জুয়েলারি দোকান থেকে ১০০ গ্রাম স্বর্ণ চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক বিজেপি দলীয় নেতা। তার নাম সোমনাথ সাউ। পশ্চিম মেদিনীপুর (হবিবপুর) বিজেপির যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক তিনি। মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা তিনি।
সম্প্রতি দেশটির ওড়িশা রাজ্যে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় চলছে। তৃণমূল কংগ্রেসসহ দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে এ বিষয় নিয়ে হাস্যরসও চলছে।
সামাজিক মাধ্যমে রাজ্য তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি করেন, হবিবপুরের বিজেপি যুব মোর্চার নেতা সোমনাথ সাউ গয়না চুরি করার সময় ওড়িশা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
পাল্টা জবাবে বিজেপির নেতাদের দাবি, এক সময় বিজেপির রাজনীতি করলেও বর্তমানে পদ্মশিবিরে কোনো পদে নেই চুরিকাণ্ডে ধরা পড়া সোমনাথের। তারা যুক্তি দিচ্ছেন- বিজেপি শাসিত ওড়িশায় গ্রেপ্তার হয়েছেন সোমনাথ। এটি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শাসক দলের কাছে ‘শিক্ষণীয়।’ কারণ, প্রতিবেশী রাজ্য সুশাসন ‘প্রতিষ্ঠা করেছে’।
স্থানীয় সূত্রের বরাতে কলকাতার সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, কয়েক দিন আগে ওড়িশার জলেশ্বরের একটি জুয়েলারি দোকান থেকে প্রায় ১০০ গ্রাম স্বর্ণ চুরি করে পালাতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়েন সোমনাথ। তৃণমূলের দাবি, ওই ব্যক্তি বিজেপির জেলা (পশ্চিম মেদিনীপুর) যুব মোর্চার সম্পাদকের পদে রয়েছেন। প্রমাণ হিসেবে পশ্চিম বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সোমনাথের ছবি তুলে ধরেছেন তৃণমূল নেতারা।
তৃণমূল নেতা কুণাল ফেসবুকে লেখেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে চুরির দৃশ্য আছে। তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলে এবং পুলিশে দেয়।’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সোমনাথের দুটি ছবি পোস্ট করে তৃণমূলের কুণাল লিখেছেন, ‘কাদের সঙ্গে তার ছবি আছে দেখুন।’
তবে কুণালের তথ্যকে ভুল বলে দাবি করেছেন জেলা যুব মোর্চার মুখপাত্র অরূপ দাস। তিনি বলেন, ‘ওই যুবক একসময় বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এটা ঠিক। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে বিজেপির সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই।’
তবে বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। আনন্দবাজারকে তিনি বলেন, ‘এ তো খুব ভালো কথা। ওড়িশায় বিজেপির সরকার রয়েছে। সেই সরকারের পুলিশ একজন চোর বা ডাকাতের সন্ধান পেয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছে। কোনো রাজনৈতিক রং খোঁজার চেষ্টাই করেনি। এর জন্য ওড়িশার সরকার এবং পুলিশকে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি। ওড়িশার বিজেপিকেও আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি যে, তারা এই রকম স্বচ্ছ প্রশাসন তৈরি করতে পেরেছে।’
মন্তব্য করুন