প্রচণ্ড গরমে মেহেরপুর সদর হাসপাতালে রোগীর চাপ
গত কয়েক সপ্তাহ মেহেরপুর জেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহ তীব্র থেকে অতি তীব্রতে রূপান্তরিত হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে জেলার তাপমাত্রা ৪২ ও ৪৩ ডিগ্রির ঘরেই থাকছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র গরমে মেহেরপুরের হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষ বেশি অসুস্থ হচ্ছেন। পেট ব্যথা, ঠান্ডা জ্বর, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, কাশি, সর্দি, ডায়রিয়া ও পানি শূন্যতাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা, বাড়ছে হিটস্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যাও।  বুধবার (১ মে) দুপুর ১২টার দিকে সরজমিনে ২৫০ শয্যা মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে দেখা যায়, সেখানে ২৫৭ জন ভর্তি রোগী চিকিৎসাধীন।  এ ছাড়াও হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানা যায়, সেখানে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ৪১২ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৪৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ওয়ার্ড থেকে আজকে ২৫ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও আবার নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ২৭ জন। এ ছাড়াও নতুন ৩১ রোগীসহ পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ৪২ জন। মহিলা ওয়ার্ডে নতুন ভর্তি ৩২ জনসহ মোট চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ১১০ জন। শিশু ওয়ার্ডে ৪৫টি শিশু ঠান্ডা-জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও বমিসহ নানা রোগের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ছাড়াও এইচডিইউ বিভাগে চারজন এবং আইসিইউ বিভাগে হিটস্ট্রোকের ১ জনসহ মোট ৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছিল শয্যা সংকট। তবে আজ অন্যান্য দিনের তুলনায় রোগীর চাপ কিছুটা কম।  মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. সাউদ কবির মালিক কালবেলাকে বলেন, দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে যাদের অবস্থা গুরুতর তাদের ভর্তি করে নেওয়া হচ্ছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষভাবে এই গরমে সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার খাওয়াসহ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যেতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।  মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার কালবেলাকে বলেন, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল কাগজে-কলমে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও লোকবল মূলত ১০০ শয্যা হাসপাতালের। এর মধ্যেও রয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিকেল অফিসারের সংকট। জেলাজুড়ে চলমান অতি তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে হাসপাতালে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। বেডের কিছুটা সমস্যা থাকলেও এ মুহূর্তে প্রয়োজনীয় ওষুধের কোনো সংকট নেই।
০১ মে, ২০২৪

নরসিংদীতে গরমে বাড়ছে নানা রোগ, হাসপাতালে রোগীর চাপ
তীব্র গরমে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে জনজীবন। এতে বাড়ছে নানা রোগের প্রকোপও। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়া, জ্বর, নিউমোনিয়াসহ শ্বাসযন্ত্রের নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে ভিড় বেড়েছে নরসিংদী জেলা ও সদর হাসপাতালে।  মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সরেজমিনে নরসিংদী সদর ও জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন ডায়রিয়া রোগী বেশি। টিকিট কাউন্টারের সামনে প্রচুর ভিড়। ওয়ার্ডের মেঝে, বারান্দা সবখানেই রোগী ও রোগীর স্বজনদের ভিড়। ভর্তি রোগীর পাশাপাশি গত কয়েকদিনে আউটডোরে অন্তত কয়েক হাজার মানুষ জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়।  এ ছাড়া নরসিংদী জেলা হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, নির্দিষ্ট বেডের বাইরে মেঝেতেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গরমের কারণে অনেক শিশু কান্নাকাটি করছে। শুধু বৈদ্যুতিক পাখার মাধ্যমে যেন তাদের আরাম হচ্ছে না, এ কারণে অনেক শিশুর মা ও স্বজনরা হাত-পাখা দিয়ে বাতাস করছেন। নরসিংদী সিভিল সার্জন ডা. ফারহানা আহমেদ জানান, গত কিছুদিন যাবৎ তীব্র দাবদাহের প্রভাবে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীদের উপচেপড়া ভিড়। