পশ্চিমাদের আতঙ্ক এস-৪০০ কতটা শক্তিশালী?
বর্তমান বিশ্ব পরাশক্তিগুলো সমরাস্ত্রে কে কাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে সেই প্রতিযোগিতায় নেমেছে। সেই দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ট্রিয়াম্ফ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম রুশ এস-৪০০। মার্কিন সামরিক জোট এর নাম দিয়েছে এসএ–২১ গ্রাউলার। এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ক্রয়ের কারণে ন্যাটো সদস্য তুরস্কের ওপর সামরিক সরজ্ঞাম রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমেরিকা। আজ জানব এস-৪০০ এর গঠন ও এটি কীভাবে কাজ করে তা নিয়ে।  এস-৪০০ মূলত ৭০-এর দশকে নির্মিত ‘এস–৩০০’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নত সংস্করণ। এর নকশা তৈরি রুশ সামরিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এনপিও আলমাজ সেন্ট্রাল জিডাইন ব্যুরো অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, আর নির্মাণ করে রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা করপোরেশন ‘এমকেবি ফাকেল’। প্রকল্পটির প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন ডক্টর আলেক্সান্দর লেমানস্কি। ২০০৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ সশস্ত্রবাহিনীতে এস-৪০০ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এস-৪০০ এর এক ব্যাটারি মানে পুরো দুটি ব্যাটিলিয়ন। অর্থাৎ এক ব্যাটারি এস-৪০০ কিনলে পুরো দুইটি ব্যাটিলিয়ন কিনতে হবে। নির্দিষ্টসংখ্যক ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রসহ প্রতিটি এস-৪০০ ব্যাটারির রপ্তানি মূল্য হতে পারে ১ থেকে ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। বলা হয়ে থাকে এস-৪০০ একসঙ্গে ৩০০টি লক্ষ্যবস্তুর ওপর নজরদারি চালাতে সক্ষম। এর স্বয়ংক্রিয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারি এক সঙ্গে ৩৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে, যা ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।  এস-৪০০ এ রয়েছে কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল ভেহিকল, লং রেঞ্জ সার্ভেলেন্স রাডার, এনগেজমেন্ট অ্যান্ড ফায়ার কন্ট্রোল রাডার ও অল এলটিটিউড একুইজেশন রাডার ও মোবাইল মাস্ট রাডার। এর মধ্যে এনগেজমেন্ট রাডার ৬০০ কিলোমিটারের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩০০টি লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত করে তার তথ্য কমান্ড পোস্টে পাঠায়। সেখান থেকে লক্ষ্যবস্তু নির্দিষ্ট করার পর এনগেজমেন্ট অ্যান্ড ফায়ার কন্ট্রোল রাডার ক্ষেপণাস্ত্রকে লক্ষ্যস্তুতে আঘাতে সহযোগিতা করে। পশ্চিমাদের সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে স্টেল্থ প্রযুক্তি সম্পন্ন বিমান বা ড্রোনও সহজেই শনাক্ত করা যায়। এমনকি খুব নিচ দেয় উড়ে আসা কোনো লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণেও এস-৪০০ যথেষ্ট কার্যকর এর পাশাপাশি এস-৪০০ শত্রুপক্ষের রাডার জ্যাম করতে পারে। সাধারণত একটি এস-৪০০ ব্যাটালিয়নে ৮টি লঞ্চার, ৩২টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১টি কমান্ড পোস্ট থাকে। এতে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর পাল্লা যথাক্রমে ৪০ কিলোমিটার, ১২০ কিলোমিটার, ২৫০ কিলোমিটার ও ৪০০ কিলোমিটার।
১৬ মে, ২০২৪

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রেই আটকা মার্কিন-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তি
সৌদি আরব যদি ইসরায়েলকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দেয়, সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের নেতৃস্থানীয় এই দেশটির সঙ্গে প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র স্বাক্ষর করবে না। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সম্প্রতি ব্রিটেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করেন। অন্যদিকে সৌদি আরবও জানিয়ে দিয়েছে, ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত না হলে তারাও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে না। আর এরকম অবস্থায় আটকে আছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের বহুল আলোচিত ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’। খবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ও আল আরাবিয়ার ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে সাক্ষাৎকারে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এ সৌদির অন্তর্ভুক্তি-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে সুলিভান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মূল ভিত্তি এবং দর্শন হলো সমন্বয় বা ঐক্যের ভিত্তিতে সামনে অগ্রসর হওয়া। ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক এই দর্শনের একটি অংশ, তেমনি অন্যদিকে ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণও এর আর একটি অংশ। এই দুই অংশই পরস্পরের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত। আপনি কোনোটিকেই বাতিল করতে পারবেন না। যদি বাতিল করেন, তাহলে সমঝোতার ভিত্তিই আর থাকে না।’ উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম ২০১৮ সালে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ মুসলিম আরব রাষ্ট্রগুলোর সামনে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ড’ নামের একটি বিশেষ চুক্তির প্রস্তাব করেন। এ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক-বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করবে, আব্রাহাম অ্যাকর্ডের আওতায় সেসব দেশকে বিশেষ সামরিক ও বাণিজ্যিক সহায়তা দেবে ওয়াশিংটন। তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনের দুই বছরের তৎপরতার পর ২০২০ সালে মিশর, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মরক্কো ইসরায়েলকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কও স্থাপন করে। কিন্তু এই চুক্তির যে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য-মধ্যপ্রাচ্যের নেতৃস্থানীয় দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপন, তা তখন পর্যন্ত অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছিল। ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ের পর ট্রাম্পের উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অধরা সেই লক্ষ্য পূরণে মনোযোগী হন। তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা সৌদির সরকারকে প্রস্তাব দেন, দেশটি যদি ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তাহলে পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হবে সৌদি। প্রসঙ্গত, পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী দেশগুলোর তালিকায় নিজেদের নাম লেখানো সৌদির সরকারের দীর্ঘদিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা। গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও সৌদির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারটি বেশ অগ্রসরও হয়েছিল; কিন্তু গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের হামলা এবং তার জবাবে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান তা থামিয়ে দেয়। চলতি সপ্তাহে সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, রিয়াদ এবং ওয়াশিংটন প্রতীক্ষিত সেই চুক্তির ‘খুবই কাছাকাছি’ রয়েছে। তবে তিনি এ ও বলেছেন, সৌদি আরব স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্থাপনের জন্য একটি সঠিক ও আদর্শ পথ অনুসন্ধানের পক্ষে। ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্র না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’
০৭ মে, ২০২৪

স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস নিলেন আনসার সদস্য
