কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৫ এএম
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৪ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

শাওয়াল মাসের ছয় রোজা

মাওলানা মিজানুর রহমান
শাওয়াল মাসের ছয় রোজা

পবিত্র রমজান মাস শেষে এসেছে শাওয়াল। হিজরি ক্যালেন্ডারের দশম মাস শাওয়াল। শাওয়াল অর্থ উঁচু, উন্নত বা ভারী হওয়া। এ মাসে মুমিন বান্দারা ফিতরা প্রদান, ঈদুল ফিতর পালন ও ছয় রোজা রাখার মধ্য দিয়ে পরকালীন উন্নতি সাধন, নেকির পাল্লা ভারী ও গৌরব অর্জন করে থাকেন। এ মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখা অন্যতম আমল।

শাওয়ালের ছয় রোজার বিধান: অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে, শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত। এ রোজাগুলো লাগাতার অথবা ভেঙে ভেঙে আদায় করা যায়। হজরত ইবনে মোবারক (রহ.) বলেন, প্রতি মাসের তিন দিন রোজা রাখার মতো শাওয়ালের ছয় দিন রোজা রাখাও ভালো আমল। আল্লাহতায়ালা ফরজ ইবাদতের পর সুন্নত ও নফল ইবাদতের প্রতি উৎসাহ ও নির্দেশনা দেন। শাওয়ালের রোজার ব্যাপারে একাধিক হাদিসে উৎসাহ এসেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল অতঃপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।’ (মুসলিম : ১১৬৪)

শাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলত: হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন বছরজুড়ে রোজা রাখল।’ (মুসলিম : ২৮১৫; তিরমিজি : ৭৫৯)। পুরো বছরজুড়ে রোজা রাখার সওয়াব এভাবে হয়—আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি একটি নেক কাজ করবে সে দশগুণ বেশি সওয়াব পাবে।’ (সুরা আনআম : ১৬০)। সে হিসেবে রমজানুল মোবারকের ৩০ রোজা ৩০০ রোজার সমান হলো। আর শাওয়ালের ৬টি রোজা ৬০ রোজার সমান। এভাবে ৩৬টি রোজা বছরের মোট ৩৬০টি রোজার সমান হয়ে গেল। তাহলে আমরা এই ছয়টি রোজা রাখার মাধ্যমে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পেয়ে যাই। এ বিষয়টি আরেকটি হাদিস থেকে আরও স্পষ্ট হয়। হজরত উবাইদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?’ তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে, কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজানের পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখো, তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি : ১/১৫৩৪)

শাওয়াল রোজা কখন রাখবেন: শাওয়ালের রোজা রাখার নিয়মের মধ্যে উত্তম সময় হলো ঈদের পরের ছয় দিন। কারণ, তাতেই রয়েছে নেক আমলের প্রতি দ্রুত ধাবিত হওয়ার প্রমাণ। রোজাগুলো শাওয়ালের ২ তারিখ থেকেই শুরু করতে হবে এমনটা জরুরি নয়। ধারাবাহিকভাবে রাখতে হবে এটাও জরুরি নয়। মাসের যে কোনো সময় এ রোজা আদায় করা যায়। দুই-একটি রেখে মাঝখানে বিরতিও দেওয়া যাবে। সোম ও শুক্রবারও রাখা যাবে। তবে ২ তারিখ থেকে শুরু করা ভালো। এটা একজন মুমিনের আমলের প্রতি উদগ্রীব হওয়ার আলামত। আল্লামা ইবনে রজব (রহ.) বলেন, শাওয়াল মাসে রোজা রাখার তাৎপর্য অনেক। রমজানের পর রাখা রমজানের রোজা কবুল হওয়ার আলামতস্বরূপ। কেননা আল্লাহতায়ালা কোনো বান্দার আমল কবুল করলে, তাকে পরেও অনুরূপ আমল করার তওফিক দিয়ে থাকেন। নেক আমল কবুলের আলামত ও প্রতিদান নানারূপ। তার মধ্যে একটি হলো পুনরায় নেক আমল করার সৌভাগ্য অর্জন করা। তাই নামাজ, রোজা ও অন্যান্য ইবাদত বাকি এগারো মাসেও চালু রাখা চাই।

লেখক: ইমাম ও খতিব

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কমলো এলপি গ্যাসের দাম 

রাতে সাপ হয়ে কামড়াতে যান স্ত্রী, প্রশাসনের কাছে স্বামীর অভিযোগ

অ্যাম্বুলেন্সে করে মহাসড়কে ডাকাতির চেষ্টা

কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত যুবকের মৃত্যু

ভয়াবহ হামলার ২ বছর, ইসরায়েলজুড়ে চলছে শোক

মৃত্যু ছাড়া মানুষের সেফ এক্সিট নেই : সারজিস আলম

যে ৪ আলামত থাকলেই বুঝবেন আল্লাহ আপনাকে অনেক ভালোবাসেন

বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান

সিরিয়ায় সরকারি বাহিনী ও এসডিএফের মধ্যে যুদ্ধবিরতি

‘আবরারের গল্প আমাদের প্রজন্মের সাহসের গল্প’

১০

পড়ে রয়েছে বিছানা-পড়ার টেবিল, নেই শুধু আবরার

১১

ফুটপাতে জন্ম, নবজাতক রেখে চলে গেলেন মা

১২

প্রজনন মৌসুমে ইলিশ শিকার : দুই জেলের কারাদণ্ড

১৩

বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল ইংল্যান্ড, দেখে নিন একাদশ

১৪

জবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্যান্টিন স্টাফদের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ারের জার্সি উপহার 

১৫

স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক এমপি সামছুল আলমের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা 

১৬

বাথরুমে একদম খোলামেলা গোসল করেন? হতে পারে যে ৩ বিপদ

১৭

শোবিতাকে ছাড়া বাঁচতে পারি না : নাগা চৈতন্য

১৮

চাঁদাবাজবিরোধী অভিযানে গিয়ে আহত ৩ পুলিশ সদস্য

১৯

হেলিকপ্টারে এসে প্রার্থিতা ঘোষণা করলেন প্রবাসী

২০
X