সব রকম শঙ্কা কাটিয়ে ভারসাম্যমূলক কূটনীতিতে সাফল্য দেখিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তৈরি হওয়া দূরত্বের অবসান ঘটিয়ে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নবযাত্রা। নেতিবাচক মনোভাব কাটিয়ে বর্তমানে সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং স্থায়ী করতে মনোযোগী যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। রাজনীতির চেয়ে এখন অর্থনৈতিক সম্পর্কের প্রতি জোর দিচ্ছে তারা। ঢাকায় এসে এমনটাই জানিয়ে গেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও একই আগ্রহের কথা জানানো হয়েছে। নির্বাচন-পূর্ব পরিস্থিতি ভুলে উভয় পক্ষই এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছে। এর ভিত্তি হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্যকেই প্রাধান্য দিচ্ছে তারা। পাশাপাশি চীন, রাশিয়া, ভারত ও জাপানের মতো দেশগুলোর সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে বাংলাদেশ। সরকারের প্রতি এসব দেশের নির্বাচন-পূর্ব সমর্থন আরও জোরালো হয়েছে। বিষয়টিকে কূটনৈতিক ভারসাম্যে সরকারের সাফল্যের বড় বার্তা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে এক বছর ধরে বাংলাদেশকে চাপে রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা। এই ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে তাদের খানিকটা দূরত্ব তৈরি হয়। তবে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ চীন, রাশিয়া ও ভারত বর্তমান সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখে। সব রকম সংশয় কাটিয়ে অনেকটা নির্বিঘ্নেই অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। নতুন মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পরও শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখে চীন, ভারত ও রাশিয়া।
অন্যদিকে ভোটের পর পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগী হয় সরকার। প্রাথমিকভাবে নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতিবাচক মন্তব্য করলেও শেষ পর্যন্ত অবস্থানের পরিবর্তন করে তারা। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়ে লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশ সফরেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই বার্তার প্রতিফলন ঘটেছে। ফলে সরকার এখন কূটনীতিকভাবে এক রকম ‘কমফোর্ট জোনে’ রয়েছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। বিষয়টি নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকরাও বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক বিশেষ করে নির্বাচনের আগে ছিল, তখন অনেকের মধ্যে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছিল যে, সেটি কোনদিকে যায়? এটি আরও নেতিবাচক দিকে যায় কি না। কিন্তু ডোনাল্ড লু নিজেই বলে গেছেন যে, তারা দুদেশের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান এবং সামনে এগোতে চান। এটি কিন্তু কোনো কূটনৈতিক বিশ্লেষককে বলতে হয়নি। তাই আমি এটিকে বাংলাদেশের কূটনৈতিক
ভারসাম্য রক্ষার সাফল্যের প্রতিফলনই বলব।’
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এখন এটা বুঝতে পেরেছে—এমন কোনো অবস্থা তৈরি হয়নি যে, বাংলাদেশ চীনের দিকে ঝুঁকে গেছে। এই যে পোলারাইজড না হওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ বোঝাতে পেরেছে, এটি কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক বড় সফলতা।’
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশ সরব অবস্থানে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনের আগে দফায় দফায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিদের বাংলাদেশ নিয়ে তৎপর থাকতে দেখা গেছে। বিশেষ করে নির্বাচন সামনে রেখে ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশ সফর এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দৌড়ঝাঁপ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিএনপি নেতারাও ইউরোপ-আমেরিকার কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রায়ই আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগে সংলাপের তাগিদ দিয়ে ডোনাল্ড লু বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে চিঠিও দেন। গত বছর দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন এই কর্তার কয়েক দফা ঢাকা সফর রাজনীতি ও কূটনীতিতে আলোচনার শীর্ষে ছিল। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ইস্যুতেও আলোচনায় ছিল লুর নাম; যা নিয়ে রাজনীতিতে ব্যাপক হৈচৈ শুরু হয়। কারা কারা ভিসা নীতির আওতায় আসছেন, তা নিয়ে চলে নানা গুঞ্জন।
তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আরেকবার সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ভোট শেষে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ওয়াশিংটন জানায়, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। পরবর্তী সময়ে ভোট নিয়ে একাধিকবার নিজেদের অনড় অবস্থানের জানান দিলেও বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বলে জানান ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রও বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলনে একই বার্তা দেন। তবে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠিতে। এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তার সরকার।’
এদিকে নির্বাচনের ৫ মাস পর ডোনাল্ড লুর আরেক দফা ঢাকা সফর ঘিরে রাজনীতিতে নতুন করে গুঞ্জনের ডালপালা মেলে। নির্বাচনের পর মার্কিন সরকারের কোন বার্তা নিয়ে লু ঢাকা আসছেন, তা নিয়েই কৌতূহলী ছিলেন অনেকেই। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে বাহাস চলে বেশ কয়েকদিন। এই সফর নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও নানা আলোচনা ও বিতর্ক চলছিল। হিসাব-নিকাশ কষছিল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলও। মার্কিন সরকারের এ প্রতিনিধির সফরকালে বাংলাদেশ কী পাবে, সরকার কতটুকু আদায় করতে পারবে, যুক্তরাষ্ট্র কী
