হাসপাতালে ভর্তি অভিনেত্রী রোজা খন্দকার
শরীরে জ্বর নিয়ে অভিনেত্রী রিমু রোজা খন্দকারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরপর তার শরীরে আরও বিভিন্ন ধরনের রোগের অস্তিত্ব খুঁজে পায় চিকিৎসকরা। বর্তমানে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।  রিমু রেজার অসুস্থতার বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন তার সহকর্মী অভিনেত্রী মনিরা আক্তার মিঠু। তিনি জানান   ‘রিমু অসুস্থ। তার জন্য সবাই দোয়া করবেন। তার শরীরে ইনফেকশন হয়েছে। শরীরে এখনো জ্বর আছে। পেটও ফুলে আছে। এ ছাড়া ফিস্টুলারও সমস্যা রয়েছে। আবার হিমোগ্লোবিনও অনেক কম। হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। সবাই রিমুর জন্য দোয়া করবেন।’ দীর্ঘ সময় ধরে রিমু দেশের ছোট পর্দায় নিয়মিত কাজ করছেন। এ ছাড়া বেশকিছু সিনেমাতেও অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার তালিকায় রয়েছে ,‘ভালোবাসলেই ঘর বাধা যায় না’, ‘জীবন ঢুলী’, ‘বৃত্তের বাইরে’, ‘লাভ স্টেশন’, ‘কিং খান’।
০৪ মে, ২০২৪

শাওয়াল মাসের ছয় রোজা
পবিত্র রমজান মাস শেষে এসেছে শাওয়াল। হিজরি ক্যালেন্ডারের দশম মাস শাওয়াল। শাওয়াল অর্থ উঁচু, উন্নত বা ভারী হওয়া। এ মাসে মুমিন বান্দারা ফিতরা প্রদান, ঈদুল ফিতর পালন ও ছয় রোজা রাখার মধ্য দিয়ে পরকালীন উন্নতি সাধন, নেকির পাল্লা ভারী ও গৌরব অর্জন করে থাকেন। এ মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখা অন্যতম আমল। শাওয়ালের ছয় রোজার বিধান: অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে, শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত। এ রোজাগুলো লাগাতার অথবা ভেঙে ভেঙে আদায় করা যায়। হজরত ইবনে মোবারক (রহ.) বলেন, প্রতি মাসের তিন দিন রোজা রাখার মতো শাওয়ালের ছয় দিন রোজা রাখাও ভালো আমল। আল্লাহতায়ালা ফরজ ইবাদতের পর সুন্নত ও নফল ইবাদতের প্রতি উৎসাহ ও নির্দেশনা দেন। শাওয়ালের রোজার ব্যাপারে একাধিক হাদিসে উৎসাহ এসেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল অতঃপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।’ (মুসলিম : ১১৬৪) শাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলত: হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন বছরজুড়ে রোজা রাখল।’ (মুসলিম : ২৮১৫; তিরমিজি : ৭৫৯)। পুরো বছরজুড়ে রোজা রাখার সওয়াব এভাবে হয়—আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি একটি নেক কাজ করবে সে দশগুণ বেশি সওয়াব পাবে।’ (সুরা আনআম : ১৬০)। সে হিসেবে রমজানুল মোবারকের ৩০ রোজা ৩০০ রোজার সমান হলো। আর শাওয়ালের ৬টি রোজা ৬০ রোজার সমান। এভাবে ৩৬টি রোজা বছরের মোট ৩৬০টি রোজার সমান হয়ে গেল। তাহলে আমরা এই ছয়টি রোজা রাখার মাধ্যমে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পেয়ে যাই। এ বিষয়টি আরেকটি হাদিস থেকে আরও স্পষ্ট হয়। হজরত উবাইদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?’ তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে, কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজানের পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখো, তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি : ১/১৫৩৪) শাওয়াল রোজা কখন রাখবেন: শাওয়ালের রোজা রাখার নিয়মের মধ্যে উত্তম সময় হলো ঈদের পরের ছয় দিন। কারণ, তাতেই রয়েছে নেক আমলের প্রতি দ্রুত ধাবিত হওয়ার প্রমাণ। রোজাগুলো শাওয়ালের ২ তারিখ থেকেই শুরু করতে হবে এমনটা জরুরি নয়। ধারাবাহিকভাবে রাখতে হবে এটাও জরুরি নয়। মাসের যে কোনো সময় এ রোজা আদায় করা যায়। দুই-একটি রেখে মাঝখানে বিরতিও দেওয়া যাবে। সোম ও শুক্রবারও রাখা যাবে। তবে ২ তারিখ থেকে শুরু করা ভালো। এটা একজন মুমিনের আমলের প্রতি উদগ্রীব হওয়ার আলামত। আল্লামা ইবনে রজব (রহ.) বলেন, শাওয়াল মাসে রোজা রাখার তাৎপর্য অনেক। রমজানের পর রাখা রমজানের রোজা কবুল হওয়ার আলামতস্বরূপ। কেননা আল্লাহতায়ালা কোনো বান্দার আমল কবুল করলে, তাকে পরেও অনুরূপ আমল করার তওফিক দিয়ে থাকেন। নেক আমল কবুলের আলামত ও প্রতিদান নানারূপ। তার মধ্যে একটি হলো পুনরায় নেক আমল করার সৌভাগ্য অর্জন করা। তাই নামাজ, রোজা ও অন্যান্য ইবাদত বাকি এগারো মাসেও চালু রাখা চাই। লেখক: ইমাম ও খতিব
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলাদেশের সঙ্গে রোজা শুরু করলেও সৌদির সঙ্গে ঈদ মালয়েশিয়ার
বাংলাদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রোজা শুরু করেছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া। তবে শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ায় সৌদি আরবের সঙ্গে ঈদ পালন করছে দেশটি। অথ্যাৎ বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবে ৩০টি করে রোজা হলেও দেশটিতে ২৯টি রোজা পালিত হচ্ছে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) মরক্কো ওয়াল্ড নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় মঙ্গলবার শাওয়ালের চাঁদ দেখা গিয়েছে। ফলে দেশটিদে বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর পালিত হবে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবেও একই দিনে ঈদুল ফিতর পালিত হয়েছে।  মালয়েশিয়ায় গত ১২ মার্চ পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে। একই তারিখে বাংলাদেশেও রমজান মাসের শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়া রোজা শুরু করলেও সৌদি আরবের সঙ্গে ঈদ করছে দেশটি।   মরক্কো ওয়াল্ড জানিয়েছে, বুধবার (১০ এপ্রিল) মালয়েশিয়ায় ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। দেশটিতে ঈদুল ফিতরকে ‘হারি রায়া এদিলফিতরি’ নামে ডাকা হয়।  এদিকে সোমবার মধ্যপ্রাচ্যে চাঁদ দেখা না গেলেও আফ্রিকার দুই দেশে ঈদের চাঁদ দেখা গেছে। দেশদুটিতে মঙ্গলবার ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে। এ দুই দেশ হলো মালি ও নাইজার। দেশদুটিতে ২৯টি রোজা পালিত হয়েছে।  অন্যদিকে বাংলাদেশের চাঁদ দেখা কমিটি জানিয়েছে, মঙ্গলবার কোথাও চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে বুধবার রোজা পালন করে বৃহস্পতিবার ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছে তারা।  বাংলাদেশে রোজা শুরু হয়েছে গত ১২ মার্চ থেকে। সে হিসেবে আজ ছিল ২৯তম রোজার দিন। এ বছর বাংলাদেশেও ৩০টি রোজা পালিত হবে।   
০৯ এপ্রিল, ২০২৪

রোজা অবস্থায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় রোজা থেকে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পা‌নিতে ডুবে মাদ্রাসাপড়ুয়া তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মালিহা (৭) নামের এক শিশু কন্যার মৃত্যু হয়েছে।  সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে উপ‌জেলার দর্শনা থানার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের সাড়াবারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  নিহত শিশু মালিহা ঐ গ্রামের  মিজানুর রহমানের মেয়ে।   পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মালিহা খাতুন পাশের বাড়ির রেজাউলের পুকুরে গোসল করতে যায়। পরে মালিহার বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। এক পর্যায়ে দুপুর ২টার সময় এলাকার লোকজন ওই পুকুরে তার লাশ ভাসতে দে‌খে।  মালিহার বাবা মিজানুর রহমান কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার মেয়ে মালিহা ২০টি রোজা রেখেছে। আজও সে রোজা অবস্থায় ছিল। দর্শনা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।  
০২ এপ্রিল, ২০২৪

রোজা রেখে নিজের বীরত্ব দেখালেন মুসলিম নারী
রোজা থেকে নিজের বীরত্ব দেখিয়েছেন এক মুসলিম নারী। অংশ নিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন শক্তির খেলায়। এমনকি শেষ করেছেন প্রতিযোগিতার ধাপগুলোও। অবিশ্বাস্য হলেও রোজার মধ্যেই সমাপ্ত করেছেন চ্যালেঞ্জিং সব পর্ব। শনিবার (৩০ মার্চ) খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  রোজা থেকে নিজের বীরত্ব দেখানো ওই মুসলিম নারীর নাম ফাতেমা এলগাজার। তিনি মিসরীয় ভার উত্তোলক। বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন শক্তির খেলায় অংশ নিয়ে তিনি কেবল শারীরিক শক্তি দেখাননি, নিজের মানসিক সক্ষমতারও প্রমাণ দিয়েছেন। রোজা থেকে তিনি ওয়ার্ল্ড স্ট্রংম্যান চ্যাম্পিয়নশিপ সম্পন্ন করেছেন। দুবাইয়ের আমিরাত স্পোর্টস হোটেলে বৃহস্পতিবার এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হেভিওয়েট অ্যাথলেটরা। তারা সেখানে নিজেদের সুপার পাওয়ারও দেখিয়েছেন।  ফাতেমা নারী বিভাগের আন্ডার ৭৫ কেজিতে অংশ নেন। তার বিরুদ্ধে ভারত, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার ভার উত্তোলকরা অংশ নিয়েছেন। প্রতিযোগীতার নারীদের পুরুষ প্রতিযোগিদের মতো তিনটি ধাপে অংশ নিতে হয়। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৬০ কেজি ওজনের লগ উঁচু করতে হয়। প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী এজন্য তিনবার সুযোগ পান প্রতিযোগীরা। এছাড়া তাদের ১৪০ কেজির এক্সেল তোলা ও এক হাতে শরীর সোজা রেখে ৩৫ কেজি ওজনের ডাম্বল তোলা এবং ৭০ কেজির পাথর ১১০ সেন্টিমিটার তুলতে হয়। সবটির জন্য একজন প্রতিযোগী তিনবার করে সুযোগ পান। এছাড়া প্রথম ধাপ শেষ করার জন্য সময় দেওয়া হয় মাত্র দুই মিনিট।  প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় ধাপে ৮০ কেজির বালুর ব্যাগ ১৫ মিটার বহন, ২০০ কেজির বোঝা কাঁধে নিয়ে ১৫ মিটার দৌড় এবং এবং ১৫০ কেজির  ওজন নিয়ে ১৫ মিটার হাঁটতে হয়। আর সবটি করার জন্য সময় থাকে মাত্র এক মিনিট। তবে ফাতেমা এগুলো শেষ করেছেন মাত্র ৪০ সেকেন্ডে।  এছাড়া প্রতিযোগিতার তৃতীয় ধাপ ছিল রোয়িং মেশিনে ৫০০ বার লিভার টানার শর্ত।  মুসলিম এ ভার উত্তোলক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে কেবল নিজের দৃঢ়তা দেখাননি, বরং তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন যে মুসলিমরা রমজানের সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সিয়াম সাধনার পরও এমন শক্তির খেলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। রোজা থেকে এমন চ্যালেঞ্জিং সব পর্ব অতিক্রম করার সময় বিরতিতে খালিজ টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন ফাতেমা এলগাজার। তবে এ সময়ে তার সামান্যতম শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাও দেখা দেয়নি। তিনি জানান, তিনি প্রতিযোগিতার জন্য নিবিড়ভাবে অনুশীলন করেছেন। এছাড়া রমজানের প্রথম দিন থেকে রোজা থাকছেন তিনি।  