ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ভোটের শেষ মুহূর্তে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে তিনি হামলার মুখে পড়েন। তাকে রাজধানীর রামপুরায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হিরো আলমের ওপর ওই হামলার ঘণ্টাখানেক আগেই ওই কেন্দ্রে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। হিরো আলমের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো. ইলিয়াস দাবি করছেন, ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা এ হামলায় জড়িত। এদিকে সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক লিখিত
বক্তব্যে বলা হয়, ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণের শেষে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল ভোটকেন্দ্রের সামনে একদল যুবক অতর্কিতে প্রার্থী আলমের ওপর হামলা চালায়। ঘটনাটি পুরোপুরি ভোটকেন্দ্রের বাইরে ঘটে এবং এতে কেন্দ্রের ভেতরে ভোটগ্রহণে কোনো সমস্যা হয়নি। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দ্রুত জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করে। জড়িত বাকিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ঢোকার আগে স্কুলের মাঠে কয়েকজন হিরো আলমের সঙ্গে সেলফি তোলেন। তখন হামলাকারীদের কয়েকজন এসে তাকে ঘিরে ধরেন। এক পর্যায়ে তারা বলতে থাকেন, ‘এটা টিকটক ভিডিও বানানোর জায়গা না।’ এরপরই হামলাকারীরা ধাওয়া শুরু করেন। তখন কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা হিরো আলমকে ঘিরে ধরে স্কুলের গেটের দিকে নিয়ে যান। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাতে দেখা যায়, হিরো আলম স্কুল থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ সদস্যরা কেন্দ্রে ফিরে যায়। ওই সুযোগে ধাওয়াকারীরা হিরো আলমকে ধাক্কা দিয়ে সড়কের ওপর ফেলে দেন। এরপর চলে তার ওপর লাথি, কিলঘুসি ও ধস্তাধস্তি। তখন সেখানে কয়েকজনকে নৌকার ব্যাজ পরা অবস্থাতেও দেখা যায়। হামলাকারীদের কয়েকজনের হাতে লাঠিসোঁটাও ছিল। মারধরের মুখে দৌড়ে পালান হিরো আলম। ওই হামলার বিষয়ে বনানী থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন, বিকেল সোয়া ৩টার দিকে বনানীর বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে কিছু ইউটিউবার নিয়ে ঢোকেন হিরো আলম। সেখানে বাধা পেয়ে তিনি কেন্দ্রের বাইরে এলে সেখানকার লোকজনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বহিরাগতরা তাকে ধাওয়া করে। অবশ্য ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, যারা নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করেছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান বলেন, ‘ভোট শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রের বাইরে রাস্তার ওপরে হামলার খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা কী ঘটেছে, তা জানতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খতিয়ে দেখে পরবর্তী করণীয় জানানো সম্ভব হবে।’
মন্তব্য করুন