জামালপুরের মাদারগঞ্জ-বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার জামথল সড়ক। সড়কটির কোথাও তৈরি হয়েছে বড় গর্ত, উঠে গেছে পিচ আবার কোনো অংশে সড়ক ধসে গেছে। বর্ষার মৌসুমে গর্তগুলো কাদাপানিতে ডুবে থাকে। গর্তে ভরা সেই সড়ক ধরেই দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন মানুষ।
প্রায় ৮ কিলোমিটারের এ সড়কটি ৫ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লেও সংস্কারে উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে দুই উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ৮ কিলোমিটার সড়কজুড়েই ছোটবড় গর্ত। এতে বৃষ্টি হলেই জমে যায় পানি। পানির কারণে গর্ত দেখতে না পারায় প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের যানবাহন দুর্ঘটনায় পড়ছে। কোনো অংশে আবার সড়ক ধসে গেছে। কোনো অংশে উঠে গেছে পিচ। ঝুঁকি নিয়েই বিভিন্ন যানবাহন চালাচ্ছেন চালকরা। জরুরি রোগী হাসপাতালে নিতে বিপাকে পড়েন মানুষজন। ভাঙা অংশগুলোতে গাড়ি চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন চালকরা। এতে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কে চলাচলকারীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন চালকরা।
অটোরিকশা চালক মো. মনির বলেন, বহু বছর ধরে আমাদের এ সড়কটির সমস্যা। অথচ সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির সংস্কার না করে অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন করেছে।
চাঁদপুর এলাকার বাসিন্দা ও সাবেক কাউন্সিলর খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেল বলেন, আমাদের এ সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। সড়কটির কোনো উন্নয়ন বা সংস্কার নেই। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার ছোট-বড় গর্তে পানি জমে থাকে। বৃষ্টি না থাকলে পুরো সড়ক ধুলার রাজ্যে পরিণত হয়।
তিনি আরও বলেন, সড়কটির ৮ কিলোমিটার জুড়েই অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। এ সড়ক দিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে চলাফেরা করছেন লোকজন।
জামথল টেকনিক্যাল কলেজের প্রভাষক রুহুল আমিন বলেন, চাকরির জন্য প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। রাস্তাটির পুরো অংশজুড়েই ছোট-বড় গর্তে ভরা। মোটরসাইকেল চালাতে হয় খুবই সাবধানে। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ বাড়ে।
জামথল এলাকার বাসিন্দা ও কাজলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এ এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সারিয়াকান্দির নদীর এ পারে বাস করি। এ পারে তিনটি ইউনিয়ন। শুধু অফিসিয়াল কাজে আমাদের সারিয়াকান্দি ও বগুড়া যেতে হয়। এ ছাড়া সকল প্রয়োজনে আমরা মাদারগঞ্জ ও জামালপুর যাই। ফলে জামথল-মাদারগঞ্জ আমাদের নিয়মিত ব্যবহার করতে হয়। সড়কটির অবস্থা খুবই নাজেহাল। প্রায় ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা থাকলেও সংস্কারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে না।
জামালপুরের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নওয়াজিস রহমান বিশ্বাস বলেন, মাদারগঞ্জ-জামথল সড়কটি প্রশস্ত ও সংস্কারের জন্য আমরা একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। সেই প্রকল্পের আওতায় আমরা সড়কটি ২৪ ফুট প্রশস্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। সড়ক ২৪ ফুট প্রশস্ত হবে নাকি ১৮ ফুট সেটি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে পর্যালোচনা চলছে। আশা করি দ্রুতই বাস্তবায়ন করতে পারব।
মন্তব্য করুন