বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও বিদেশে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে এমন দাবি জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার রাতে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, এবার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বারবার অনুরোধ করেছেন এবং তারা লিখিতভাবে বলেছেন, ম্যাডামের ক্রনিক লিভার ডিজিজের উন্নততর চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যত দ্রুত সম্ভব নিয়ে যাওয়ার জন্য। বিশেষ করে উনাকে টিপসের সুবিধা-সংবলিত অ্যাডভান্স সেন্টারে অর্থাৎ লিভারের চিকিৎসা হয়, এমন সুবিধা-সংবলিত আধুনিক চিকিৎসা সেন্টারে নেওয়ার সুপারিশ করেছেন। পাঁচ দিন বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে শনিবার রাত ৭টা ৫০ মিনিটে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ ফেরেন খালেদা জিয়া। এখন ফিরোজায় থেকে তার চিকিৎসা চলবে।
হঠাৎ জ্বর ও পেটব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৩ জুন রাত দেড়টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। সেখানে অধ্যাপক ডা. সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলে। সাংবাদিকদের ডা. জাহিদ বলেন, আজও (শনিবার) সকালে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তাতে দেখা যায়, ১৩ জুন থেকে যে সমস্যা ছিল, তা কিছুটা কমেছে। অপেক্ষাকৃত কিছুটা সুস্থবোধ করেছেন। সে কারণেই উনাকে বাসায় রেখে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আগের মতো যে চিকিৎসা চলছিল, তা অব্যাহত রাখা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের হাসপাতালে ঘন ঘন চিকিৎসা নেওয়ায় এটাই বোঝায় যে, উনার সঠিক ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা আমরা দিতে পারছি না।
এ কারণেই তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল হচ্ছেন এবং অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। এজন্য দ্রুত উনাকে সুচিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই চিকিৎসক বলেন, খালেদা জিয়া লিভার রোগে ভুগছেন, যাকে ‘ডিকমপেনসেটেড লিভার ডিজিজ’ বলা হয়। এ ছাড়া তার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম, ডায়াবেটিস এবং দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ রয়েছে। তার আর্থ্রাইটিস ও উচ্চরক্তচাপ রয়েছে। হার্টে চারটি ব্লক রয়েছে। এর মধ্যে দুটির মাত্র পিসিআই করা হয়েছে, যাকে অনেকে স্টেন্টিং বলে। এখনো আরও দুটি ব্লক আছে। এতেও পিসিআই করার প্রয়োজনীয়তা আছে।
সর্বশেষ গত ২৯ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। সেবারও পাঁচ দিন হাসপাতালে থেকে বাসায় ফেরেন তিনি।
মন্তব্য করুন