে সে রাতের আঁধারে গরিব অসহায় মানুষের ভোগদখলে থাকা খাস জমি দখল করে আসছে। সপ্তাহখানেক আগেও এক অসহায় গরিব মানুষের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে ভিটা ছাড়া করে ভোর রাতে সে জমি দখলে নিয়েছে।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

ফিলিস্তিনে জিম্মি দুই ইসরায়েলির ভিডিও প্রকাশ
ফিলিস্তিনে এখনো অব্যাহত রয়েছে ইসরায়েলি অভিযান। ইসরায়েলির এ অভিযানের মধ্যে দুই জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। শনিবার (২৭ এপ্রিল) ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার হামাস একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে। এতে গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলা শুরু পর আটক দুই ইসরায়েলি জিম্মিকে দেখা গেছে।  হামাসের প্রকাশিত ভিডিওটির সঙ্গে আগের প্রকাশ করা জিম্মিদের ভিডিওর মিল রয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি এটিকে মনস্তাত্ত্বিক সন্ত্রাসবাদ হিসেবে  উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে।  ভিডিও প্রকাশ করা দুই জিম্মি হলেন কেইথ সিজেল এবং ওমরি মিরান। তারা দুজনেই ক্যামেরার সামনে আলাদাভাবে কথা বলেন। এ ছাড়া তারা পরিবারের প্রতি ভালোবাসা জানান এবং তাদের মুক্তির ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। রয়টার্স জানিয়েছে, মিরান নামের ওই ব্যক্তিকে নাহাল ওজ থেকে জিম্মি করা হয়। ওই সময় এলাকাটিতে হামাসের অভিযান চলছিল। তখন নিজ স্ত্রী ও দুই কন্যার সামনে থেকে তাকে জিম্মি করা হয়।  অন্যদিকে সিজেল দ্বৈত মার্কিন নাগরিক। তাকে স্ত্রীসহ ইসরায়েলের একটি সীমান্ত শহর থেকে জিম্মি করা হয়েছিল। পরে অবশ্য নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির সময়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।  হামাস ভিডিওটি এমন সময়ে প্রকাশ করছে যখন ইহুদীগোষ্ঠী ছুটির দিন উদযাপন করছিল। এ দিনটি ইহুদিরা বাইবেল অনুসারে মিসরে দাসত্ব থেকে মুক্তির জন্য উদযাপন করে থাকে।  ভিডিওতে একপর্যায়ে সিজেল কাঁদতে কাঁদতে ভেঙে পড়েন। এ সময় তিনি গত বছর পরিবারের সঙ্গে ছুটির দিনটি উদযাপনের স্মৃতিচারণ করেন। এ ছাড়া পুনরায় পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।  গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। বর্তমানে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা চলছে। এতে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

রাস্তায় বেড়া দিয়ে প্রবাসীর বাড়ির লোকজনকে জিম্মি
ময়মনসিংহের ত্রিশালে জমিসংক্রান্ত বিরোধে বাড়ির রাস্তায় বেড়া দিয়ে ওমান প্রবাসী এক ব্যক্তির বাড়ির পাঁচ পরিবারকে জিম্মি করে রেখেছে তারই প্রতিবেশীরা। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই পরিবারগুলো।   ঘটনাটি উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী খারহর গ্রামের। সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওমান প্রবাসী ফরহাদ হোসেনের বাবা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই ও চাচাদের মোট ৫টি পরিবারের লোকজনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ থাকায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রতিবেশী আব্দুল মালেক, স্বজল, শান্তরা জোরজবরদস্তি করে বিভিন্ন অজুহাতে তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তায় টিন দিয়ে, বেড়া দিয়ে ও কাঁটা বিছিয়ে রেখে তাদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।  