চুয়াডাঙ্গায় স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে এক আনসার সদস্য ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রোববার (৫ মে) রাত ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ আনসার ব্যাটালিয়নের পার্শ্ববর্তী উসমান গনির ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আরিফুল ইসলাম (৩৫) দিনাজপুর সদর উপজেলার জয়দেবপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে। তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহে অবস্থিত আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চুয়াডাঙ্গা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট সঞ্জয় চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আরিফুল ইসলাম সপরিবারে ব্যাটালিয়নের পাশেই ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। বৃহস্পতিবার ছুটিতে স্বপরিবারে দিনাজপুরে বাড়িতে যান। ছুটি শেষে রোববার একাই ভাড়া বাসায় ফেরেন তিনি। এরপর রাত ৯টা পর্যন্ত ব্যাটালিয়নে ছিলেন। রাতে বাসায় ফেরেন। এরপর বাড়িওয়ালাকে তার স্ত্রী রাতে ফোন দিয়ে জানান, ঘরের মধ্যে তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। বাড়িওয়ালা ঘরের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। বিষয়টি থানা পুলিশ ও আমাদেরকে জানান। আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি, পারিবারিকভাবে মনোমালিন্যের জেরে স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখেই তিনি গলাই ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি আরো জানান, মরদেহ সুরতহাল ও ময়না তদন্ত শেষ হয়েছে। সোমবার (৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আনসার ব্যাটালিয়নে জানাজা শেষে মরদেহ তার পরিবারের কাছে দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।  চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে এক আনসার সদস্য আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ আনসার ব্যাটেলিয়নে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
০৬ মে, ২০২৪

ইরানের হাতে শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম
যে কোনো ধরনের বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করতে নতুন ধরনের হাতিয়ার প্রস্তুত করেছে ইরান। তেহরানের হাতে এমন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চলে এসেছে যা অত্যাধুনিক মার্কিন স্টেলথ যুদ্ধবিমানকেও শনাক্ত করবে এবং বহুদূরে থাকতেই তা ধ্বংস করে ফেলবে। এই হাতিয়ারের নাম বাভার- ৩৭৩। কী এই বাভার- ৩৭৩?  বাভার- ৩৭৩ ইরানের নতুন এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। শত্রুর যে কোনো আক্রমণ রুখে দিতে ২০১৯ সালে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই বাভার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হাতে আসে ইরানের। সমর বিশেষজ্ঞদের মতে, শক্তিশালী এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যক্ষমতা আমেরিকার প্যাট্রিয়ট মিসাইল সিস্টেম বা রাশিয়ার এস- ৩০০ মিসাইল সিস্টেমের থেকে কোনো অংশে কম নয়।  এবার এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেই আরও উন্নত ও নিখুঁত করে তুলেছে তেহরান। গত ১৭ এপ্রিল মহড়ায় বাভারের নতুন সংস্করণ প্রকাশ্যে আনে ইরান প্রতিরক্ষা বাহিনী। ইরানের দাবি ১৮৬ মাইল পর্যন্ত দূরের যে কোনো শত্রু বিমান বা ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত হানতে সক্ষম বাভারের নতুন সংস্করণ। এমনকি ইরানের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, মার্কিন বিমানবাহিনীর এফ-৩৫ ও এফ-২২ স্টেলথ যুদ্ধবিমানকেও শনাক্ত করে তাতে আঘাত করতে পারে বাভার- ৩৭৩।  উল্যেখ্য, মার্কিন স্টেলথ যুদ্ধবিমান কার্যত ‘অদৃশ্য’। শত্রুপক্ষের রাডারে ধরা পড়ে না। ফলে ফাইটার জেটগুলোর আঘাত প্রতিরোধ করা খুবই কঠিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান প্রতিহত করতেই বাভার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করেছে ইসলামিক রিপাবলিকান।   প্রসঙ্গত, হামাস-ইজরায়েল হামলা পাল্টা হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা জোরদার হয়েছে। ইসরায়েল ভুখণ্ডে প্রথমবারের মতো আঘাত হেনেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র। ইরান ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে এই অঞ্চলে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা জোরদার হচ্ছে।  ইরান-ইসরায়েল বড় ধরনের সংঘাত হলে ইরানের জন্য গেম চেঞ্জার হতে পারে বাভার- ৩৭৩-এর মতো অস্ত্র। 
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