ফাতেমা জানান, প্রথম সপ্তাহে অনুশীলনের সময় আমার জন্য কষ্টসাধ্য বিষয় ছিল। আমাকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুশীলন করতে হতো। এরপর আমি রুটিন করে নেয়  এবং আমার শরীরও খাপ খাইয়ে নেয়। ফলে আমি আগের চেয়ে বেশি শক্ত বোধ করি। মানসিক ফোকাস ঠিক রাখতে রোজা আমাকে সহযোগিতা করেছে।  খালিজ টাইমস জানিয়েছে, দুবাইয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে ফাতেমা মিসরের শক্তিশালী নারীর মুকুট অর্জন করেন। 
৩০ মার্চ, ২০২৪

যে বছর রোজা হবে ৩৬টি
ইংরেজি বছর অনুযায়ী রমজান মাস বছরে একবারই আসে। কখনো ২৯টি আবার কখনো ৩০টি রোজা পালন করতে হয়। কিন্তু কেমন হবে যদি বছরে দুবার রমজান মাস হয়? হ্যাঁ- আগামীতে এমনই একটি বছর আসবে যেটিতে রমজান মাস হবে বছরে দুবার! শুধু তাই-ই নয়, ২০৩০ সালে রাখতে হবে ৩৬টি রোজা। এমনটি জানিয়েছেন দুবাই অ্যাস্ট্রোনমি গ্রুপের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হাসান আহমেদ আল হারিরি। তিনি বলেন, ২০৩০ সালে দুটি রমজান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি জানান, ইংরেজি বর্ষপঞ্জি ও চন্দ্র বছরের মাসগুলোর পার্থক্যের কারণে এমনটা ঘটবে। সাধারণত ইংরেজি বছরের মাসগুলো ৩০ অথবা ৩১ দিনে নির্ধারিত থাকে। কিন্তু চন্দ্র বছরের মাসগুলো নির্ধারিত হয় ২৯ অথবা ৩০ দিনে। মাসে দিনের এই পার্থক্যের কারণে ইংরেজি বছর শেষে চন্দ্র বছর ১১ দিন কমে যায়। এভাবে বছরে ১১ দিন পার্থক্য থেকে যাওয়ায় ২০৩০ সালে দু’বার রমজান মাস পাবে মুসলিমরা। গ্লোবাল ইসলামিক ক্যালেন্ডারেও এই তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে। ক্যালেন্ডারে দেখা গেছে, ওই বছর প্রথম রমজানটি শুরু হবে ৫ জানুয়ারি, শেষ হবে ৪ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় রমজান মাসটি শুরু হবে ২৬ ডিসেম্বর, যা শেষ হবে ২০৩১ সালের ২৪ জানুয়ারি। সুতরাং, অপর রমজানের ঈদুল ফিতর ঈদটি অনুষ্ঠিত হবে ২০৩১ সালে। সৌদি আরব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের জলবায়ুর অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মুসনাদ বলেন, ১৪৫১ হিজরির পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে ২০৩০ সালের ৫ জানুয়ারি। এ মাসটি ৩০ দিন পূর্ণ হবে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখে শেষ হবে রমজান মাস। এ হিসাবে রমজান মাসের রোজা হবে ৩০টি। এরপর একই বছর ২৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ১৪৫২ হিজরির রমজান মাস। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুসলিমরা ৬ দিন রোজা পালন করবে। সে হিসাবে ২০৩০ সালে মুসলিম উম্মাহ ৩৬ দিন রোজা পালন করবে। শুধু তাই নয়, ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২০৩৩ সালে দুবার পূর্ণ রমজান মাস আসবে এবং সে বছর মোট তিনটি ঈদ অনুষ্ঠিত হবে।
৩০ মার্চ, ২০২৪

রোজা রেখে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে করণীয় 