ভোক্তভুগী পল্লী চিকিৎসক আব্দুল হাই বলেন, চলাচলের রাস্তা বন্ধ করায় আমরা ৫টি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছি। বছর দুয়েক আগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সহায়তায় উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে রাস্তা খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি সে রাস্তায় আব্দুল মালেক, স্বজল, শান্ত আবারও টিনের বেড়া ও কাঁটা বিছিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। আমরা প্রশাসনের কাছে এর বিচার দাবি করছি। ওমান প্রবাসী ফরহাদ হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, আমি একজন প্রবাসী। পরিবার-পরিজনের কষ্ট দূর করার জন্যই প্রবাসে আছি। যাদের কষ্ট দূর করতে আমার এই প্রবাসে থাকা। অথচ দেশে তারাই ভালো নেই। প্রতিনিয়ত শুনতে হয় তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা। এসব শুনে কী ভালো লাগে? আমার পরিবারের লোকজন বেশ কিছুদিন ধরে এক প্রকার বন্দি জীবন কাটাচ্ছে। প্রভাবশালী প্রতিবেশীরা তাদের চলাচলের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার মা মারা যাওয়ার পর মায়ের মরদেহটা পর্যন্ত বের করার সুযোগ দেয়নি তারা। অনেক কষ্ট করে ঝোপঝাড় পাড়ি দিয়ে মাকে কবরস্থ করা হয়েছে। এসব শুনতে হয়েছে প্রবাসে থেকেই। আমি আমার অসহায় পরিবারকে একপ্রকার জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পেতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি। স্থানীয় প্রতিবেশী মজিবুর রহমান বলেন, রুহুল আমিনের পৈতৃক সম্পত্তিতে মালেকের পরিবার অবৈধভাবে বেরিকেট সৃষ্টি করে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। এটা নিয়ে অনেক দেন দরবার হলেও তারা কারও কথা শুনছে না। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাড়িতে গেলে তারা প্রতিবেদক আসার খবরে অন্যত্র চলে যায়।  স্থানীয় ইউপি সদস্য তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি মীমাংসার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। তারা আমার কথা শোনে না। আমি কি এ বিষয় নিয়ে মারামারি করব? ত্রিশাল উপজেলার উপজেলা কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল আহমেদকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমি মাত্রই শুনলাম। মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

গাজায় জিম্মি ইসরায়েলির ভিডিও প্রকাশ
জিম্মি থাকা এক ইসরায়েলির ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস। বুধবার ভিডিওটি প্রকাশ হয়। তবে সোমবারই যুক্তরাষ্ট্র ভিডিওটি পেয়েছিল বলে নিশ্চিত করেছে। গাজার রাফা শহরে হামলার জন্য ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) চূড়ান্ত প্রস্তুতির খবরের মধ্যে ভিডিওটি প্রকাশ হলো। বৃহস্পতিবার সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, হার্শ গোল্ডবার্গ-পোলিন নামের ওই তরুণ ইসরায়েলি-আমেরিকান। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। সে সময় গোল্ডবার্গ-পোলিনকে ধরে নিয়ে যায় তারা।    ওই দিনের একটি ভিডিওতে বিষয়টি দেখা গেছে। তখন তিনি গুরুতর আহত ছিলেন। অনেকে ধারণা করছিলেন, পোলিন মারা গেছেন। কিন্তু তার বেঁচে থাকার প্রমাণস্বরূপ ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। ভিডিওতে চেয়ারে বসা পোলিনকে খুবেই বিমর্ষ দেখা গেছে। তার এক হাত কনুই থেকে নিচের অংশ বিচ্ছিন্ন ছিল।  