গত ৩ দিন ধরে প্রবল শীতে কাঁপছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট। হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর চাপ।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে পাশ্ববর্তি কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, লালমনিরহাটের তাপমাত্রা ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে কয়েকদিনের শীতে হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর সংখ্যা। গত ৩ দিনে লালমনিরহাট সদর হাসপাতলে শতাধিক বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ ও শিশু ডায়রিয়া এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভর্তি হয়েছে। তবে অনেকে চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন বলেও জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও জেলার ৪ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট রোগী।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, শীতে হাসপাতালে শিশু ও বয়োবৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছি। ভৌগোলিক কারণে এ জেলায় শীত বেশি হয়। শীতে শিশু ও বয়োবৃদ্ধ মানুষদের সতর্ক রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে ভোর থেকে ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাসে ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তিস্তা চরাঞ্চলের মানুষ ঘন কুয়াশায় অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কেননা, এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ নিম্ন আয়ের। পর্যাপ্ত গরম কাপড় ও কম্বলের অভাবে মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
প্রচন্ড শীতেও জীবিকার টানে বের হয়েছেন রিক্সা চালক করিম মিয়া। তিনি জানান, শীতে রিকশা চালানো অনেক কঠিন। হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে।
ক্ষেতে কাজ করা দিনমজুর আবুল কাশেম (৪৭) বলেন, গত ৩ দিন থেকে শীতে কষ্ট পাচ্ছি। কিন্তু ক্ষেতে কাজ তো করতেই হবে। শীত উপেক্ষা করেই আমরা কাজ করছি।
একই এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ রেজা মিয়া জানান, প্রচন্ড শীত ও হিমেল হাওয়ায় ঘর থেকে বের হতে পারছি না। প্রতিবেশি অনেক বাড়িতে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, জেলার শীতার্ত মানুষের জন্য ২৪ হাজার কম্বল মজুদ আছে। শীঘ্রই উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে এগুলো বিতরণ শুরু হবে।
মন্তব্য করুন