সন্তানের ভরণ-পোষণ, খোরপোশ ও কাবিনের টাকার দাবিতে করা মামলায় ২০২২ সাল থেকে ঢাকার আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন দোহারের শারমিন আক্তার। ঢাকার প্রথম পারিবারিক আদালতে তার মামলাটি বিচারাধীন। গত ধার্য তারিখে আদালতে এসে ফিরে গেছেন। গতকাল রোববার তার মামলার শুনানির পরবর্তী ধার্য তারিখ ছিল। সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে আদালতে এসেছেন। আদালতে আসার পর জানতে পারেন, আদালত বসছেন না। একদিকে বছরের পর বছর বিচার পাননি, তার পরও কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ করে আদালত না বসার খবরে শারমিনের মন বিষণ্নতায় ভরা।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে প্রথম পারিবারিক আদালতের সামনে শারমিনের সঙ্গে কথা হয় কালবেলা প্রতিবেদকের।
তিনি বলেন, তিন বছরের বেশি সময় ধরে মামলাটি চলমান। গত ধার্য তারিখে বিচারক ছুটিতে ছিলেন বলে শুনানি হয়নি। ফিরে গেছি। আজ এসে শুনলাম বিচারক এসেছেন। তবে কোর্ট বসছেন না। এভাবে বহুবার ধার্য তারিখে শুনানি না হওয়ায় ফিরে গেছি। তবে প্রতি ধার্য তারিখে টাকা দিয়ে যেতে হয়। এ ছাড়া নিয়মিত আসা-যাওয়ায় আমার যে ভোগান্তি, তা দেখার কেউ নেই।’ কেন বিচারক উঠছেন না—তা জানতে চাওয়া হয় ওই আদালতের পেশকার মাসুদ আলমের কাছে। তিনি জানান, ‘বিচারক ছয় মাস ছুটিতে ছিলেন। আজ যোগদান করেছেন। যোগদানপত্র অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে গেলে তারপর তিনি কোর্টে উঠতে পারেন।’
শুধু শারমিন আক্তারই নন, গতকাল ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসা বেশ কয়েকজন বিচারপ্রার্থীর সঙ্গে কথা বলেন কালবেলার প্রতিবেদকরা। সবারই প্রায় একই অভিযোগ। ধার্য তারিখে আদালতে আসেন; কিন্তু অনেক সময় শুনানি ছাড়াই ফিরে যান। কখনো কখনো বিচারক থাকেন না। কখনো বিচারক থাকলেও শুনানি হয় না। আবার বিচারকরা সময়মতো এজলাসেও ওঠেন না। গতকাল ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একজন বিচারকও নির্ধারিত সময়ে এজলাসে ওঠেননি।
গতকাল বেলা ১১টার পর ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ আদালত (কেরানীগঞ্জ)-এর সামনে কথা হয় কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের মুল্লুক চানের সঙ্গে। তিনি একই এলাকার আছিয়া বেগমের করা জমিজমার একটি মামলার বিবাদী। দুই বছর ধরে মামলার ঝামেলা কাঁধে নিয়ে ঘুরছেন। মুল্লুক চান বলেন, ‘এখনো বিচারক এজলাসে ওঠেননি। পেশকার বলেছেন বিচারক ১২টায় উঠবেন। বসার জায়গা না থাকায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। আজ শুনানি হবে কি না জানি না। এর আগে পরপর তিনটি ধার্য তারিখেও শুনানি হয়নি। সর্বশেষ ১৩ এপ্রিল শুনানি না হওয়ায় আদালতে এসে ফিরে যাই।
দোহার থানার নারিশা পশ্চিম চর থেকে সিনিয়র সহকারী জজ (দোহার) আদালতে এসেছেন লুৎফর রহমান। জমিজমা সংক্রান্তে একটি মামলার বিবাদী তিনি। তার মামলার বাদীর নাম সাইদুল। লুৎফর রাহমান কালবেলাকে বলেন, অনেক আগে থেকেই আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। পেশকার বলেছে কোর্ট বেলা ১১টার পর উঠবে। কিন্তু এখনো ওঠেনি। কখন উঠবে সেটাও জানি না। আদালতে বসার কোনো জায়গা নেই, দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। আমাদের সময়ের কোনো মূল্য নেই। এর আগে আমার মামলার চারটি তারিখের একটিতেও শুনানি হয়নি। এত দূর থেকে এসে ফিরে গেছি।