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রোগীর চাপ বেড়েছে। এছাড়াও তীব্র গরম উপেক্ষা করেই চিকিৎসা নিতে জেলা ও সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে রয়েছে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। তাছাড়া মানুষকে সচেতন করতে সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শিবপুর উপজেলার বান্দারদিয়া গ্রামের আবুল হোসেন জানান, রোববার (২৮ এপ্রিল)  দিন আমার বাচ্চা প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত। জ্বরের এক দিন পর থেকে বমির সঙ্গে ডায়রিয়া শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হাসপাতালে ভর্তি রাখেন। বর্তমানে আমার সন্তানের অবস্থা কিছু ভালো। দেখি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে পারি কিনা।  নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ এন এম মিজানুর রহমান বলেন, এ গরমে অসুস্থ থাকতে হলে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে বাইরের খাবার একেবারেই পরিহার করতে হবে। যেমন রাস্তার ধারে বসা ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে আখের রস, লেবুর শরবত, খোলা খাবার ইত্যাদি। বর্তমানে আমাদের হাসপাতালে হিট স্ট্রোক, টাইফয়েড, ডায়েরিয়া, জ্বর, ঠান্ডা ইত্যাদি রোগী বেশি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণের তরল খাবার খেতে হবে। শিশু অথবা গর্ভবতি মহিলা এবং যাদের ডায়াবেটিক, হার্টের সমস্যা, এ ধরনের রোগীরা খুব প্রয়োজন ছাড়া তারা বাড়ির বাইরে যাতে না বের হয় সে ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। তা ছাড়া একটানা কেউ কোনো কাজ করবে না, বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে কাজ করবেন। প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে। ডাবের পানি খেতে পারেন। কারও প্রেশারের সমস্যা না থাকলে পরিমাণ মতো ওরস্যালাইন খেতে পারেন। বাইরের খোলামেলা খাবার একেবারেই খাওয়া যাবে না। নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ মাহমুদুল কবীর বাশার কমল বলেন, অনেকে বাইরের রোদ থেকে বাসায় গিয়ে ফ্রিজের পানি পান করে কিংবা ঠান্ডা পানিতে গোসল করে। এটি কখনোই করা যাবে না। বাসায় পৌঁছে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল কিংবা পানি পান করতে হবে। না হলে মাথাব্যথা, সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গরমের সঙ্গে মানানসই কাপড় পরতে হবে। এ ছাড়া বর্তমানে হাসপাতালে রোগীর চাপ অনেক বেড়েছে।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

তীব্র গরমে পিরোজপুরের হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ৫০ শয্যা সরকারি হাসপাতালে তীব্র গরমে প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এদিকে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট। ১০০ শয্যার কাজ চলমান থাকায় প্রচণ্ড গরমের মধ্যে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে রোগীদের। এতে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ দেওয়া দিয়েছে। হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়াতে তীব্র দাবদাহে স্বাভাবিক জনজীবনে ভোগান্তি নেমেছে। গত প্রায় ১৫ দিন ধরে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪২ সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। ফলে জনজীবনে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগী। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে। জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। আউটডোরে দেখা গেছে, অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, কেউ বা আবার ফেরত যাচ্ছেন পর্যাপ্ত পরিমাণে সুযোগ-সুবিধা না থাকার কারণে। হাসপাতালে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের ৯ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন। তা ছাড়া জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও অন্যান্য আক্রান্তের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। শিশু ওয়ার্ডে সন্তান সুমাইয়াকে নিয়ে বসেছিলেন মঠবাড়িয়া উপজেলার বুড়িরচর গ্রামের তন্নী খাতুন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার চার মাস বয়সী বাচ্চার হঠাৎ করে জ্বর-সর্দি -কাশি। ২৫ তারিখ থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছি।  