চলছে পবিত্র রমজান মাস। ভোর থেকে সারাদিন থাকতে হয় পানাহার ছাড়া। রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা নিয়ে রয়েছে ভিন্নমত। যার কারণে ব্রাশ করা থেকে সকলেই বিরতে থাকেন। দীর্ঘসময় খাওয়াদাওয়া ছাড়া থাকার কারণে এসময় মুখে দুর্গন্ধ তৈরি হয়। চিকিৎসার পরিভাষায় একে ‘হ্যালিটোসিস’ বলে। প্রায় ১২ ঘণ্টা না খেয়ে থাকায় অনেকেই এই হ্যালিটোসিসের সম্মুখীন হন। দন্ত চিকিৎসকদের মতে, মুখের ভেতর দুর্গন্ধ হওয়ার পেছনে অনেক কারণই থাকতে পারে। এটি বড় কোনো রোগের উপসর্গও হতে পারে। সাধারণ কিছু বিষয় খেয়াল রাখলেই এই সমস্যা এড়ানো যায়।  চলুন জেনে নিই বিস্তারিত-  একটানা রোজা রাখার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা হয়ে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হয় সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ না করলেও রোজারত অবস্থায় মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার ফলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে একটানা রোজা রাখার কারণে শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। এ কারণে মুখ শুকিয়ে যাওয়ায় নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হয়। এছাড়া সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ না করলেও রোজারত অবস্থায় মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। রোজায় মুখে দুর্গন্ধের কারণ দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকায় শরীরে শর্করা বিপাক কমে গিয়ে চর্বি বা ফ্যাট বিপাক বেড়ে যায়। ফলে মুখে গন্ধ হয়। আর রোজারত অবস্থায় মুখের লালাগ্রন্থি কম সচল থাকার কারণে লালা নিঃসরণ কমে যায়। এভাবে মুখের ব্যাকটেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। ফলে ব্যাকটেরিয়ার বাইপ্রোডাক্ট (উপজাত) থেকে মুখে গন্ধ আসে। এছাড়া অনেকে সঠিকভাবে এ সময় মুখের পরিচ্ছন্নতাবিধি মেনে চলেন না বা মুখের ভেতর ভালো করে পরিষ্কার করেন না, যার কারণে দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে যায়। রোজায় দাঁত ও মুখের যত্ন সাধারণত আমরা দুই বেলা সকাল ও রাতে দাঁত ব্রাশ করে থাকি। সেক্ষেত্রে রমজানেও ইফতার ও সাহ্‌রির পর ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করা দরকার। ইফতারের পর না হলেও সন্ধ্যা রাতে দাঁত ব্রাশ করা জরুরি। তবে সাহরির পরপর ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ ও মুখের ভেতর ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। তাহলে মুখে জীবাণুর আধিক্য হ্রাস পাবে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে করণীয় কয়েকটি বিষয় মেনে চললে রোজা রেখেও মুখের দুর্গন্ধ এড়াতে সম্ভব। চলুন জেনে নেই রমজানে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে কী কী করা উচিত- ১. ইফতারের পর থেকে সাহ্‌রির আগ পর্যন্ত প্রচুর পানি পান করা উচিত। এছাড়া শরবত বা ইসুবগুলের ভুসিও খাওয়া যেতে পারে। এতে পেটও ভালো থাকবে। ২. গুল বা তামাক একদম খাওয়া উচিত নয়। ধূমপান ত্যাগ করা উচিত, কারণ ধূমপান মুখের দুর্গন্ধ বাড়ায়। ৩. দাঁত মাজার পর মুখ ধোয়ার জন্য মাউথওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। ৪. খাবারের অবশিষ্টাংশ দাঁতের গোড়ায় আটকে থেকে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। এ জন্য ফ্লস ব্যবহার করুন। ৫. অনেকেই জিহ্বা পরিষ্কার করেন না। এর ফলেও কিন্তু মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতে পারে। তাই নিয়মিত জিহ্বা পরিষ্কার করাও জরুরি।
৩০ মার্চ, ২০২৪

রোজা রাখছেন ১৩০ বছর বয়সী সুফিয়া, পড়ছেন ৫ ওয়াক্ত নামাজ