দেনদরবার করবে অথবা দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় কোন কোন বিষয় উঠে আসবে, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছিল।
রাজনীতি সংশ্লিষ্ট অনেকের মনেই প্রশ্ন ছিল, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে যেই লু বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সংলাপে বসার জন্য চিঠি দিয়েছেন, নির্বাচনের পর সেই লু কি শুধুই নির্দিষ্ট এজেন্ডার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন? নাকি নতুন করে আবারও রাজনৈতিক বিষয় সামনে আনবেন? বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যেও এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। যদিও লুর এবারের সফরের আগে বিএনপি নেতারা বলেছিলেন, বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে আন্দোলন করে না তাদের দল। সেজন্য গণতন্ত্র রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। সেজন্য লুর সফর নিয়ে অনাগ্রহের কথাও জানান দলটির নীতিনির্ধারকরা। কারণ বিএনপি নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রেখেছিল। কিন্তু সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার, নির্বাচন ও ক্ষমতা পরিবর্তনের ব্যাপারে বিএনপিকে সেভাবে সহযোগিতা করতে পারেনি তারা। সেজন্য তাদের উভয়ের মধ্যে বর্তমানে আস্থার সংকটও দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলেছিল, ডোনাল্ড লু তাদের প্রয়োজনেই বাংলাদেশে এসেছেন, তাদের এজেন্ডা আছে। আর সেটি হচ্ছে সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন করা।
দুদিনের ব্যস্ত সফর শেষ করে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকা ছেড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
জানা গেছে, ঢাকায় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে ডোনাল্ড লু ব্যবসা-বাণিজ্য, শ্রম অধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ইস্যু, প্রতিরক্ষাসহ নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনা করেন। এ ছাড়া গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করেছেন তিনি। র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চান লু।
তবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন করে আস্থা তৈরি করতেই বাংলাদেশ সফরে এসেছেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠকের পর জানিয়েছেন ডোনাল্ড লু।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে আস্থার জায়গা পুনর্নির্মাণ করতে চাই। একই সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চাই। নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে চাই।’
ডোনাল্ড লুর এমন বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক অবস্থান ফুটে উঠেছে। এতে স্পষ্ট যে, বিগত নির্বাচন নিয়ে তাদের আর কোনো কথা নেই। তারা ভবিষ্যৎ নিয়েই ভাবছে। তারা এখন সম্পর্কের উন্নয়ন চায়। আর সে সম্পর্কের মূল ভিত্তিই হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। উভয়পক্ষই অর্থনৈতিক সম্পর্ককে প্রাধান্য দিচ্ছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ কালবেলাকে বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, সরকার এমন পররাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাসী। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নীতিতে অবিচল রয়েছেন। বিএনপিসহ দেশবিরোধী একটি মহল নির্বাচন কেন্দ্র করে নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু সরকারের দক্ষ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণে তারা সফল হয়নি। পুরো বিশ্ব শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অধীর হয়ে আছে। ডোনাল্ড লুর সফর ও বক্তব্যে সেটি স্পষ্ট হয়েছে। এতে দেশবিরোধী চক্র নতুন করে হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছে।’
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, সেহেতু বাংলাদেশও এ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়। অন্যদিকে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গেও চলমান উষ্ণ সম্পর্ক ধরে রাখতে চায় সরকার। তার অংশ হিসেবে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন সফরের ঘোষণা দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে আগামী মাসেই ভারত ও পরের মাস জুলাইয়ে তার চীন সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পশ্চিমা এবং এশিয়ার শক্তিশালী দেশগুলোর সঙ্গে ভারসাম্যমূলক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা এক অর্থে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে পেরেছি এবং ভারসাম্যটা বজায় রাখছি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমরা এটিকে ইতিবাচকভাবে ম্যানেজ করতে পারছি। তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা জাতির চাহিদার পরিবর্তন ঘটতে থাকে। আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্ট্যাটাসে পৌঁছাব। সেখানে পৌঁছাতে গেলে আমাদের অনেক অভ্যন্তরীণ প্রয়োজন তৈরি হবে এবং একই সঙ্গে বাইরের বন্ধুদেরও আমাদের প্রয়োজন হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক যত সামনের দিকে যাবে, গতিশীল হবে, ততই কিন্তু এ ভারসাম্যের চরিত্র বদলাবে। দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হলে অনেক বিদেশি বিনিয়োগ লাগবে। আমাদের প্রয়োজনই আমাদের বলে দিচ্ছে কোথায় থাকতে হবে, কার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আমরা যে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করছি সেটি যদি অর্থপূর্ণ ও গতিশীল রাখতে চাই, সেক্ষেত্রে এ ভারসাম্যের মধ্যেই কিছু সম্পর্ককে প্রাধান্য দিতে হবে। সম্পর্ক হবে কারও সঙ্গে বেশি গভীর, কারও সঙ্গে একটু কম গভীর।’