প্রচণ্ড গরমে বাচ্চার কষ্ট হচ্ছে। হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছি। ডাক্তাররা ঠিক মত দেখতে আসেন না। গরমে আমার বাচ্চা অনেক কষ্ট পাচ্ছে। বাচ্চার পায়ে পরানো ক্যানেলা বারবার কেটে যাচ্ছে। নার্সদের কাছে গেলে তারা বিরক্ত বোধ করছেন- এমন অবস্থায় চিকিৎসা নেওয়াটা খুবই দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। অপর আরেক রোগীর দাদি ফাহিমা আক্তার (৫০) বলেন, আমার বাড়ি মঠবাড়িয়ার চান্দুখালীতে। আমার নাতি সিয়াম অসুস্থ। বয়স পাঁচ বছর। নিউমোনিয়া হয়েছে। গত ৩ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ভালো চিকিৎসা পাচ্ছি না। রাতের বেলা অনেক জ্বর উঠলেও নার্সদের ডাকলে তাদের কোনো সাড়া পাই না বরং আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। আমরা সবসময় সরকারি হাসপাতালে ভালো স্বাস্থ্যসেবা পেতে চাই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. ফেরদৌস ইসলাম বলেন, তীব্র দাবদাহের রোগীর চাপ রয়েছে, তাই তাদের সেবার মানোন্নয়নের জন্য মিটিং করেছি। আমাদের এখানে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশি সহ অনেক রোগী ভর্তি রয়েছেন। একবারের জায়গায় তিনবার করে ডাক্তারদের রাউন্ড দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ভর্তিকৃত রোগীরা অধিকাংশই চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। রোগীদের মধ্যে বৃদ্ধ ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে শিশুদের বিষয়ে বেশি যত্নবান হতে হবে। এ বিষয়ে আমরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়াও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তীব্র দাবদাহে হিটস্ট্রোক ও ডায়রিয়া থেকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

তীব্র দাবদাহে খুলনার হাসপাতালগুলোতে শিশু রোগীর চাপ
খুলনায় বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিগত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গত ১৩ এপ্রিল থেকে অর্থাৎ, ১২ দিন ধরে তীব্র তাপদাহ চলছে। অসহনীয় গরমে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এতে খুলনায় শিশু স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা। ডায়রিয়া, জ্বর ও ঠান্ডা-গরম লাগার কারণে হাসপাতালে ছুটছেন অভিভাবকরা। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) খুলনার তিনটি বড় হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর থেকে ডায়রিয়া শুরু হয় খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা আরাফাত হোসেনের তিন বছরের মেয়ে লামিয়ার। মেয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়লে খুলনা শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে ১৫০ টাকা টিকিট কেটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখান আরাফাত। চিকিৎসক লামিয়াকে দ্রুত ভর্তির পরামর্শ দিলেও জানান এখানে কোনো সিট নেই। পাশেই সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে। মেয়েকে কোনো রকম ভর্তি করতে পারলেও সিট তো দূরের কথা লামিয়ার স্থান হয় বারান্দার মেঝেতে। একই অবস্থা হয় নিউমার্কেটের দোকানি কর্মচারী আবুবক্করের দেড় বছরের ছেলে আইয়ানের ভাগ্যেও। ছেলেকে নিয়ে শিশু হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন কোনো সিট তো নেই। সিটের জন্য ৩০ জনের ওপরে সিরিয়াল দিয়ে রেখেছেন যাদের এখনো ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। শুধু খুলনা শিশু হাসপাতাল বা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালই নয়; তীব্র তাপপ্রবাহে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে রোগীর চাপ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুরা। শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়া, জ্বর ও ঠান্ডা-গরম লাগার প্রবণতা বেশি। খুলনা শিশু হাসপাতাল বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে শিশু রোগীর স্বজনদের উপচেপড়া ভিড়। প্রতিটি শিশুর সঙ্গে একাধিক স্বজন হাসপাতালে আসায় ভিড় আরও বেড়েছে। বেশিরভাগ শিশুই ডায়রিয়া, জ্বর, ঠান্ডা-কাশিতে আক্রান্ত। টুটপাড়া এলাকার মনির হোসেন বলেন, আজ ২ দিন ধরে বাচ্চার পাতলা পায়খানা হচ্ছে। বাড়িতে স্যালাইন খাইয়েছি, ভেবেছিলাম ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু পায়খানা না কমায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। সকাল থেকে লম্বা লাইন। আরও ১১ জনের পরে আমাদের সিরিয়াল। খুলনা শিশু হাসপাতালের ভর্তি তথ্য কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, ২৭৫ শয্যার হাসপাতালে সাধারণ শয্যা রয়েছে ২৪৭টি। গত দুই সপ্তাহ ধরে সব শয্যাই পূর্ণ থাকছে। প্রতিদিন ৩০-৪০টি শয্যা খালি হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে একই সংখ্যক রোগী ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। অবস্থা এমন যে, হাসপাতালে ভর্তির জন্য এখন সিরিয়াল রাখা হচ্ছে। সব সময় অন্তত ৩০ থেকে ৪০টি রোগী সিরিয়ালে থাকছেন ভর্তির জন্য। হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আল