যেভাবে কাজ করে ‘অ্যারো’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের ধারাবাহিক বর্বর হামলার মধ্যে এবার নতুন উত্তেজনা ছড়াচ্ছে ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা। ইসরায়েলে শনিবার রাতে প্রথমবারের মতো সরাসরি নজিরবিহীন এ হামলা চালায় ইরান। ইরানের সেদিনের সে হামলার ৯৯ শতাংশকে প্রতিহত করার দাবি করেছে ইসরায়েল। ইরানের তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন যে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিহত করার দাবি করেছে ইসরায়েল সেই অ্যারো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও চলছে জোরালো আলোচনা। আ্যারোর সে ভূমিকাকে কৌশলগত সাফল্যও বলছে ইসরায়েল। ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনগুলো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়নি। এই হামলায় তাদের তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ইরানের এই হামলা প্রায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। কীভাবে ইরানের এই হামলা প্রতিহত করল ইরান? আসুন জেনে নেই কী ছিল ইসরায়েলের সেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়। অ্যারো এরিয়াল ডিফেন্স সিস্টেম কী: ইসরায়েলের অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সংস্থার সহযোগিতায় অ্যারো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছে। এটি হচ্ছে ভূপৃষ্ঠ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা যা ইসরায়েলের বহু স্তরযুক্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপরের স্তর। ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ প্রচেষ্টা হিসেবে এর উন্নয়ন শুরু হয়েছিল। ১৯৯০-এর দশকে অ্যারো ওয়ান সিস্টেমের কমপক্ষে সাতটি ফ্লাইট পরীক্ষা করা হয়। আরও গবেষণার পর হালকা ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় ২০০০ সালে অ্যারো-২ নামে আরেকটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়। ২০১৫ সালে ইসরায়েল উন্নয়ন করে অ্যারো-৩ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। গত বছর এটি মোতায়েন করা হয় এবং এটি সফলভাবে হুতিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্রাগারে অ্যারো-২ ক্ষেপণাস্ত্রের সংযোজন ইসরায়েলকে ওপরের বায়ুমণ্ডলে হিট অ্যান্ড কিল পদ্ধতির সঙ্গে স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিরোধের ক্ষমতা দিয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে শত্রুর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটিকে তার অবতরণ পর্যায়ের আগেই নিষ্ক্রিয় করা। ইসরায়েল আয়রন ডোম, ডেভিডস স্লিং এবং অ্যারো ডিফেন্সের সমন্বয়ে ত্রি-স্তরযুক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছে। বহুল পরীক্ষিত আয়রন ডোম সিস্টেম সক্রিয়ভাবে ড্রোন ও স্বল্প পরিসরের হুমকিকে আটকাতে মোতায়েন করা হয়েছিল। মাঝারি থেকে দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় কাজ করে ডেভিডস স্লিং নামে পরিচিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যেভাবে কাজ করে অ্যারো এরিয়াল ডিফেন্স সিস্টেম : অ্যারো-৩ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেসব ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে সেগুলোর রকেটে দ্বি-পর্যায়ের সলিড প্রপেলান্ট বুস্টার রয়েছে। এটি শব্দের ৯ গুণ গতিতে লক্ষ্যবস্তুর দিকে পৌঁছতে সক্ষম। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে ইএল/এম-২০৮০ ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার গ্রিন পাইন ফায়ার কন্ট্রোল রাডার (এফসিআর), একটি হ্যাজেলনাট ট্রি লঞ্চ কন্ট্রোল সেন্টার (এলসিসি) এবং একটি সিট্রন ট্রি যুদ্ধ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র। গ্রিন পাইন রাডার দূরপাল্লার লক্ষ্য শনাক্ত করে এবং একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে পারে। ক্ষেপণাস্ত্রটি সর্বোচ্চ ১৪টি লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করতে পারে। এফসিআর সিস্টেমের ইলেকট্রনিক জ্যামিং প্রতিরোধ করতে পারে। গ্রিন পাইন রাডারের কার্যকর পরিসীমা ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। রাডার ক্রমাগত অঞ্চলের দিকে আসা হুমকি শনাক্ত করে। একবার একটি লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত হয়ে গেলে, এর আনুমানিক গতিপথ, গতি এবং ক্ষেপণাস্ত্রটি শহর বা সামরিক স্থাপনার মতো কৌশলগত লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হলে সে সম্পর্কে নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে রিয়েল টাইম তথ্য সরবরাহ করে। ক্ষেপণাস্ত্রটি উল্লম্বভাবে উৎক্ষেপণ করা হয় এবং বুস্টার রকেটটি শব্দের চেয়ে ৯ গুণ বেশি শক্তিতে উড়ে যায়। রকেটে থাকা ফিনড কিল ভেহিকেলটি ক্ষেপণাস্ত্র অনুসন্ধানকারীর নির্দেশিত দিকে তার বিস্ফোরণকে ফোকাস করতে পারে। যদি এটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে ব্যর্থ হয় তবে ফ্র্যাগমেন্টেশন ওয়ারহেড টার্গেটের ৪০ মিটারের মধ্যে বিস্ফোরিত হয়। অ্যারো রকেট ধ্বংসের অস্ত্র হিসেবে গতিশক্তি ব্যবহার করার নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি। অ্যারো রকেটের হাইপারসনিক গতি এটিকে স্যাটেলাইটবিরোধী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ দেয়। এই অ্যারো ডিফেন্স সিস্টেম যুক্তরাষ্ট্রের প্যাট্রিয়ট মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

মৌলিক প্রশিক্ষণের সমাপনী কুচকাওয়াজে সাধারণ আনসাররা
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাধারণ আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের  সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে সফিপুর আনসার ও ভিডিপি একাডেমির ইয়াদ আলী প্যারেড গ্রাউন্ডে এ  কুচকাওয়াজ হয়। কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সালাম গ্রহণ করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম উদ্দিন,  ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট মো  নূরুল হাসান ফরিদীসহ উপমহাপরিচালক ও বাহিনীর অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রধান অতিথি সুসজ্জিত খোলা সবুজ জিপে প্রতিটি কন্টিনজেন্ট পরিদর্শন করেন। পরে প্যারেড কমান্ডার সেফাউল হোসেনের নেতৃত্বে প্যারেড ছয় সারিতে মার্চ করে প্রধান অতিথিকে অভিবাদন জানায়। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আনসার বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বর্তমানে সারা দেশে পাঁচ হাজারের অধিক প্রতিষ্ঠানে সাধারণ আনসার সদস্যরা অঙ্গীভূত হয়ে দেশের জননিরাপত্তায় অবদান রাখছেন। এ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের সব স্তরের নির্বাচন, বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব, বর্ষবরণ, শপিংমল, বাণিজ্যমেলা ও বইমেলা, রেলস্টেশন, ট্রাফিক কন্ট্রোল, বিশেষায়িত হাসপাতালসহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সাধারণ আনসার সদস্যরা জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন। পরে শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি। মোট ৭৯৩ জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে ড্রিলে শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার অর্জন করেন মো. ইকবাল হোসেন, ফায়ারিংয়ে সেরা মো. আবু নাঈম সোহান। আর সব মিলিয়ে চৌকস প্রশিক্ষণার্থীর পুরস্কার লাভ করেন মো. নোমান বকাউল।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

তৃতীয় বছরে যুদ্ধ: চাপে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা
দুই বছর পূর্ণ হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। শনিবার দ্বিতীয় বছর পূর্ণ হয়ে আজ তৃতীয় বছরে পদার্পণ করেছে এ যুদ্ধ। তবে প্রথমদিকের চেয়ে এখন বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে ইউক্রেন। বর্তমানে ইউরোপের মাটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটি সবচেয়ে দীর্ঘ প্রাণঘাতী সংঘাত। এ দিন থেকে দুই বছর আগে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ট্যাঙ্ক ও সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে বীরদর্পে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে এগোতে শুরু করেছিল। ক্রেমলিনের সেরা সমর পরিকল্পনা সত্ত্বেও যুদ্ধের সেই প্রথম কয়েক দিন ও সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনীয়রা অপ্রত্যাশিত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। তুলনামূলক