জানা গেছে, ২৩ বছর বয়সী গোল্ডবার্গ-পোলিনকে নোভা সংগীত উৎসবে ছিলেন। সেখানে হামলা করে হামাস যোদ্ধারা। এ সময় একটি বাংকারে আশ্রয় নেন তিনি। ওই বাংকার থেকে গ্রেনেড বাইরে ছুড়ে ফেলতে সাহায্য করেছিলেন গোল্ডবার্গ-পোলিন। তাতে গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়ে তিনি মারাত্মক আহত হন। প্রকাশিত ভিডিওতে গোল্ডবার্গ-পোলিন নিজের পরিচয়, জন্মতারিখ ও মা–বাবার নাম বলেন। তিনি বলেন, প্রায় ২০০ দিন ধরে জিম্মি আছেন। বিষয়টি খুবই বেদনাদায়ক বলে উল্লেখ করেন। পোলিনকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করতে শোনা গেছে। যেমনটি এর আগে প্রকাশিত জিম্মি ইসরায়েলের নাগরিকদের ভিডিওতে দেখা গেছে। তবে ভিডিওটি অসংখ্যবার কাট করা হয়েছে। বারবার ফুটেজ জোড়া দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায়, হামাস পোলিনকে এসব বলতে বাধ্য করে থাকতে পারে। এ ছাড়া পোলিন পরিবারকে ভালোবাসার কথা জানান। তিনি পরিবারের সদস্যদের ধৈর্য ধরতে বলেন। ভিডিওয়ের পুরোটা সময় পোলিনের চোখেমুখে ছিল আতঙ্ক। কান্নার ভাব ছিল চেহারাজুড়ে।  গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা করে ১ হাজার ২০০-এর বেশি মানুষকে হত্যা করে। তাদের এলোপাতাড়ি গুলি ও বোমায় হাজারো বেসামরিক নাগরিক আহত হন। এ সময় দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় তারা। এরপরই গাজায় সর্বাত্মক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

কত মুক্তিপণে ছাড়া পেলেন ২৩ নাবিক?
বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর থেকেই জাহাজটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে চলছিল নানা আলোচনা-সমালোচনা। নানা আলোচনার পর দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা হয় জাহাজের মালিকপক্ষের। এরপর দস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে যায়। মুক্ত হয় জাহাজ ও ২৩ বাংলাদেশি নাবিক। কীভাবে নাবিকরা জাহাজসহ মুক্ত হলো তা এখনো পরিষ্কার করছে না কোনো পক্ষ। মুক্তিপণের অঙ্ক কত, তা জানে তিনটি পক্ষ। এক. সোমালিয়ার দস্যুরা, যারা জাহাজটি জিম্মি করেছিল। দুই. মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ এবং তিন. লন্ডনভিত্তিক জাহাজের বিমা কোম্পানি। এই তিন পক্ষের মধ্যে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বললে তারা বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলতে নারাজ। রোববার (১৪ এপ্রিল) চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিম বলেন, আমি উদ্ধার প্রক্রিয়া হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে মনোনীত প্রতিনিধি। আমাদের সঙ্গে ওদের কনফারেন্সিয়াল অ্যাগ্রিমেন্ট হয়েছে মুক্তিপণের বিষয়ে আলোচনা না করার জন্য। সেই অ্যাগ্রিমেন্ট অনুযায়ী আমি আপনাদের সঙ্গে কিছু শেয়ার করতে পারব না। কারণ এটা আমি সই করেছি।  তবে তিন ব্যাগে কত ডলার ছিল, তা নিয়ে মালিকপক্ষ কোনো কিছু না জানালেও একাধিক সূত্রে নানা তথ্য মিলেছে। সোমালিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এসব সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, সোমালিয়ার দস্যুরা ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ পেয়ে জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে। সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি সোমালিয়া অনলাইনের এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় বলা হয়, পাঁচ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে দস্যুরা। আরেকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পান্টল্যান্ড মিররের এক্স বার্তায় স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, পাঁচ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ নেওয়ার পর জলদস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে। পান্টল্যান্ড পোস্টের অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ আদায়ের পর দস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে। জলদস্যুরা তীরে অবতরণের সময় সেখানে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছিলেন। গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটি ছিনতাই করে দস্যুরা। ছিনতাইয়ের ৯ দিনের মাথায় দস্যুরা প্রথম মালিকপক্ষের কাছে মুক্তিপণের দাবি জানায়। এরপরই শুরু হয় দর-কষাকষি। দর-কষাকষি চূড়ান্ত হওয়ার পর গতকাল সন্ধ্যার আগে মুক্তিপণের অর্থ দেওয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার পর জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