ঢাকার তৃতীয় পারিবারিক আদালতের সামনে এ প্রতিবেদকের কথা হয় শরিয়তপুরের বাসিন্দা রিমা আক্তারের সঙ্গে। তিনি তার স্বামী মিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে করা মামলায় খোরপোষের দাবিতে এ আদালতে ঘুরছেন। রিমা আক্তার বলেন, আমরা শরিয়তপুরের বাসিন্দা হলেও ঢাকায় থাকি। সকাল ৯টা থেকে আমি, আমার বোন ও আমার ১০ বছরের মেয়েকে নিয়ে বারান্দায় বসে আছি। কোর্টে বিচারক উঠেছেন ১১ টায়। আমাদের বলা হয়েছে পরে ডাকা হবে। ৭ বছর ধরে মামলায় বিচারের জন্য আদালতের দ্বারে ঘুরছি। ভোগান্তির তো শেষ নেই।
এদিকে বিচারকের এজলাসে ওঠার নির্ধারিত সময় হচ্ছে সকাল সাড়ে ৯টা। সর্বশেষ গত বছরের ৩০ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আদালতের সময়সূচি সকাল সাড়ে ৯টা হতে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। মাঝে দুপুর দেড়টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিরতি থাকার কথা। আদালতের এ সময়সূচি বেশিরভাগ আদালতেই মানা হচ্ছে না। ঈদের পরে আদালত চালু হওয়ায় এমনটা হয়েছে, তা নয়। আদালতের কর্মঘণ্টায় পূর্ণ ব্যবহার না করার অভিযোগ অনেক পুরোনো। ২০১৭ সালে টিআইবির (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশ) রিপোর্টে বলা হয়, ‘হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক অধস্তন আদালতের বিচারকদের কর্মঘণ্টায় অধিকাংশ সময় এজলাসে থাকার কথা থাকলেও সেই পরিমাণ সময় এজলাসে দেন না। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, অনেক এলাকার আদালতের কার্যক্রম দেরিতে শুরু হয়।’ এদিকে সুপ্রিম কোর্ট থেকে আদালতের কর্মঘণ্টায় পূর্ণ ব্যবহারের জন্য একাধিকার সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক সার্কুলারে বলা হয়, ‘সম্প্রতি অত্র কোর্টের গোচরীভূত হয়েছে যে, কোন কোন জেলায় জেলা জজ/মহানগর দায়রা জজ/চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটগণ এজলাস সময়ে তাদের খাস কামরায় অধীন বিচারকরাসহ আলোচনারত থাকায় এজলাসে বিলম্বে উঠেন। এ ছাড়া কোন কোন বিচারক/ম্যাজিস্ট্রেট নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই এজলাস ত্যাগ করেন। ফলে আদালতের বিচারিক কর্মঘণ্টা পূর্ণ সদ্ব্যবহার হচ্ছে না। এমতাবস্থায় দেশের অধস্তন আদালতের জেলা জজ/মহানগর দায়রা জজ/চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটগণকে নির্ধারিত বিচারিক কর্মঘণ্টায় অধীন বিচারক/ম্যাজিস্ট্রেটগণের সঙ্গে আলোচনা পরিহার করে বিচারিক কর্মঘণ্টার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করার কঠোর নির্দেশ প্রদান করা হলো।’ প্রশাসনিক বা বিচারিক কোনো বিষয়ে অধীন বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে আলোচনার দরকার হলে নির্ধারিত কর্মঘণ্টার পর করতে বলা হয়েছে সার্কুলারে। কিন্তু কর্মঘণ্টায় পূর্ণ ব্যবহারের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।
গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার পর সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের বারান্দায় ও এজলাস কক্ষগুলোর ভেতরে বিচারপ্রার্থীদের গাদাগাদি। তখন পর্যন্ত একটি কোর্টেও বিচারক এজলাসে ওঠেননি। ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ সর্বপ্রথম সকাল সাড়ে ১০টার পর এজলাসে ওঠেন। এ ছাড়া তার অধিন্যস্ত আদালতের বিচারকরা এজলাসে ওঠেন বেলা ১১টার পর। দু-একজন বিচারক ওঠেন দুপুর ১২টার পর। সকাল ১০টা ৫৭ মিনিট পর্যন্ত ঢাকার ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাসে বিচারক উঠতে দেখা যায়নি। বেলা ১১টার পর এ তিন কোর্টের বিচারক এজলাসে ওঠেন। এ ছাড়া পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত বেলা ১১টা ১২ মিনিটে এবং প্রথম ও নবম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেলা ১১টায় এজলাসে ওঠেন। ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ (কেরানীগঞ্জ থানা), সহকারী জজ ধামরাই আদালত এবং ষষ্ঠ সহকারী জজ আদালতের বিচারককে বেলা ১১টার পরও এজলাসে দেখা যায়নি। যুগ্ম জেলা জজ অতিরিক্ত আদালত (সাবেক ষষ্ঠ যুগ্ম জেলা জজ) আদালত এবং সিনিয়র সহকারী জজ দোহার আদালত, সিনিয়র সহকারী জজ প্রথম আদালতের বিচারককেও বেলা ১১টা ৩ মিনিট পর্যন্ত এজলাসে দেখা যায়নি।
সরেজমিন জানা যায়, ঢাকার দ্বিতীয় সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বিচারক বদলিতে। এই কোর্টে তৃতীয় সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে রয়েছেন। তবে বেলা ১১টা বাজলেও দুই কোর্টের দায়িত্বে থাকা এই বিচারক কোনো এজলাসেই ওঠেননি। এ বিষয়ে তৃতীয় সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের পেশকার মো. সোহাগ বলেন, আমাদের কোর্ট সাধারণত সাড়ে ১০টার দিকে ওঠে। স্যার বদলি হয়ে যাওয়ায় আজ উঠতে একটু সময় লাগছে। এখনো এজলাসে ওঠেননি।
এদিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক গতকাল বেলা ১১টার সময় এজলাসে ওঠেন। এদিন বেশি মামলার শুনানি না থাকায় ১২টার আগেই এজলাস থেকে নেমে যান বলে ওই আদালতের পেশকার রাজিব বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ ছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ বিচারক ওঠেন ১১টায়। বিষয়টি জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালটির পেশকার শামসুল আলম। এদিকে আরও দেখা যায়, ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এ দুপুর ১২টা পর্যন্তও বিচারক এজলাসে ওঠেননি। এ আদালতের পেশকার ফারহানা হোসাইন বলেন, আজ শুনানির তেমন মামলা নেই। এজন্য বিচারক এজলাসে ওঠেননি। এ কোর্টের এক অফিস সহকারী বলেন, আমাদের কোর্টে বিচারক সাধারণত বেলা ১১টা বা সাড়ে ১১টার দিকে ওঠেন। এ ছাড়া ঢাকা যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ কোর্ট-৫ এর পেশকার অপু জানান, বিচারক দুদিনের নৈমিত্তিক ছুটিতে আছেন। এদিন কোনো মামলার শুনানি হয়নি। এদিকে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-১৪ এর বিচারক হজের ছুটিতে। পেশকার সাদিয়া আফরিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্যার ছুটিতে। অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-৯ ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আছেন। তবে আজ এখনো (১২টা পর্যন্ত) কোনো শুনানি হয়নি। এদিকে ঢাকা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-৯ আদালতে ১১টা ৪১ মিনিটের দিকে গেলে এজলাসে বিচারক দেখা যায়নি। আদালতটির পেশকার আব্দুল করিম বলেন, বিচারক ১১টার দিকে কোর্টে উঠেছেন। মামলা কম ছিল বলে দ্রুত শুনানি শেষ হয়ে যাওয়ায় নেমে গেছেন। এ ছাড়া যুগ্ম জেলা মহানগর দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারকও হজের