ক্যাম্প ন্যুতে যেন এক অঘোষিত যুদ্ধের দামামা বাজতে শুরু করেছে। কারণ গোলপোস্টের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে বার্সেলোনা শিবিরে সৃষ্টি হয়েছে দারুণ উত্তেজনা। দলের অভিজ্ঞ জার্মান গোলরক্ষক ও অধিনায়ক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন ক্লাবের নতুন গোলকিপার জোয়ান গার্সিয়াকে দলে নেওয়ার পরিকল্পনায় ভীষণ ক্ষুব্ধ। স্প্যানিশ গণমাধ্যম SPORT-এর দাবি, ক্লাবের এমন সিদ্ধান্তকে ‘পেশাদার চরিত্রে সরাসরি আঘাত’ হিসেবে দেখছেন তিনি।
বার্সেলোনার পরিকল্পনা অনুযায়ী, এস্পানিওল থেকে তরুণ গোলরক্ষক জোয়ান গার্সিয়া দ্রুতই দলে যোগ দেবেন। পাশাপাশি পোলিশ অভিজ্ঞ গোলরক্ষক ভয়চেখ শেজনি নতুন চুক্তিতে সই করে বার্সেলোনার মূল গোলপোস্টের দায়িত্বে থাকবেন। ফলে ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা তের স্টেগেন হয়ে পড়বেন তৃতীয় পছন্দ। আর এতেই ক্ষুব্ধ টের স্টেগেন বুঝিয়ে দিয়েছেন—যুদ্ধ ছাড়া ক্লাব ছাড়বেন না।
জার্মান কোচ হান্সি ফ্লিকের অধীনে টের স্টেগেনের জায়গা ক্রমেই ক্ষয়ে যেতে থাকে। ইনজুরি কাটিয়ে দ্রুত দলে ফেরার চেষ্টা করলেও ফ্লিক তার প্রতি আস্থা না রেখে বরং শেজনির দিকে ঝুঁকেছেন। এমন সিদ্ধান্তে চরম হতাশ টের স্টেগেনের সঙ্গে কোচের সম্পর্কও নাকি এখন আর আগের মতো নেই।
টের স্টেগেন গত আগস্টে হাঁটুর পাতেলায় চোট পেয়ে দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে ছিলেন। সেই সময় বার্সা শেজনিকে দলে ভেড়ায়। ইনাকি পেনার ধারাবাহিকতা না থাকায় শেজনি দ্রুত মূল একাদশে জায়গা করে নেন এবং এখন নতুন চুক্তির দ্বারপ্রান্তে। এদিকে পুরো মৌসুমে মাত্র ৯টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া টের স্টেগেন নিজেকে উপেক্ষিত মনে করছেন।
এই সংকট নিরসনে এখন ক্লাবের ক্রীড়া পরিচালক ডেকোর কাঁধে বড় দায়িত্ব। তিনিই বোঝাবেন টের স্টেগেনকে কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং তার ভবিষ্যৎ কী হতে পারে ক্যাম্প ন্যুতে।
যদিও ক্লাবে তাকে নিয়ে অনিশ্চয়তা, জাতীয় দলে এখনও তিনিই জার্মানির এক নম্বর গোলরক্ষক। রোববার নেশনস লিগের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে মাঠে নামবেন তের স্টেগেন। তবে আন্তর্জাতিক বিরতি শেষে তার ক্লাব ক্যারিয়ারে নাটকীয় মোড় নেওয়া একেবারেই অবধারিত।
টের স্টেগেনের মতো একজন অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত গোলরক্ষককে এমনভাবে কোণঠাসা করা কতটা যৌক্তিক—সে প্রশ্ন উঠছে বার্সেলোনা ভক্তদের মাঝেও। ক্লাবের দীর্ঘদিনের এই সেনানী কি শেষ পর্যন্ত ক্লাবের সঙ্গে থেকে নিজের জায়গা ফিরে পেতে লড়াই চালিয়ে যাবেন? নাকি নতুন ঠিকানার খোঁজে নামবেন? উত্তরের জন্য অপেক্ষা এখন সময়ের।
মন্তব্য করুন