আমিন রাকিব জানান, গত ৮/১০ দিন ধরে রোগীর চাপ অস্বাভাবিক রকম বেড়েছে। আগে বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৪৫০টির মতো শিশু রোগী চিকিৎসা নিত। মঙ্গলবার চিকিৎসা নিয়েছে ৬৫০ জন। বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪৮২ জন চিকিৎসা নিয়েছে। সিরিয়ালে আছে আরও দেড় শতাধিক রোগী। তিনি বলেন, হাসপাতালে শয্যার বাইরে কোনো রোগী ভর্তি করা হয় না। এ কারণে যতগুলো শয্যা ফাঁকা হচ্ছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। ভর্তি করতে না পারায় প্রতিদিন অনেক রোগী ফেরতও পাঠাতে হচ্ছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দুপুর ২টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে রোগীদের প্রচণ্ড ভিড়। আন্তঃবিভাগে ভর্তি রোগীও বেড়েছে। বুধবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোট রোগী ভর্তি রয়েছেন ১ হাজার ৪৪৩ জন। হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে ৪৮টি। অথচ ওই ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে ১৩৯টি শিশু। শয্যা না থাকায় রোগীর ঠাঁই হয়েছে মেঝে, বারান্দায়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, শয্যা পরিপূর্ণ থাকার পরেও রোগী আসতে থাকে। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দেই কীভাবে? এ জন্য মেঝে-বারান্দায় যেখানে ফাঁকা পাওয়া যায়, সেখানে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, গরমের কারণে ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। অন্যান্য রোগী স্বাভাবিক রয়েছে। খুলনা সংক্রমক ব্যাধি হাসপাতাল তীব্র তাপদাহে খুলনার একমাত্র সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালেও ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে। নগরীর মীরেরডাঙ্গায় অবস্থিত এই হাসপাতালেও শয্যা ফাঁকা নেই। মাত্র ২০ শয্যার এই হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের জন্য শয্যা বরাদ্দ ১০টি। কিন্তু রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় সেটি বাড়িয়ে ১৪টি করা হয়েছে। তারপরও প্রতিদিন অসংখ্য রোগী ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান জানান, তীব্র তাপপ্রবাহে রোগীর চাপ বেড়েছে। গত ২৩ দিনে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় তিন শতাধিক রোগী। শয্যা সীমিত থাকায় রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় মেহেরপুর, হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ
দেশের যে কয়েকটি জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে, তার মধ্যে অন্যতম মেহেরপুর। এ জেলায় মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। কুয়াশার প্রকোপ কিছুটা কমলেও উত্তরের হিমেল হাওয়া শীতের তীব্রতাকে আরও অসহনীয় করে তুলছে। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার বাসিন্দাদের  জনজীবন। কনকনে ঠান্ডায় মেহেরপুর জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর চাপ। চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, আজ সকাল ৬টায় জেলার তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। পরে সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আরও কমে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস থেকে প্রাপ্ত আগাম তথ্যে ইতোপূর্বে জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলো ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা বেশি বিপাকে পড়েছেন। যেন শীতের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলতে হচ্ছে তাদের। দিনমজুর সুমন আলী বলেন, তীব্র শীতের কারণে এখন কাজ নেই বললেই চলে। কাজের সন্ধানে প্রতিদিন সকালে এসে দাঁড়িয়ে থাকি। আজকেও ভোর ৫টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকে কোনো কাজই পাইনি। মেহেরপুর পৌর এলাকার রিকশাচালক মনিরুল বলেন, ঠান্ডা-কুয়াশা-বাতাসে আমরা নাকাল হয়ে পড়ছি। বেশিক্ষণ রিকশা চালাতেও পারছি না। যাত্রী অনেক কম, এ জন্য আয়-রোজগারও কমে গেছে। মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের কৃষক লাল মিয়া বলেন, শীত ও কুয়াশার কারণে তার সরিষার আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলন আশানুরূপ হবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এ কৃষক। মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জমির মো. হাসিবুস সাত্তার বলেন, হাসপাতালে বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আগে শুধু শিশু ও বয়স্করা শীতজনিত নানা রোগের উপসর্গ নিয়ে আসলেও এখন সকল বয়সের মানুষ শীতজনিত নানা রোগের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