অনেক শক্তিশালী শত্রুকে প্রতিহত করে রাজধানীর পতন এড়াতে পেরেছিল। কিন্তু যুদ্ধের তৃতীয় বছর শুরুর এ সময়টিতে আন্তর্জাতিক ত্রাণ ও সামরিক সরবরাহ ধীর হয়ে এসেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে। গত গ্রীষ্মে কিয়েভের শুরু করা বহুল আলোচিত পাল্টা হামলা মুখথুবড়ে পড়েছে আর মস্কো আধিপত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে তারা পূর্বাঞ্চলের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর আভদিভকা দখল করে ইউক্রেনের ভেতর দিকে আরও বেশ কয়েক কিলোমিটার এগিয়ে গেছে। এটি নয় মাসের মধ্যে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় জয়। এই জয়ের মাধ্যমে শহরটিতে কয়েক মাস ধরে চলা প্রাণঘাতী লড়াইয়ের অবসান হয়েছে। দুই বছর ধরে টানা লড়াইয়ে ইউক্রেনের বহু ছোটবড় শহর, গ্রাম ধ্বংস হয়ে গেছে। লড়াই করতে করতে দেশটির সেনাদল ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। পশ্চিমা সহায়তা কমে আসায় তাদের গোলাবারুদেও টান পড়েছে। এর মধ্যেই প্রায় প্রতিদিন রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন তাদের ওপর বৃষ্টির মতো আছড়ে পড়ছে। ফলে যুদ্ধে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি নড়বড়ে হলেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির এখনো প্রচুর বন্ধু আছে। ইউক্রেনের প্রতি সংহতি জানাতে ইতালি, কানাডা ও বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপরীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট শনিবার কিয়েভে গিয়েছেন। এসব পশ্চিমা নেতার সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার মতো চাপ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করছেন জেলনস্কি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনও কট্টর মিত্র হিসেবেই রয়ে গেছেন, যদিও দেশটির ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলারের ত্রাণ ও সামরিক সহায়তা ওয়াশিংটনে রাজনৈতিক কলহের কারণে স্থগিত হয়ে আছে। ২০২৪ সালের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তখন প্রেসিডেন্ট পদে পরিবর্তন আসতে পারে। সেরকম কিছু হলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ঘন মেঘের ছায়ায় ঢাকা পড়তে পারে, কারণ রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে থাকা ডনাল্ড ট্রাম্প কিইভের প্রতি মার্কিন সমর্থনের ঘোর বিরোধী। তেমন কিছু হলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাশিয়া বিজয়ী হিসেবে আবির্ভূত হবেন, আর তখন তারা ইউক্রেইনের সীমান্তে থেমে নাও থাকতে পারে বলে নভেম্বরের সফরে মার্কিন রাজনীতিকদের সতর্ক করেছেন জেলেনস্কি। তার এই সতর্কবাণীতে মার্কিন রিপাবলিকান রাজনীতিকরা কতোটা উদ্বিগ্ন হয়েছেন তা সময়ই বলে দেবে। তবে পুতিন জেলেনস্কির এসব দাবিকে বাজে কথা হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন। পুতিন এই যুদ্ধকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বৃহত্তর সংগ্রামের অংশ হিসেবে বিবেচনা করেন। আর ক্রেমলিনের অভিজাতদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে একঘরে করতে চায়। তাই ইউক্রেনকে নিষ্ক্রিয় করে পশ্চিম অভিসন্ধির লাগাম টেনে ধরতে চায় মস্কো। বিপরীতে পশ্চিমারা রাশিয়ার আক্রমণকে নির্লজ্জ আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করে এটি প্রতিহত করা কর্তব্য মনে করে।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

তৃতীয় বছরে যুদ্ধ, চাপে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা
