তীব্র দাবদাহে রাজশাহীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ
রাজশাহীতে তাপমাত্রার পারদ যেন কোনোভাবেই নিচে নামছে না। কেবলই উপরে উঠছে। কয়েকদিন আগে মৃদু তাপপ্রবাহ দিয়ে শুরু হয়েছিল চলতি মৌসুমে গরমের দাপট। এরপর মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং তারপর তীব্র তাপপ্রবাহে বর্তমানে মানুষসহ প্রাণিকূলের যেন হাঁসফাঁস অবস্থা। তিন দিন থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে খরাপ্রবণ এ রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে। প্রচণ্ড রোদ-গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। যার প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যের ওপরও। এতে করে রাজশাহী অঞ্চলে বেড়েছে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এদিকে রাজশাহীর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তবে আগামী ৩-৪ দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলেও রাজশাহীর আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া। দূষিত পানি পান করার মাধ্যমে এ রোগ হয়। এ ছাড়া গরমের কারণে ডায়রিয়ার সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা এই রোগে বেশি ভুক্তভোগী হয়। শুক্রবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডগুলোতে রোগীর চাপ বেশি। যার ফলে বারান্দায়ও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেককে। একই চিত্র হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে। বহির্বিভাগেও শিশু ও মেডিসিন চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে রোগীদের দীর্ঘ সিরিয়াল দেখা গেছে। রামেক হাসপাতালের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গত ১২ এপ্রিল হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়েছে ৬৯৩ জন। এর মধ্যে ১৬ জন শিশুসহ মোট ৩৪ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। ওই দিন শিশু বিভাগে রোগী ভর্তি হয় ৬৭ জন। এ ছাড়া ১৩ এপ্রিল হাসপাতালে ৮০৪ জন রোগীর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৯ জন শিশুসহ মোট ৪২ জন। ১৪ এপ্রিল ৭৮২ জন রোগীর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭ শিশুসহ ২৪ জন। ১৫ এপ্রিল ৯৯৯ জন রোগীর মধ্যে ২১ জন শিশুসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৪৫ জন। ১৬ এপ্রিল ৯৭৫ জন রোগীর মধ্যে ২৪ জন শিশুসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩৮ জন। ১৭ এপ্রিল ১ হাজার রোগীর মধ্যে ৩৫ জন শিশুসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫০ জন। গত বৃহস্পতিবার ৯৫০ জন রোগীর মধ্যে ৩৫ জন শিশুসহ মোট ৫৬ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। সর্বশেষ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টা পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে প্রায় ৫০ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। শুধু ডায়রিয়া নয়, জ্বর-সর্দি ও শ্বাসকষ্টসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে।  ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালের ২৪নং ওয়ার্ডের (শিশু ওয়ার্ড) বারান্দায় ভর্তি করা হয়েছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ভাল্লুকগাছি ইউনিয়নের বাঁশবাড়ি গ্রামের এক বছর বয়সী শিশু জিসানকে। প্রচণ্ড গরমের কারণেই হঠাৎ শিশুটি বমি ও পাতলা পায়খানা করতে থাকে। শিশুটির চাচা তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণেই গত পরশুদিন ছোট্ট শিশুটি বমি ও পাতলা পায়খানা করা শুরু করে। উপায় না পেয়ে গতকাল হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ওয়ার্ডে জায়গা না পেয়ে শিশুকে বারান্দায় রেখেছি। হঠাৎ খিচুনি আর জ্বর হওয়ায় দেড় বছরের শিশু মুনিয়াকে নিয়ে পাবনার আতাইকুলা উপজেলার চরপাড়া গ্রাম থেকে হাসপাতালে এসেছেন মা ঋতু খাতুন। তিনি বলেন, মেয়ের অনেক জ্বর আর খিচুনি। তাই উপায় না পেয়ে বৃহস্পতিবার হাসপাতালের ২৪নং ওয়ার্ডে মেয়েকে ভর্তি করিয়েছি। কিন্তু শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এক বেডে ২-৩ জন করে শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ডায়রিয়াসহ গরমজনিত কারণে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে এই সংখ্যা এখনো এলার্মিং পর্যায়ে যায়নি। তবে রাজশাহীতে আবহাওয়ার যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগী আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা রাখা হয়েছে। রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, উপজেলা পর্যায়েও ডায়রিয়া রোগী আসছে। তবে মহামারি আকার ধারণ করেনি। আসলে মানুষ অস্বাস্থ্যকর খাবার বেশি খাচ্ছে। রাস্তার ধারের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতি মানুষের সচেতনতা না বাড়লে ডায়রিয়া মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যাবে। আমরা চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতামূলক কার্যক্রমও চালাচ্ছি।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

মারধরের শিকার চেয়ারম্যান প্রার্থীকে দেখতে হাসপাতালে পলক
নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য অপহরণ ও মারধরের শিকার অসুস্থ দেলোয়ার হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গেলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. জুনাইদ আহমেদ পলক।   শুক্রবার (১৯ এপ্লিল) সকালে অসুস্থ দেলোয়ার হোসেনকে দেখতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান তিনি। এ সময় অসুস্থ দেলোয়ারের শারীরিক অবস্থা ও তার চিকিৎসার সার্বিক খোঁজ-খবর নেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসার পর তিনি সরাসরি তত্ত্বাবধান করছেন। এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত, তাদের পরিচয় যাই হোক, যেন কঠোর আইন প্রয়োগ করা হয়। দুজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। আমি পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবে যেন আরও বাকি আসামিরা জড়িত আছেন তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করবেন। যারা তাকে মাইক্রোবাসে অপহরণ করে তুলে নেয়, আপনারা ভিডিও ফুটেজে দেখেন। এ হামলার সঙ্গে সরাসরি যারা জড়িত এবং তাদের পেছনে কারা আছেন, তাদের গ্রেপ্তার করে কঠোরভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। পাশাপাশি আমাদের উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের আওয়ামী লীগের উপজেলা বা পৌর শাখার কেউ যদি জড়িত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ যেন সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।  পলক বলেন, আমি সেই সময় একটি মিটিংয়ে দেশের বাইরে ছিলাম। শোনার পর থেকেই পুলিশ, প্রশাসন এবং আমাদের সংগঠনের নেতাকর্মীদের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করি। দেলোয়ার ভাইয়ের যথাযথ চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলি। দায়িত্বশীল চিকিৎসকরা তার সুচিকিৎসা প্রদান করেন। তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন সে দোয়া করি। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, নৌকার বিজয়ী সংসদ সদস্য এবং সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমি মনে করেছি- এ ধরনের ঘটনা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এমন দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চাই, যেন ভবিষতে কেউ কারও পরিচয় দিয়ে অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে আমাদের দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের দুঃসাহস করতে না পারে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওহিদুর রহমান শেখসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৫ এপ্লিল) মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য দেলোয়ার হোসেন ব্যাংকে জামানতের টাকা জমা দেওয়ার জন্য বের হন। এ সময় তারা জরুরি প্রয়োজনে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে গেলে সেখান থেকে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসে করে দুর্বৃত্তরা আলাউদ্দিন মুন্সিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে দেলোয়ার হোসেন নির্বাচন অফিস থেকে নেমে আসলে তাকেও একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে নেয়। এ সময় তারা তাকে গাড়ির ভেতর মারধর করে। পরে বিকেলে দেলোয়ার হোসেনের বাড়ির সামনে (সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের পারসাঐল গ্রাম) ফেলে রেখে চলে যায়। চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণের দুটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ করে যে গাড়িতে তোলা হয় সেটি তার প্রতিদ্বন্দ্বী লুৎফুল হাবীব রুবেলের বলে জানা যায়। পরে আহত দেলোয়ার হোসেনের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

রামেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘটে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘটে চিকিৎসা না পেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে হাসপাতালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ওই রোগী মারা যান।  মারা যাওয়া ওই রোগীর নাম মাহমুদুল হাসান। তিনি পাবনা জেলার বাসিন্দা।  মাহমুদুল হাসানের মা নুরুন্নাহার অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাতে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে আসি। তখন কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। বুধবার সকালে চিকিৎসক আসার কিছুক্ষণ পরে আমার ছেলে মারা গেছে। রাতে ভালোভাবে চিকিৎসা দেওয়া হলে আমার ছেলে মারা যেত না। সংশ্লিষ্টরা জানান, ভাতা বৃদ্ধি ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ চার দফা দাবিতে পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে গত চার দিন ধরে। এমবিবিএস শেষ করে হাসপাতালে ২১০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক ইন্টার্নশিপ করছেন। এ ছাড়া ৬০ চিকিৎসক এফসিপিএস ও এমডিএমএস কোর্স করছেন। তারা সবাই গত রোববার থেকে কর্মবিরতিতে আছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা না থাকলেও অন্য চিকিৎসকরা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখেছেন। কোনো সমস্যা হচ্ছে না। চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এফ এম শামীম আহাম্মদ কালবেলাকে বলেন, ‘এসব অভিযোগ ঠিক নয়। আমাদের ডাক্তাররা রাতদিন পরিশ্রম করছেন। এত বড় হাসপাতাল, রোগী তো মারা যাবেই। আমাদের তো রোগীর কাছে যাওয়ার সময় দিতে হবে।’ তিনি বলেন, বর্তমানে রামেকে এক হাজার ২০০ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ২ হাজার ৪৯৮ জন। সোমবার (২৫ মার্চ) নতুন করে ৭৯০ রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে মারা যান ৩৪ জন। আমাদের হাসপাতালে রোগীর সুস্থতার হার ৯৮ শতাংশ। মারা যায় দুই শতাংশের কম। বহির্বিভাগে প্রায় সাত হাজার রোগী চিকিৎসা নেন। ৩০ থেকে ৪০ জনের মৃত্যু স্বাভাবিক।’  ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনের বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘এই ধর্মঘট কেন্দ্রীয়ভাবে হচ্ছে। ওদের ২৮ মার্চ পর্যন্ত ঘোষণা রয়েছে। তারপরও আমি তাদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে বসব। আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’
২৮ মার্চ, ২০২৪

রামেক হাসপাতালে সাংবাদিককে হেনস্তা ও হত্যার হুমকি দালালের!  
উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এবার সাংবাদিককে হেনস্তা করে হত্যার হুমকি দিলো দালাল সদস্যরা। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা ১ টার দিকে হাসপাতালের বর্হিবিভাগে দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক সোনার দেশ পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক মাহাবুল ইসলামকে এই হুমকি দেয়া হয়। এসময় নিজেকে হাসপাতালের ‘স্টাফ’ পরিচয় দিয়ে ওই প্রতিবেদককে মারপিটের চেষ্টা করে। পরে তার ডাকে আরও কয়েকজন দালাল একত্রিত হয়ে হট্টগোল শুরু করে। প্রতিবেদক ছবি তোলায় ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে দালালরা। ফোন ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে ফোনের ‘ছবি ডিলিট’ করতে কয়েকজন দালাল মিলে সাংবাদিককে হেনস্তা করে। এসময় হাসপাতালের বাইরে বের হলেই হত্যার হুমকি দেয়া হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রতিবেদক আনসার সদস্যদের ফোন দিলে তারা পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে আরেকজন দালাল সদস্য আবারও ফিরে এসে নিজেদের ‘কথিত সাংবাদিক’ এর কাছের লোক দাবি করে হাসপাতালের বাইরে বের হলেই ‘দেখে নেয়ার’  হুমকি দেয়। হাসপাতালের বর্হিবিভাগের তথ্যকর্মী সামিয়া খাতুন বলেন, এদিন ওই সাংবাদিকের ডাকে আমি এগিয়ে আসি। আনসার সদস্যদেরও ডাকি। টের পেয়ে দালালরা পালিয়ে যায়। পরক্ষণেই আরেকজন দালাল এসে কথিত সাংবাদিকের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে বাইরে বের হলে সোনার দেশ পত্রিকার প্রতিবেদক মাহাবুল ইসলামকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হেনস্তার শিকার সাংবাদিক মাহাবুল ইসলাম বলেন, আমি বর্হিবিভাগের টিকিট কাউন্টারের ছবি নিচ্ছিলাম। পরক্ষণেই হাসপাতালের স্টাফ পরিচয় দিয়ে কেন ছবি তুলছেন? তা নিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। অন্য দালালরাও এগিয়ে আসে। ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় কথিত দুই সাংবাদিকের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। ঘিরে ধরে হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে। পরে আনসার সদস্যদের ফোন করার উদ্দেশ্যে কল লিস্টে প্রবেশ করতেই সিনিয়র কর্মকর্তাদের নাম্বার সেভ করা দেখে পালাতে থাকে। পরে হাসপাতালের তথ্যকর্মীর সামনে বাইরে বের হলে আরেক দফা হুমকি দেয়। এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ জানান, হাসপাতাল দালালমুক্ত করার জন্য সবধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আগের মতো দালাল আর নেই। কেউ দালাল এটা বুঝতে পারলেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তারপরও কিভাবে ঠুকে পড়ছে? দেখছি। আর সাংবাদিককে হেনস্তার বিষয়টি আমি জেনেছি।
২৮ জানুয়ারি, ২০২৪

রামেক হাসপাতালে জামায়াত নেতাসহ দুই কারাবন্দির মৃত্যু
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই কারাবন্দি আসামির মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন জামায়াতের নেতা। তিনি হাজতি হিসেবে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি ছিলেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য কয়েদি ছিলেন নওগাঁ জেলা কারাগারে। চিকিৎসার জন্য দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। মৃত জামায়াত নেতার নাম আবদুল লতিফ (৬৬)। তিনি রাজশাহীর দামকুড়া থানা জামায়াতের আমির ছিলেন। গত ১৮ ডিসেম্বর দামকুড়া থানার বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অন্য মৃত কয়েদির নাম আজিজুল হক (৯০)। তিনি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই কারাগারে ছিলেন তিনি। তার বাড়ি নওগাঁর ধামইরহাটে। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আবদুল জলিল জানান, নওগাঁ কারাগার থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত বৃহস্পতিবার আজিজুলকে রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছিল। এরপর সেদিনই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকালে তিনি মারা গেছেন। আবদুল লতিফকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শুক্রবার। তিনিও শনিবার সকালে মারা গেছেন। এই দুই বন্দি নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। মৃত্যুর পর ময়নাতদন্ত শেষে দুজনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩

রামেক হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে গ্রেপ্তার ভুয়া ডাক্তার
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের অস্ত্রোপচার কক্ষ (অপারেশন থিয়েটার-ওটি) থেকে এক ভুয়া ডাক্তারকে আটক করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে পুলিশে দেয়। আটক ব্যক্তির নাম সামিউর রহমান (২৭)। তিনি নগরীর বোয়ালিয়া থানার উপভদ্রা এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে ওই ব্যক্তি ডাক্তার সেজে জরুরি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেন। সেখানে দায়িত্বরত কর্মীদের সঙ্গে অপারেশনের কাজে ব্যবহৃত বিছিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে কথা বলছিলেন। এতে দায়িত্বরত কর্মীদের সন্দেহ হয়। খবর পেয়ে সেখানে যান হাসপাতালের আনসার বাহিনীর ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম। জিজ্ঞাসাবাদে তার আসল পরিচয় বেরিয়ে আসে। বিষয়টি নিশ্চিত করে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম  শামীম আহমদ বলেন, ‘সামিউর রহমান ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির ছাত্র ছিলেন। এক সময় তিনি এই হাসপাতালেই ট্রেনিং করেছেন। ফলে হাসপাতালের কোথায় কী আছে তিনি তা জানেন। ডাক্তারের ভুয়া কার্ড তৈরি করে হাসপাতালে এসেছিলেন। তার কাছ থেকে দুটি ভুয়া আইডি কার্ড ও একটি থার্মোমিটার পাওয়া গেছে। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। রাজপাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কর্মকর্তা বদিউজ্জামান বলেন, ‘আটক ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠান হয়।’
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩

রামেক হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু
রাজশাহীতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেসমিন বেগম (৫০) ও পলাশ ইসলাম (২৯) নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে।  বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে পাঠানো ডেঙ্গু সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ডেঙ্গুতে মারা যায় জেসমিন বেগম পেশায় গৃহিণী। তিনি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার রইছ উদ্দিনের মেয়ে। এছাড়া পলাশ ইসলাম নামে অপর ব্যক্তি পেশায় চাকরিজীবী ছিলেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রাকিবুল ইসলামের ছেলে। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া দুজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) পর্যবেক্ষণে ছিলেন। এ নিয়ে রামেক হাসপাতালে চলতি ডেঙ্গু মৌসুমে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও ২০৮ জন। রামেক হাসপাতাল পরিচালক জানান, জেসমিন বেগমের দুই দিন থেকে তীব্র জ্বর ছিল। তবে তার কোনো ভ্রমণ ইতিহাস ছিল না। গত ২৩ অক্টোবর দুপুরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার তীব্র পেট ব্যথা ও হার্টে সমস্যা ছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া পলাশেরও কোনো ভ্রমণ ইতিহাস ছিল না। তিনি পাঁচ দিন থেকে জ্বরে ভুগছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা বেগতিক হওয়ায় তাকে ২৩ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ভর্তির পরই তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারও মৃত্যু হয়। রামেক হাসপাতাল পরিচালক আরও জানান, এ নিয়ে এই হাসপাতালে চলতি ডেঙ্গু মৌসুমে মোট ২২ জনের মৃত্যু হলো। বর্তমানে হাসপাতালে আরও ২০৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪১ জন। আর এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিন হাজার ৪২৯ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ১৯৯।
২৫ অক্টোবর, ২০২৩
X