বরিশালের উজিরপুরের শোলক ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রায় এক বছর আগে ধামুরা বাজার-সংলগ্ন খালের ওপর নির্মাণ করা হয় ধামুরা ব্রিজ। সেতু নির্মাণে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয় হলেও তা কোনো কাজে আসছে না স্থানীয়দের।
সেতু নির্মাণের পর পার হয়েছে দীর্ঘ সময়, এরপরও শেষ হয়নি সম্পূর্ণ কাজ। এমনকি সেতুর দুই প্রান্তে তৈরি করা হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে সাঁকো বা মইয়ের সাহায্যে সেতুতে উঠে খাল পারাপার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, শোলক ইউনিয়নের ধামুরা বাজার-সংলগ্ন এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। কিন্তু নানা জটিলতায় এখনো এর কাজ সম্পন্ন হয়নি। এ ব্রিজ দিয়ে ধামুরা বাজার, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ধামুরা ডিগ্রি কলেজসহ, হারতা, শাতলা, জল্লা, ওটরা ইউনিয়নের প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। অথচ এ সেতুর দুই প্রান্তের সংযোগ সড়কের মাটি ভরাট কাজ অসমাপ্ত থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সবাইকে।
ধামুরা বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন বলেন, সেতু নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না হওয়ায় খালের উভয় পাশের মানুষ মই দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার হচ্ছেন।
বাজারের এক ব্যবসায়ী কুদ্দুস ফকির জানান, সেতুতে উঠতে গিয়ে একাধিকবার দুর্ঘটনায় পড়তে হয়েছে। সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে কয়েকজন আহতও হয়েছেন। আরেক ব্যবসায়ী জসিম খলিফা বলেন, ব্রিজটির সংযোগ কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতিনিয়ত এখানে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। খালের ওপারে ক্লিনিক থাকায় জরুরি রোগী পারাপারেও অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ছান্টু মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ব্রিজের দুই প্রান্তে কাঠের সাঁকো সংযুক্ত করে কোনোরকমে চলাচলের ব্যবস্থা করে হয়েছে। তবে জনস্বার্থে সংযোগ সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
শোলক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডা.আব্দুল হালিম বলেন, সেতু নিয়ে জনদুর্ভোগের বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা পর্যায়ের সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। কোনো কাজ হচ্ছে না। ঠিকাদার এক দিন কাজ করে তিন মাস কাজ করে না।
এদিকে এ বিষয়ে প্রকল্পের ঠিকাদার মেসার্স আমির কনস্ট্রাকশনের আমির হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে উপজেলা প্রকৌশলী সুব্রত রায় বলেন, কাজটি ফেলে রাখায় আমরাও বিপাকে আছি। এলাকার লোকজন ভোগান্তিতে পড়ছেন। ঠিকাদারকে আমরা একাধিকবার বলেছি। কিন্তু তাদের কোনো সাড়া নেই।
মন্তব্য করুন