সম্প্রতি গরুর মাংস কম দামে বিক্রি করে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন মাংস বিক্রেতা খলিলুর রহমান। রোজার প্রথম দিন থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৯৫ টাকায় বিক্রির ঘোষণা দেন তিনি। এতে তার দোকান ‘খলিল গোস্ত বিতানে’ ক্রেতাদের ঢল নামে। তাকে নিয়ে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। কেউ বলছেন, রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিতে দাম কমিয়ে আলোচনায় থাকতে চেয়েছেন খলিল। আবার সাম্প্রতিক সময়ে তার বিরুদ্ধে নিম্নমানের মাংস দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। ক্ষুব্ধ ক্রেতার সঙ্গে মারামারির ঘটনাও সামনে এসেছে।
রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুরের এই মাংস ব্যবসায়ীর গতকাল রোববার একটি ফোনালাপ ফাঁস হাওয়ায় আরও সমালোচিত হয়েছেন। বিভিন্ন মহল থেকে তার এই বাধাও সৃষ্টি করার অভিযোগ রয়েছে। খলিলকে নিয়ে সোমবার (২৫ মার্চ) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপ-প্রেস সচিব ও সাংবাদিক আশরাফুল আলম খোকন।
তিনি বলেন, একটা লোক কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করছে। লোকজনও লাইন ধরে ধরে কিনছে, কারণ কেজিতে ১০০ টাকা কম। দেশব্যাপী আলোড়নও সৃষ্টি হয়েছে। এখন তাকে কীভাবে নিচে নামানো যায়, দোষত্রুটি খুঁজে বের করে ব্যবসা নষ্ট করা যায়, এজন্য একটা শ্রেণি উঠেপরে লেগেছে। এর মধ্যে ব্যবসায়ীরা তো আছেই, আরও আছে বিভিন্ন ইউটিউবার এবং কিছু মিডিয়া।
খোকন বলেন, হওয়া উচিত ছিল উল্টোটা, আরও অনেককে এ কাজে উৎসাহিত করা। যাতে জনগণ উপকৃত হয়। আসলেই, সিন্ডিকেট খুব শক্তিশালী। আস্তে আস্তে ওই মাংস বিক্রেতার বিরুদ্ধে সবাইকে মাঠে নামাচ্ছে।
হতাশা প্রকাশ তিনি বলেন, বেচারা হয়তো বেশিদিন টিকে থাকতে পারবে না। কোনোদিন দেখবেন, একটি চুরি, খুন, ধর্ষণ মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাউকে কাবু করার সহজ রাস্তা।
এদিকে ইতোমধ্যে আলোচিত মাংস বিক্রেতা খলিলুর রহমান ২০ রোজার পরে আর গরুর মাংস বিক্রি করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
খলিলুর রহমান বলেন, মাংস ব্যবসায়ীদের জন্য এতকিছু করলাম, তারা এখন কেউ আমার পাশে নেই। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম এতদিন আমার কাছে থাকলেও এখন আর নেই। সরকারও আর আমার সঙ্গে নেই। ফলে আমি আর মাংস ব্যবসাই করব না। কথা দিচ্ছি, আগামী ২০ রমজানের পর আর খলিল মাংস বিতান থাকবে না। জীবনেও আর মাংস ব্যবসা করব না।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান রোববার (২৪ মার্চ) বলেন, গরুর মাংস বিক্রেতা খলিল, নয়ন ও উজ্জ্বল এতদিন লোকসান দিয়ে মাংস বিক্রি করেছেন। গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে মাংসের দামও বেড়ে গেছে। তাদের পক্ষে কম দামে আর মাংস বিক্রি করা সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতিতে তারা কি করবেন, এটি সম্পূর্ণ তাদের সিদ্ধান্ত।
মন্তব্য করুন