দুই বছর পূর্ণ হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। শনিবার দ্বিতীয় বছর পূর্ণ হয়ে তৃতীয় বছরে পদার্পণ করেছে এ যুদ্ধ। তবে প্রথমদিকের চেয়ে এখন বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে ইউক্রেন। বর্তমানে ইউরোপের মাটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটি সবচেয়ে দীর্ঘ প্রাণঘাতী সংঘাত।  এ দিন থেকে দুই বছর আগে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ট্যাংক ও সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে বীরদর্পে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে এগোতে শুরু করেছিল। ক্রেমলিনের সেরা সমর পরিকল্পনা সত্ত্বেও যুদ্ধের সেই প্রথম কয়েকদিন ও সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনীয়রা অপ্রত্যাশিত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। তুলনামূলক অনেক শক্তিশালী শত্রুকে প্রতিহত করে রাজধানীর পতন এড়াতে পেরেছিল। কিন্তু যুদ্ধের তৃতীয় বছর শুরুর এ সময়টিতে আন্তর্জাতিক ত্রাণ ও সামরিক সরবরাহ ধীর হয়ে এসেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে। গত গ্রীষ্মে কিয়েভের শুরু করা বহুল আলোচিত পাল্টা হামলা মুখথুবড়ে পড়েছে আর মস্কো আধিপত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে তারা পূর্বাঞ্চলের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর আভদিভকা দখল করে ইউক্রেনের ভেতর দিকে আরও বেশ কয়েক কিলোমিটার এগিয়ে গেছে। এটি নয় মাসের মধ্যে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় জয়। এই জয়ের মাধ্যমে শহরটিতে কয়েক মাস ধরে চলা প্রাণঘাতী লড়াইয়ের অবসান হয়েছে। দুই বছর ধরে টানা লড়াইয়ে ইউক্রেনের বহু ছোটবড় শহর, গ্রাম ধ্বংস হয়ে গেছে। লড়াই করতে করতে দেশটির সেনাদল ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। পশ্চিমা সহায়তা কমে আসায় তাদের গোলাবারুদেও টান পড়েছে। এর মধ্যেই প্রায় প্রতিদিন রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন তাদের ওপর বৃষ্টির মতো আছড়ে পড়ছে। ফলে যুদ্ধে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি নড়বড়ে হলেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির এখনো প্রচুর বন্ধু আছে। ইউক্রেনের প্রতি সংহতি জানাতে ইতালি,কানাডা ও বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট শনিবার কিয়েভে গিয়েছেন। এসব পশ্চিমা নেতার সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার মতো চাপ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করছেন জেলেনস্কি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দেশটির কট্টর মিত্র হিসেবে পাশে রয়েছেন। তবে মিত্র দেশটিও ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলারের ত্রাণ ও সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছে। ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক সংকটের কারণে এমন সমস্যার মুখে পড়েছে দেশটি। ২০২৪ সালের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তখন প্রেসিডেন্ট পদে পরিবর্তন আসতে পারে। সে রকম কিছু হলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ঘন মেঘের ছায়ায় ঢাকা পড়তে পারে। কেননা রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনের দৌড়ে বেশ এগিয়ে রয়েছেন। তিনি অবার কিয়েভের প্রতি মার্কিন সমর্থন নীতির বিরোধী।  তেমন কিছু হলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাশিয়া বিজয়ী হিসেবে আবির্ভূত হবেন, আর তখন তারা ইউক্রেনের সীমান্তে থেমে নাও থাকতে পারে বলে নভেম্বরের সফরে মার্কিন রাজনীতিকদের সতর্ক করেছেন জেলেনস্কি। তার এই সতর্কবাণীতে মার্কিন রিপাবলিকান রাজনীতিকরা কতটা উদ্বিগ্ন হয়েছেন তা সময়ই বলে দেবে। তবে পুতিন জেলেনস্কির এসব দাবিকে বাজে কথা হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন। পুতিন এই যুদ্ধকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বৃহত্তর সংগ্রামের অংশ হিসেবে বিবেচনা করেন। আর ক্রেমলিনের অভিজাতদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে একঘরে করতে চায়। তাই ইউক্রেনকে নিষ্ক্রিয় করে পশ্চিম অভিসন্ধির লাগাম টেনে ধরতে চায় মস্কো। বিপরীতে পশ্চিমারা রাশিয়ার আক্রমণকে নির্লজ্জ আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করে এটি প্রতিহত করা কর্তব্য মনে করে।  
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

যৌথ উদ্যোগে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে আগ্রহী ভারত
বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন করতে চায় ভারত। দুই দেশের মধ্যকার প্রতিরক্ষা সহযোগিতা পরবর্তী ধাপে উন্নীত করতে এ আগ্রহের কথা জানান ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় ‘ভারতীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম’ বিষয়ে এক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘প্রতিরক্ষা উৎপাদনের সক্ষমতার বিস্তৃত দিকগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে আগ্রহী ভারত, যার মধ্যে সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও রয়েছে।’ ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিরক্ষা উৎপাদন খাতে যৌথ উদ্যোগ গড়ে তোলার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে ‘পরবর্তী স্তরে’ উন্নীত করার কথাও বলেন হাইকমিশনার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’ দর্শনে এক দশক ধরে পরিচালিত ভারতীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের অগ্রগতির বিভিন্ন দিক সেমিনারে তুলে ধরেন প্রণয় ভার্মা। তিনি বলেন, ‘ওই দর্শনে পরিচালিত হওয়ায় ভারতীয় প্রতিরক্ষা উৎপাদন খাতে বিপুল বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা রপ্তানিও বাড়িয়েছে।’ সেমিনারকে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বে ভারতীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের আগ্রহের প্রতিফলন এবং ভারত-বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার একটি নিদর্শন হিসেবে বর্ণনা করেন হাইকমিশনার। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৫০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা ঋণচুক্তির বিষয়টিও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে নেওয়ার অংশ। ভারতের সরকারি ও বেসরকারি বেশ কয়েকটি প্রতিরক্ষা উৎপাদনকারী কোম্পানি এই আয়োজনে অংশ নেয়। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম আর শামীমও সেমিনারে বক্তব্য দেন। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি আধাসামরিক ও পুলিশ বাহিনীর প্রতিনিধিরাও সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

প্রেসিডেন্ট পদক পেলেন রাজশাহী জেলা কমান্ড্যান্ট রাকিবুল ইসলাম
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর দক্ষ, চৌকস ও মেধাবী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল ইসলাম কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য এবছর ‘প্রেসিডেন্ট গ্রাম প্রতিরক্ষা দল’ পদক পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পদক পরিয়ে দেন। রাকিবুল ইসলাম বর্তমানে রাজশাহী জেলায় জেলা কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুর আনসার একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বাহিনীর ৪৪তম জাতীয় সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাহিনীর সদস্যদের পদক পরিয়ে দেন।   ২০১৬ সালে ৩৪তম বিসিএসের মাধ্যমে রাকিবুল ইসলাম আনসার ক্যাডারে যোগদান করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৩টি জেলা ও ৩টি ব্যাটালিয়ন কমান্ড করেছেন। শুরু থেকেই তিনি বাহিনীর প্রতিটি কাজে নিজের মেধার অবদান রেখে আসছেন।  পার্বত্য এলাকায় চাকরিকালে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে পার্বত্য এলাকার নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করেন। পেশাগত কাজের পাশাপাশি আর্ত মানবতার সেবায় কাজ করে তিনি বিভিন্ন সময় কাজ ভূয়সী প্রশংসিত হয়েছেন।  রাকিবুল ইসলাম কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার পাককোলা গ্রামে ১৯৮৯ সালে এক সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার কাতলামারি গ্রামের বাসিন্দা।  আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ আট ক্যাটাগরিতে পদক পান। এবার আট ক্যাটাগরিতে ১৮০ জনকে আনসার পদক দেওয়া হয়েছে এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আনসার পদকের জন্য নির্বাচিতদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আনসার পদক ক্যাটাগরিগুলো হলো- ‘বাংলাদেশ আনসার পদক, প্রেসিডেন্ট আনসার পদক, বাংলাদেশ গ্রাম প্রতিরক্ষা দল পদক, প্রেসিডেন্ট গ্রাম প্রতিরক্ষা দল পদক, বাংলাদেশ আনসার (সেবা) পদক, প্রেসিডেন্ট আনসার (সেবা) পদক, বাংলাদেশ গ্রাম প্রতিরক্ষা দল (সেবা) পদক এবং প্রেসিডেন্ট গ্রাম প্রতিরক্ষা দল (সেবা) পদক।
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X