নাবিকদের মুক্তি নিয়ে হয়েছিল ‌‌‘গোপন চুক্তি’ 
বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর থেকেই জাহাজটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে চলছিল নানা আলোচনা-সমালোচনা। নানা আলোচনার পর দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা হয় জাহাজের মালিকপক্ষের। এরপর দস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে যায়। মুক্ত হয় জাহাজ ও ২৩ বাংলাদেশি নাবিক। কীভাবে নাবিকরা জাহাজসহ মুক্তহলো তা এখনো পরিষ্কার করছে না কোনো পক্ষ।  রোববার (১৪ এপ্রিল) চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিম বলেন, আমি উদ্ধার প্রক্রিয়া হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে মনোনীত প্রতিনিধি। আমাদের সঙ্গে ওদের কনফারেন্সিয়াল অ্যাগ্রিমেন্ট হয়েছে মুক্তিপণের বিষয়ে আলোচনা না করার জন্য। সেই অ্যাগ্রিমেন্ট অনুযায়ী আমি আপনাদের সঙ্গে কিছু শেয়ার করতে পারব না। কারণ এটা আমি সই করেছি। উদ্ধার প্রক্রিয়ায় আমরা আমেরিকান নিয়ম মেনেছি এবং ইউকে (যুক্তরাজ্য) ও সোমালিয়ার নিয়ম মেনেছি। ফাইনালি কেনিয়ার নিয়মও মেনেছি। সবার সঙ্গে আমাদের অ্যাগ্রিমেন্ট করা আছে এ বিষয়ে আলোচনা না করার জন্য। তবে আমি আবার বলি, আমরা সবকিছু আইন মেনে করেছি। তবে এ বিষয়ে জানা গেছে, জলদস্যুদের দাবি অনুয়ায়ী মুক্তিপণ নিয়ে একটি উড়োজাহাজ বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেলে জিম্মি জাহাজের ওপর চক্কর দেয়। এসময় জাহাজের ওপরে ২৩ নাবিক অক্ষত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর উড়োজাহাজ থেকে ডলারভর্তি ৩টি ব্যাগ সাগরে ফেলা হয়। স্পিডবোট দিয়ে এসব ব্যাগ জলদস্যুরা কুড়িয়ে নেয়। জাহাজে ওঠে দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ গুনে নেয় জলদস্যুরা। তবে চুক্তি অনুযায়ী জাহাজটি যথাসময়ে ছেড়ে দেয়নি দস্যুরা। পরে তারা আশপাশে কেউ আটক করছে কি না সেটি নিশ্চিত হয়ে জাহাজটি থেকে দস্যুরা নেমে যায়।  কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান বলেন, একটা কথা বারবার আসছে, কেন আমরা আর্মড গার্ড নেইনি। এটার কারণ হচ্ছে আমরা হাই রিস্ক এলাকার বাইরে ছিলাম। সাধারণত ২০০ নটিক্যাল মাইলের ভেতর হাইরিস্ক এলাকা হিসাব করা হয়। কিন্তু আমরা যাচ্ছিলাম মোটামুটি ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে দিয়ে। গত ৮-৯ বছরে ওই এলাকায় এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি, যেখানে আর্মড গার্ড নিতে হয়। এ কারণে আমরা আর্মড গার্ড নেইনি। এদিকে, জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার প্রসঙ্গে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা তাদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করেছি, দীর্ঘদিন কথাবার্তা চলেছে। এখানে মুক্তিপণের কোনো বিষয় নেই। আমাদের আলাপ-আলোচনা এবং বিভিন্ন ধরনের চাপ আছে এখানে। সেই চাপগুলো এখানে কাজে দিয়েছে। প্রসঙ্গ, গত ১২ মার্চ দুপুরে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫৮ হাজার টন কয়লা নিয়ে ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪
X