ছুটিতে বলে বেঞ্চের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অন্যদিকে সাড়ে ১২টার দিকে যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত-৫ এ গিয়ে জানা যায়, বিচারক অসুস্থতার জন্য আদালতে হাজির হননি। পেশকার শাহ আলম মিয়া বলেন, স্যারের আসার কথা ছিল। আমরা মামলার নথি শুনানির জন্য সব প্রস্তুত করি। পরে শুনি স্যারের ছেলে অসুস্থ, আইসিইউতে। তাই তিনি আসেননি। এসব আদালতে মামলার শুনানির জন্য এসে ফিরে যেতে দেখা গেছে অনেক বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের।
এ চিত্র শুধু ঢাকার আদালতেই নয়। এমনকি ঈদের ছুটির পরে প্রথম দিন খোলার কারণেও নয়। সারা দেশের আদালতগুলো প্রতিনিয়ত এভাবেই ঢিমেতালে চলছে। বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ যেন দেখার কেউ নেই। একদিকে মামলার জট, অন্যদিকে নানা পক্ষের অবহেলায় বিচারের গতি ‘কচ্ছপগতিতে’ পরিণত হচ্ছে। ফলে দিন যতই যাচ্ছে মামলার জট বেড়েই চলছে। বর্তমানে সারা দেশের আদালতগুলোতে ৪৪ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। এই বিপুলসংখ্যক মামলার প্রভাব পড়ছে বিচারকাজে। যতই সময় যায়, বিচারপ্রার্থীর অর্থ ব্যয় ও দুর্ভোগই বাড়ে। অন্যদিকে নষ্ট হতে থাকে মামলার আলামত। এক পর্যায়ে দুর্ভোগে ক্লান্ত হয়ে পড়েন বিচারপ্রার্থী। ঠিকমতো সহযোগিতা পান না তার আইনজীবীরও।
এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আদালতের কর্মঘণ্টার সর্বোত্তম ব্যবহার করা উচিত। নইলে মামলা জট কমবে না। এজন্য আইনজীবীদেরও দায়িত্ব আছে। আইনজীবীকেই তার মক্কেলের স্বার্থ রক্ষা দেখতে হবে। উকিলের উচিত তার মক্কেলের বিষয়টি কোর্টের নজরে আনা। সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিচারকরা ১২টায় এজলাসে উঠলেও তিনি ১২টায় আদালতে আসেন না। সকালেই অফিসে আসেন। আগের অনেক কাজ থাকে, আদেশ লেখার কাজ থাকে। এরপর এজলাসে ওঠেন। দুদিকেই কাজ চলে।’ তিনি বলেন, ‘ঈদের পর প্রথম কর্মদিবস। ঢাকায় লোকজন এসে পৌঁছায়নি। এ ছাড়া শুধু জজ উঠলেই হবে না, উকিল মক্কেল সবাই একসঙ্গে না হলে কোর্টে উঠে লাভ নেই। কারণ মামলা একটার পর একটা শুনানি করতে হবে। একটা হলে তো কোর্ট বসে থাকবে না। কোর্টকে বাস্তবতার নিরিখে দেখতে হবে। নির্দেশনা আছে সাড়ে ৯টার সময় শুরু করার, কিন্তু বাস্তবে এটা সম্ভব নয়।’ কর্মঘণ্টার পূর্ণ ব্যবহার না করার অভিযোগটা পুরোনো উল্লেখ করা হলে রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, ‘কর্মঘণ্টা যাতে বাড়ে সেজন্য সুপ্রিম কোর্ট থেকে নির্দেশনা আছে। প্রত্যেক জেলায় জেলা জজের নেতৃত্বে একটি মনিটরিং কমিটি আছে। তারা কাজ করে যাচ্ছেন।’
এ বিষয়ে ঢাকার বিচারিক আদালতের এ আইনজীবী সিদ্দিক হোসেন বলেন, ‘কোনো আদালতে বিচারকদের সাড়ে ৯টায় উঠতে দেখিনি। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট আগে সাড়ে ১০টায় উঠতো। এখন ১১টায় ওঠেন। মহানগর দায়রা জজ কোর্টেও বেলা ১১টায় বিচারক ওঠেন। একই সময় বিচারক ওঠায় যেসব আইনজীবীদের অনেক মামলা ঝামেলায় পড়তে হয়। আর বিচারপ্রার্থীরা ঠিকই সকাল ৮-৯টার দিকে চলে আসেন। নির্ধারিত অফিস টাইমে বিচারক এজলাসে উঠলে দ্রুত মামলার শুনানি শেষ হয়। বেশি সাক্ষী দিতে পারে। এতে কাউকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় না। এতে মামলার জট কমলে আমরাও দ্রুত মামলার শুনানির তারিখ পাব।’
মন্তব্য করুন