২৩ জানুয়ারি, ২০২৪

তীব্র শীতে কুমিল্লার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ
তীব্র শীতে কুমিল্লার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ। বিশেষ করে গত কয়েক দিনে প্রচণ্ড কুয়াশা ও হাড় কাঁপানো শীতের কারণে হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর ভিড় বেড়েছে। হাসপাতালের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারেও বাড়তি রোগী দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বলছেন, মাঘের শুরুতে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েক দিনে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তীব্র শীতের এই সময়টাতে মৌসুমি জ্বরসহ শিশু ও বয়স্কদের নিউমোনিয়া, সাইনোসাইটিস, টনসিলাইটিস, অ্যাজমা, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেকে সাধারণ সর্দিকাঁশি, ঠান্ডা-জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এরকম পরিস্থিতিতে শিশু ও বৃদ্ধদের সুস্থ রাখতে ধুলাবালি ও ঠান্ডা পরিবেশ থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। গেল কয়েক দিন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চিকিৎসকের চেম্বারে রোগীদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি বাইরের জেলা ও উপজেলা থেকে অনেক অসুস্থতা নিয়ে রোগীরা আসছেন। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লা সদর জেনারেল হাসপাতালের সামনে কথা হয় শিশু কোলে দাঁড়িয়ে থাকা আমেনা বেগম নামের এক নারীর সঙ্গে। দুই বছরের শিশু মিরাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন তিনি।  আমেনা বেগম বলেন, ‘গত কয়েক দিন যাবৎ শীতের কারণে সর্দি ও কাশিতে ভুগছে মিরা। গ্রামের ওষুধের দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ওষুধ খাওয়াইছি, কিন্তু সর্দি ভালো হচ্ছে না। তাই আমি বড় ডাক্তার দেখানোর জন্য চান্দিনা  থেকে কুমিল্লা সদর জেনারেল  হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর থেকে আসিফ নামে তিন বছর বয়সের নাতিকে নিয়ে সদর জেনারেল হাসপাতালে এসেছেন আবদুল আলীম। তিনি জানান, অসুস্থতার পর প্রথমে বুড়িচংয়ে প্রাইভেটে ডাক্তার দেখিয়েছি। অনেক পরীক্ষা- নিরীক্ষার মাধ্যমে ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে। কিছুদিন ভালো ছিল, বর্তমানে নিউমোনিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। লাকসাম থেকে ১৯ মাস বয়সী হাবিবা জান্নাতকে নিয়ে নগরীর বেসরকারি নিউ ভিশন হাসপাতালে এসেছেন তার মা আয়েশা খাতুন। তিনি জানান, গত ‘সাত-আট দিন ধরে ঠান্ডা, কাশি। গ্রামে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খাওয়াইছি, কিছুতেই কমছে না। এ জন্য শহরের হাসপাতালে নিয়া আসছি।’ ঠান্ডার সঙ্গে পাতলা পায়খানার মতো ভিন্ন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে অনেক শিশুর। তিনি বলেন, ‘গত চার দিন ধরে রিমির জ্বর।পাশাপাশি রোববার থেকে পাতলা পায়খানা শুরু হয়েছে। ডাক্তার দেখিয়ে বাসায়ই ওষুধ খাওয়াচ্ছিলাম। জ্বর কমে, আবার বাড়ে। গতকাল থেকে শুরু হয়েছে পাতলা পায়খানা। এ জন্যই এখানে আসা। কুমিল্লা সদর হাসপাতালের সিনিয়র ফার্মাসিস্ট মো. আনোয়ারুল করিম বলেন দৈনিক ১২০০ হইতে ১৫০০ রোগীকে ৫৫ থেকে ৬০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয় এবং সকল অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ফুল কোর্স ও অন্যান্য ওষুধ ক্ষেত্রবিশেষে এক বা দুই মাসের জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে। কুমিল্লা সদর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. এম এ করিম খন্দকার বলেন, শীত ও বায়ুদূষণজনিত কারণে রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেড়েছে। তাদের অনেকে আসছে সর্দি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, হাঁচি-কাশি নিয়ে। একটা অংশের তীব্র জ্বর, গলাব্যথা, কাশির উপসর্গ রয়েছে বলে জানান তিনি। কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডাক্তার নাসিমা আক্তার বলেন, প্রচণ্ড শীতের কারণে হাসপাতালে এখন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ রোটা ভাইরাস নিয়ে রোগীরা বেশি আসছেন। বেশি ঠান্ডা কারণে এটা হচ্ছে। বিশেষ করে বয়স্ক ও বাচ্চারা বেশি আসছেন, যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম। অধিক মাত্রায় শীতের এ সময়ে যতটা সম্ভব ঘরের ভেতর থাকা এবং শরীরকে সব সময় গরম রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি।
১৯ জানুয়ারি, ২০২৪

শীতজনিত রোগে হাসপাতাল-চেম্বারে রোগীর চাপ
