চলছে পবিত্র রমজান মাস। ভোর থেকে সারাদিন থাকতে হয় পানাহার ছাড়া। রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা নিয়ে রয়েছে ভিন্নমত। যার কারণে ব্রাশ করা থেকে সকলেই বিরতে থাকেন। দীর্ঘসময় খাওয়াদাওয়া ছাড়া থাকার কারণে এসময় মুখে দুর্গন্ধ তৈরি হয়। চিকিৎসার পরিভাষায় একে ‘হ্যালিটোসিস’ বলে।
প্রায় ১২ ঘণ্টা না খেয়ে থাকায় অনেকেই এই হ্যালিটোসিসের সম্মুখীন হন। দন্ত চিকিৎসকদের মতে, মুখের ভেতর দুর্গন্ধ হওয়ার পেছনে অনেক কারণই থাকতে পারে। এটি বড় কোনো রোগের উপসর্গও হতে পারে। সাধারণ কিছু বিষয় খেয়াল রাখলেই এই সমস্যা এড়ানো যায়।
চলুন জেনে নিই বিস্তারিত-
একটানা রোজা রাখার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা হয়ে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হয়
সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ না করলেও রোজারত অবস্থায় মুখে দুর্গন্ধ হতে পারেদীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার ফলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে একটানা রোজা রাখার কারণে শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। এ কারণে মুখ শুকিয়ে যাওয়ায় নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হয়। এছাড়া সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ না করলেও রোজারত অবস্থায় মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।
রোজায় মুখে দুর্গন্ধের কারণ
দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকায় শরীরে শর্করা বিপাক কমে গিয়ে চর্বি বা ফ্যাট বিপাক বেড়ে যায়। ফলে মুখে গন্ধ হয়। আর রোজারত অবস্থায় মুখের লালাগ্রন্থি কম সচল থাকার কারণে লালা নিঃসরণ কমে যায়। এভাবে মুখের ব্যাকটেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। ফলে ব্যাকটেরিয়ার বাইপ্রোডাক্ট (উপজাত) থেকে মুখে গন্ধ আসে।
এছাড়া অনেকে সঠিকভাবে এ সময় মুখের পরিচ্ছন্নতাবিধি মেনে চলেন না বা মুখের ভেতর ভালো করে পরিষ্কার করেন না, যার কারণে দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে যায়।
রোজায় দাঁত ও মুখের যত্ন
সাধারণত আমরা দুই বেলা সকাল ও রাতে দাঁত ব্রাশ করে থাকি। সেক্ষেত্রে রমজানেও ইফতার ও সাহ্রির পর ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করা দরকার। ইফতারের পর না হলেও সন্ধ্যা রাতে দাঁত ব্রাশ করা জরুরি। তবে সাহরির পরপর ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ ও মুখের ভেতর ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। তাহলে মুখে জীবাণুর আধিক্য হ্রাস পাবে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে করণীয়
কয়েকটি বিষয় মেনে চললে রোজা রেখেও মুখের দুর্গন্ধ এড়াতে সম্ভব। চলুন জেনে নেই রমজানে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে কী কী করা উচিত-
১. ইফতারের পর থেকে সাহ্রির আগ পর্যন্ত প্রচুর পানি পান করা উচিত। এছাড়া শরবত বা ইসুবগুলের ভুসিও খাওয়া যেতে পারে। এতে পেটও ভালো থাকবে।
২. গুল বা তামাক একদম খাওয়া উচিত নয়। ধূমপান ত্যাগ করা উচিত, কারণ ধূমপান মুখের দুর্গন্ধ বাড়ায়।
৩. দাঁত মাজার পর মুখ ধোয়ার জন্য মাউথওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
৪. খাবারের অবশিষ্টাংশ দাঁতের গোড়ায় আটকে থেকে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। এ জন্য ফ্লস ব্যবহার করুন।
৫. অনেকেই জিহ্বা পরিষ্কার করেন না। এর ফলেও কিন্তু মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতে পারে। তাই নিয়মিত জিহ্বা পরিষ্কার করাও জরুরি।
মন্তব্য করুন