বয়সের ভারে বেঁকে গেছেন সুফিয়া খাতুন। শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের অন্যতম প্রবীণ ব্যক্তি তিনি। অবিশ্বাস্য মনে হলেও তার বয়স এখন ১৩০। আরও অবিশ্বাস্য ব্যাপার এই যে, এই বয়সেও তিনি সব রোজা রাখছেন, পড়ছেন ৫ ওয়াক্ত নামাজ। সুফিয়া খাতুনের জন্ম মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের পানাম গ্রামে। ৮ মেয়ে ও ২ ছেলেকে রেখে ৬১ বছর আগে মারা গেছেন স্বামী মো. আলতাজুদ্দিন তালুকদার। বর্তমানে শতাধিক নাতি-নাতনি আর স্বজনদের স্নেহ-ভালোবাসায় জীবনের শেষ দিনগুলো ভালোভাবেই পার করছেন সুফিয়া খাতুন। খুব একটা অসুখও নেই তার। সুফিয়া খাতুনের দুই ছেলের মধ্যে একজনের বয়স ৯০। আট মেয়ের মধ্যে বর্তমানে জীবিত আছে ৫ জন। আছেন ৮৫ বছরের এক মেয়েও। ৬ মেয়ে জামাইও চলে গেছেন পরপারে। কিন্তু এখনো দিব্যি হাঁটাচলা করেন সুফিয়া। ফজরের সময় তিনিই বাড়ির সবাইকে ডেকে তোলেন। নিজের গোসল, খাওয়া-দাওয়া নিজেই করেন। বড় কোনো সমস্যা না থাকলেও শরীরে ব্যথা আছে সুফিয়া খাতুনের। কানেও কম শোনেন। কিন্তু এসব কিছুকে পাত্তা না দিয়েই মধ্যরাতে উঠে পড়েন তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে। রমজানে তারাবির নামাজও পড়ছেন তিনি। দিন-রাতের প্রায় পুরোটা সময় তসবিহ হাতে আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকেন। সুফিয়া খাতুনের ছেলে মো. হোসেন তালুকদার বলেন, মা নিজেই ঘুম থেকে ওঠে, ওজু করে ও নামাজ পড়েন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই আদায় করেন তিনি। মা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন ও রোজা রাখেন। সুফিয়া খাতুন বলেন, আমার খাবার তালিকায় দুধ ও ভাত থাকে। বউদের যেভাবে বলি আমাকে সেভাবেই যত্ন নেয়। আমার পাঁচটা তসবিহ। ছেলেদের দুটি দিয়ে দিলেও আমার কাছে তিনটি রেখেছি। ছোটবেলা থেকেই তিনি রোজা রাখেন। দেশের অন্যতম প্রবীণ সুফিয়া খাতুনের কোনো অভিযোগ নেই। তবে পরিবারের সদস্যরা জানালেন, সরকারের বয়স্কভাতা থেকে বঞ্চিত সবচেয়ে বয়স্ক এই মানুষটি।
২৪ মার্চ, ২০২৪

ইসলামের আলো / রোজা না রাখলে যে শাস্তি
ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি হলো রমজান মাসে রোজা রাখা। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যেমন ফরজ, তেমনি রমজান মাসে ৩০টি রোজা রাখাও ফরজ। রমজান মাসে রোজা পরিত্যাগ করা কবিরা গুনাহ। রোজা না রাখলে রয়েছে ভয়াবহ আজাব। রমজান মাসে রোজার প্রতিদান বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই দশগুণ থেকে সাতশগুণ বৃদ্ধি করা হয়। মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, কিন্তু রোজা ছাড়া। কেননা তা আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেব। সে আমার সন্তুষ্টির জন্য কামাচার ও পানাহার পরিত্যাগ করে। রোজা পালনকারীর জন্য রয়েছে দুটি খুশি, যা তাকে খুশি করে। যখন সে ইফতারি করে, সে খুশি হয় এবং যখন সে তার রবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তখন রোজার বিনিময়ে আনন্দিত হবে। রোজা পালনকারীর মুখের (না খাওয়াজনিত) ঘ্রাণ আল্লাহর কাছে মিসকের ঘ্রাণের চেয়েও উত্তম।’ (বোখারি : ১৯০৪)। তিনি আরও বলেছেন যে, প্রত্যেক আমলেরই কাফফারা আছে। রোজা আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেব।’ (বোখারি : ৭৫৩৮)। রোজার বিনিময়ে রয়েছে জান্নাত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘রমজান মাস ধৈর্যের মাস। আর ধৈর্যের প্রতিদান জান্নাত।’ (ইবন খুজাইমা : ১৮৮৭) আরেক হাদিসে এসেছে, রোজা ঢালস্বরূপ যতক্ষণ পর্যন্ত তা ভেঙে না ফেলে।’ (নাসাঈ : ২২৩৫, মুসনাদে আহমাদ : ১৬৯০)। এখানেই শেষ নয়, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন যে, রোজা পালনকারীর মুখের (না খাওয়াজনিত) ঘ্রাণ আল্লাহর কাছে মিসকের ঘ্রাণের চেয়েও উত্তম।’ (বোখারি : ১৯০৪, সহিহ মুসলিম : ১১৫১) তিরমিজি শরিফে বর্ণনা করা হয়েছে, তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (তন্মধ্যে একজন হলো) রোজা পালনকারী ব্যক্তি, যতক্ষণ না ইফতার করে।’ (তিরমিজি : ৩৪৯৮)। রমজান মাসে রোজা না রাখার ভয়াবহ শাস্তির ব্যাপারে হাদিসে এসেছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় দুজন ব্যক্তি এসে আমার দুই বাহু ধরে আমাকে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে যায়। অতঃপর আমাকে এমন কিছু লোকের কাছে নিয়ে যায়, যাদের পায়ের টাখনুতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ছিন্নভিন্ন, তা হতে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘এরা কারা?’ তারা বললেন, ‘এরা এমন রোজাদার, যারা (অকারণে রমজান মাসের) রোজা শেষ না করেই ইফতার করত।’ (সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস : ১৫০৯)। অন্য হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি প্রয়োজন ও রোগ ছাড়া রমজানের একটি রোজা ভেঙে ফেলল, তার সারা জীবনের রোজা দ্বারাও এ কাজা আদায় হবে না, যদিও সে সারা জীবন রোজা পালন করে।’ (তিরমিজি : ৭২৩)। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে রোজা রাখার তাওফিক দান করুন।  
২২ মার্চ, ২০২৪

যে সকল ভ্রমণের সময় রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে
আল্লাহ তায়ালা রোজা প্রত্যেক সক্ষম মুসলিম নর-নারীর ওপর ফরজ করেছেন। তবে এ থেকে সাময়িকভাবে হলেও ছাড় দেয়া হয়েছে রোগী ও মুসাফিরকে। অসুস্থতা যেমন সিয়াম পালন থেকে ছাড় পাওয়ার একটি কারণ তেমনি আরেক কারণ সফর।  এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি এ মাস প্রত্যক্ষ করবে, তাকে এতে রোজা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি অসুস্থ হয়, কিংবা সফরে থাকে সে অন্যান্য দিন থেকে এ সংখ্যা পূরণ করবে। (সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৫) তবে সালাত ও সিয়ামে ছাড় পাওয়ার জন্য সফরের দূরত্ব ও মেয়াদ বিবেচ্য বিষয়। নামমাত্র ভ্রমণ ও প্রবাস জীবনকে যেন ইবাদতে বিশেষ সুবিধা লাভের কারণ হিসেবে কেউ ব্যবহার করতে না চায়, সেজন্য এসব শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য দূরত্ব একটি শর্ত হিসেবে গণ্য। হেঁটে স্বাভাবিক গতিতে তিন দিনে যে পরিমাণ পথ অতিক্রম করার রীতি তখনকার আরবে প্রচলিত ছিল, সেটাকে এ ব্যাপারে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এই তিন দিনের পথ বা তিন মঞ্জিল পরবর্তীকালের পরিমাপে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার সাব্যস্ত করা হয়।  তা ছাড়া কুরআন মজিদের শব্দচয়ন থেকে অনুমিত হয়, নিছক প্রবাস জীবন নয় বরং চলমান অবস্থা শর্ত। তাই সফরকালে উল্লেখযোগ্য সময় বা কমপক্ষে ১৫ দিন যাত্রাবিরতির কারণে সালাতে কসর ও সিয়ামে ছাড়ের হুকুম রহিত হয়ে যায়।  ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, মুসাফিরের জন্য সফর অবস্থায় রোজা না রাখার সুযোগ রয়েছে। তবে অস্বাভাবিক কষ্ট না হলে রোজা রাখাই উত্তম। আর অস্বাভাবিক কষ্ট হলে রোজা রাখা মাকরুহ। এ অবস্থায় রোজা না রেখে পরে তা কাজা করবে।  তাবেয়ি আছিম (রহ:) বলেন, হজরত আনাস (রা:)কে সফরকালে রোজা রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, ‘যে রোজা রাখবে না সে অবকাশ গ্রহণ করল। আর যে রোজা রাখল সে উত্তম কাজ করল।’(মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা )  তবে সফর অবস্থায় রোযা রাখা শুরু করলে নেহায়েত কষ্ট ছাড়া তা আর ভাঙা জায়েয নয়। কেউ ভেঙে ফেললে গুনাহগার হবে। তবে কাফ্ফারা আসবে না। শুধু কাজাই যথেষ্ট।  হজরত আনাস (রা.) বলেন, ‘কেউ রোজা রেখে সফরে বের হলে রোযা ভাঙবে না। তবে যদি পিপাসার কারণে প্রাণনাশের আশঙ্কা হয় তাহলে রোজা ভাঙতে পারবে, পরে তা কাজা করে নেবে। যদি এমন হয় যে, মুসাফির সফরের কারণে রোজা রাখেনি, কিন্তু দিন শেষ হওয়ার আগেই মুকিম হয়ে গেল। তাহলে দিনের অবশিষ্ট সময় রমজানের মর্যাদা রক্ষার্থে পানাহার থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। তবুও পরবর্তী সময়ে এ রোযার কাজা অবশ্যই করতে হবে।  তাবেয়ি ইবরাহিম নাখায়ী (রাহ:) বলেন, যে মুসাফির রমজানের দিনে (সফরের অবস্থায়) খাবার খেয়েছে, সে মুকিম হয়ে গেলে দিনের বাকি অংশ পানাহার থেকে বিরত থাকবে।(মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)  সফর ক্লান্তিকর হওয়াই স্বাভাবিক। জাগতিক ক্রিয়াকলাপের প্রয়োজনে মানুষকে সফরে যেতেই হয়। তাই ইসলামি শরিয়তে মুমিন বান্দাদের জন্য সফরকালে সালাত ও সিয়াম আদায়ে কিছুটা সুবিধা দেয়া হয়েছে। যদি কারো সফর ব্যতিক্রমী হিসেবে আরামদায়কও হয় তবুও তার জন্য এ সুবিধা রহিত হবে না।  একজন তাবেয়ি এ সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন হজরত ওমর ফারুককে। জবাবে হজরত ওমর ফারুক (রা:) বলেন, তুমি যেমন আমাকে প্রশ্ন করেছ, আমিও তেমনি আল্লাহর রাসূল সা:-কে এ প্রশ্ন করেছিলাম। বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল সা:, আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘যখন তোমরা সফরে থাকবে, তখন তোমরা যদি আশঙ্কা করো যে কাফেররা তোমাদের বিপদে ফেলবে, তাহলে নামাজে কসর করায় তোমাদের কোনো অন্যায় হবে না। এখন তো আমরা নিরাপদ হয়ে গেছি। জবাবে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এটা আল্লাহ তায়ালার দান। এ দান তোমরা গ্রহণ করো। এ জন্য ইমাম আবু হানিফার মতে সফরে নামাজের কসর করা বাধ্যতামূলক। অবশ্য অন্য ইমামরা তা ঐচ্ছিক বলেছেন। কিন্তু সফরে রোজা রাখা না রাখা দুটিরই অনুমতি আছে, এ ব্যাপারে সবাই একমত। কোনটি ভালো, রাখা নাকি না রাখা, সে সম্পর্কে দুই ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায়। এক হাদিসে দেখা যায়, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সফরে রোজা রাখা খুব ভালো। কিন্তু আরেক হাদিসে তিনি ইরশাদ করেন, সফরে রোজা রাখা নেক কাজ নয়। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ উক্তির প্রেক্ষাপট থেকে বিষয়টি পরিষ্কার হয়। তা এই যে, এক সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক জায়গায় লোকজনের ভিড় দেখে কারণ জিজ্ঞেস করলেন। সেখানে একজনকে ছায়ায় রেখে সেবা করা হচ্ছে। তার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলেন লোকটি রোজা রাখার কারণে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তখন তিনি বললেন, সফরে রোজা রাখা নেক কাজ নয়। আরেক সফরে সাহাবায়ে কেরামের কেউ কেউ রোজা রাখলেন, আবার কেউ কেউ রোজা রাখলেন না। এক জায়গায় যাত্রাবিরতি করলে রোজাদারেরা ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। আর যারা রোজা রাখেননি, তারাই তাঁবু টানানো, বাহনগুলো সামলানো ইত্যাদি সব কাজ করলেন। তখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, বে-রোজাদারেরা সব পুণ্য হাসিল করল।
২০ মার্চ, ২০২৪
X