শীতের সঙ্গে বাড়ে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের প্রকোপ। শৈত্যপ্রবাহের পর দেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে জ্বর, ঠান্ডা, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসাবে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক ও শিশুরা। উত্তরাঞ্চলের ঘরে ঘরে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি। মৌসুমি রোগের সঙ্গে এবার পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কভিডের প্রকোপ। গতকাল ঢাকায় এক নারীর মৃত্যুও হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ৫ শতাংশের বেশি রোগীর নমুনায় কভিডের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যদিও এখন পর্যন্ত কভিডের নতুন উপধরন জেএন.১-এর অস্তিত্ব দেশে নেই বলে আশ্বস্ত করছেন চিকিৎসকরা। তবে আগামীতে কভিড আবারও আমাদের ভোগান্তিতে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল উত্তরাঞ্চলের তেঁতুলিয়ায় ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা যত কমছে, রোগের উপদ্রবও বাড়ছে। উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুরসহ দেশের অধিকাংশ জেলায় এখন শীতজনিত অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হচ্ছে। সরকারি হিসাবে সারা দেশে গত দেড় মাসে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে শীতের কারণে। কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। একটি বেসরকারি সূত্র মতে, শুধু সিলেট বিভাগের একটি জেলাতেই শীতজনিত রোগে ২৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, বয়স্ক ও শিশুদের শীতে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া উচিত নয়। শিশুদের শীতের পোশাক পরিধান করাতে হবে। সামান্য অবহেলার কারণে শিশুদের মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, গ্রামাঞ্চলে অনেকে শীতের জন্য গোসল করে না। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকে। এসব কারণে এ রোগের সংক্রমণ বেশি হয়। রাজধানীসহ উত্তরাঞ্চলের হাসপাতালে শিশুদের চাপ সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে যেখানে ৫০০ থেকে ৮০০ রোগী ভিড় করত। এখন সেখানে প্রতিদিন ১ হাজারেরও বেশি শিশু আসছে। সরেজমিন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট ঘুরে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের সামনে শিশুদের নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অভিভাবকরা। দীর্ঘ সারিতে দাঁড়ানো রোগীরা এগোচ্ছেন ধীরগতিতে। অপেক্ষায় ক্লান্ত হয়ে পড়ছে অসুস্থ শিশুরা। এই চিত্র এখন সারা দেশের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) তথ্যমতে, গত দেড় মাসে শীতজনিত রোগ নিয়ে সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ লাখ ১০৭ জন। এ হিসাবে দৈনিক গড়ে ৪ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে সেবা নিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত দেড় মাসে যে ২৫ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে, তার মধ্যে সর্বোচ্চ চট্টগ্রামে ২১ জন, ময়মনসিংহে তিন এবং রাজশাহীতে একজন রয়েছেন। অধিদপ্তরের সারা দেশে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে জেলা সিভিল সার্জনরা। শিশু হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, শীতের সময় শিশুদের রোগবালাই দেখা দেয়। শিশুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে শীতজনিত রোগীর চাপ অনেক। শীত ও বায়ুদূষণজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আগের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ। শিশুদের অনেকে আসছে সর্দি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া হাঁচি-কাশি নিয়ে। একটি অংশের তীব্র জ্বর, গলাব্যথা ও কাশি। দেখা গেছে, এই ধরনের রোগীদের কোনো সংক্রমণ নেই, জ্বরও নেই। কিন্তু নাক বন্ধ থাকায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, নবজাতক হলে দুধ টেনে খেতে পারে না। শিশু ঘুমাতে পারে না, কান্নাকাটি করে। বাচ্চারা শ্বাসতন্ত্রের নানা ধরনের সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এই সময় বাচ্চাদের অ্যাজমাও বেড়ে যাচ্ছে। ধূলিকণা নিঃশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসতন্ত্রে গিয়ে ছোট-বড় সবারই ক্রনিক কাশি হচ্ছে। এসব সমস্যা শৈত্যপ্রবাহের সময় বেশি হয়। এ সময় তিনি বলেন, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুকে সুস্থ রাখতে মাথা ঢেকে রাখতে হবে। অহেতুক বাসার বাইরে-মার্কেটে বাচ্চাদের নিয়ে ঘোরাঘুরি করা যাবে না। কাশি হলেই ফার্মেসি থেকে কিনে শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ কালবেলাকে বলেন, শীতে বায়ুদূষণের কারণে মানুষের শ্বাসনালিতে নানা ধরনের সংক্রমণের উপদ্রব দেখা যায়। শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি লক্ষ্য করা যায়। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারিভাবে নগরীর সড়কে পানি ছিঁটানো, কনস্ট্রাকশনের কাজের নিরাপ্রটোকল বাড়ানো। রাস্তা ঝাড়ু দেওয়া এবং শীতে যেহেতু বায়ুদূষণ বাড়ে, তাই রাজধানীসহ লোকালয়ের কাছের ইটভাটা বন্ধ করা দরকার। ব্যক্তিগত সুরক্ষার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, শীতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বয়স্ক ও শিশুরা। শিশুরা শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন ভাইরাল ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়। বাইরে বের হলে মাস্ক পরিধান করতে হবে। জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। শীতের কাপড় পরিধান করতে হবে। এর পরও কোনো লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এদিকে শীতের সঙ্গে সঙ্গে দেশের কভিড পরিস্থিতিও অবনতি হচ্ছে। গতকাল ২১ জনের নমুনায় রোগটি শনাক্ত হয়েছে। এ সময় ঢাকায় এক নারীর মৃত্যুও হয়েছে। আগামী এপ্রিলের পর থেকে দেশে কভিড পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। তাই এখনই সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। সেইসঙ্গে ব্যক্তিগত সুরক্ষা বিষয়ে আরও জোর দেওয়া দরকার বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ কালবেলাকে বলেন, কভিড যেহেতু বাড়ছে; শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে একটু ঝুঁকি তো আছেই। সম্প্রতি দেশে নির্বাচন শেষ হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে মানুষ একে অন্যের সংস্পর্শে আসছে। মানুষ ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মানছে না।
১৫ জানুয়ারি, ২০২৪

হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট রোগীর চাপ
হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশায় উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট রোগীর চাপ। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। কয়েকদিনের শীতে হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা। গত ৪ দিনে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে শতাধিক বৃদ্ধ নারী পুরুষ ও শিশু ডায়রিয়া এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভর্তি হয়েছে। তবে অনেকে চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও জেলার ৪ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট রোগী। লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, শীতে হাসপাতালে শিশু ও বয়োবৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছি। ভৌগোলিক কারণে এ জেলায় শীত বেশি হয়। শীতে শিশু ও বয়োবৃদ্ধ মানুষদের সতর্ক রাখার পরামর্শ দেন তিনি। ভোর থেকে ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসে ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তিস্তা চরাঞ্চলের মানুষ ঘন কুয়াশায় অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কেননা, এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ নিম্ন আয়ের। প্রচণ্ড শীতেও জীবিকার তাগিদে বের হয়েছেন রিকশাচালক করিম মিয়া। তিনি জানান, শীতে রিকশা চালানো অনেক কষ্ট হচ্ছে । হাত, পা ঠান্ডা হয়ে আসে। ক্ষেতে কাজ করা দিনমজুর আবুল কাশেম (৪৭) বলেন, গত ৩ দিন থেকে শীতে কষ্ট পাচ্ছি। কিন্তু ক্ষেতে কাজ তো করতেই হবে।  শীত উপেক্ষা করেই আমরা কাজ করছি। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, জেলার শীতার্ত মানুষের জন্য ২৪ হাজার কম্বল মজুদ আছে। শিগগিরই উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণের মাধ্যমে তা বিতরণ শুরু হবে।
০৫ জানুয়ারি, ২০২৪

লালমনিরহাট হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর চাপ
গত ৩ দিন ধরে প্রবল শীতে কাঁপছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট। হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর চাপ। বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে পাশ্ববর্তি কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, লালমনিরহাটের তাপমাত্রা ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে কয়েকদিনের শীতে হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর সংখ্যা। গত ৩ দিনে লালমনিরহাট সদর হাসপাতলে শতাধিক বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ ও শিশু ডায়রিয়া এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভর্তি হয়েছে। তবে অনেকে চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন বলেও জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও জেলার ৪ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট রোগী। লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, শীতে হাসপাতালে শিশু ও বয়োবৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছি। ভৌগোলিক কারণে এ জেলায় শীত বেশি হয়। শীতে শিশু ও বয়োবৃদ্ধ মানুষদের সতর্ক রাখার পরামর্শ দেন তিনি। এদিকে ভোর থেকে ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাসে ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তিস্তা চরাঞ্চলের মানুষ ঘন কুয়াশায় অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কেননা, এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ নিম্ন আয়ের। পর্যাপ্ত গরম কাপড় ও কম্বলের অভাবে মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।  প্রচন্ড শীতেও জীবিকার টানে বের হয়েছেন রিক্সা চালক করিম মিয়া। তিনি জানান, শীতে রিকশা চালানো অনেক কঠিন। হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে। ক্ষেতে কাজ করা দিনমজুর আবুল কাশেম (৪৭) বলেন, গত ৩ দিন থেকে শীতে কষ্ট পাচ্ছি। কিন্তু ক্ষেতে কাজ তো করতেই হবে। শীত উপেক্ষা করেই আমরা কাজ করছি। একই এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ রেজা মিয়া জানান, প্রচন্ড শীত ও হিমেল হাওয়ায় ঘর থেকে বের হতে পারছি না। প্রতিবেশি অনেক বাড়িতে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, জেলার শীতার্ত মানুষের জন্য ২৪ হাজার কম্বল মজুদ আছে। শীঘ্রই উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে এগুলো বিতরণ শুরু হবে।
০৫ জানুয়ারি, ২০২৪

মেহেরপুরে হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর চাপ
মেহেরপুরে তীব্র শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কিছুটা বির্পযস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি শিশু এবং বয়স্ক মানুষ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর চাপ। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে যেয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে যেয়ে দেখা গেছে, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অ্যালার্জি, সর্দিকাশিসহ শীতজনিত নানা রোগে মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। শুক্রবার রাত দুইটায় দেখা গেছে, শিশু ওয়ার্ডে ৫ নবজাতকের পাশাপাশি ৬২ শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের প্রায় সকলেই শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় ভুগছে। এ ছাড়াও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক শিশু সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মহিলা ওয়ার্ডে ৬৩ জন চিকিৎসাধীন রোগীর মধ্যে ৪০ জনই শীতজনিত নানা রোগের কারণে চিকিৎসাধীন। পুরুষ ওয়ার্ডে ৬৬ জন নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, পাশাপাশি নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৭ জন চিকিৎসাধীন, এদের মধ্যে শিশু ১২, মহিলা ৪ ও পুরুষ ১ জন। এ ছাড়াও হাসপাতালের এইচডিইউতে ৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। আইসিইউতে বর্তমানে ৩ জন ডেঙ্গু ও নিউমোনিয়ার রোগী রয়েছেন।  হাসপাতালে কর্তব্যরত ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার (ইএমও) ডা. মনজুরুল আহসান বলেন, ‘শুক্রবার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে মোট ১৫১ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে ৬০ জন এসেছিলেন ঠান্ডাজনিত নানা রোগের উপসর্গ নিয়ে।’ মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জামির মো. হাসিবুস সাত্তার কালবেলাকে বলেন, ‘বর্তমানে এখানে ২৩৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। অন্যান্য রোগীর চাপ কম থাকলেও ক্রমান্বয়ে ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার রোগী বাড়ছে। ২৫০ শয্যা মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে মূলত লোকবল রয়েছে ১০০ রোগীর জন্য। এই লোকবল নিয়েই আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবছরই শীত জনিত রোগীর সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। তবে রোগীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেলেও বর্তমান জনবল দিয়েই সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার প্রস্তুতি আমাদের আছে।’ শনিবার সকাল ৯টায় মেহেরপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার কারণে মেহেরপুর জেলায় শীতের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে।     
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৩
X