

বাজারে মাসখানেক ধরেই চালের দাম উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে। পাইকারি বাজারে কোনো চাল ৫৮ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা বাজারে ক্রেতাদের চাল কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া ধাপে ধাপে বেড়েই চলছে পেঁয়াজের দাম। দীর্ঘদিন ৮০ টাকার নিচে পাওয়া গেলেও এখন ক্রেতাদের কেজিপ্রতি ১২০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারিতে প্রতি কেজি পাইজাম ও আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়, মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮০ টাকায়। আর খুচরা বাজারে এসব চাল ক্রেতাদের অন্তত ৫ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
চাটখিল রাইস এজেন্সির বিক্রেতা বেলাল হোসেন বলেন, ‘এখন চালের দাম আগের মতোই আছে। দেড়-দুই মাস আগে বস্তাপ্রতি কিছুটা বেড়েছিল। এখনো সে দামেই আছে।’
পেঁয়াজের দামও ক্রমাগত বাড়ছে। দীর্ঘদিন ৮০ টাকার নিচে পাওয়া গেলেও এখন ক্রেতাদের কেজিপ্রতি ১২০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। পেঁয়াজ বিক্রেতা আল আমিন বলেন, ‘সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। সামনে আরও বাড়তে পারে, তাই আমদানি প্রয়োজন।’
পেঁয়াজ কিনতে এসে দাম শুনে হতবাক হন ক্রেতা হোসেন আলী। তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম বাড়লেও ৮০ থেকে ৯০ টাকা হওয়া স্বাভাবিক। এত দ্রুত ১২০ টাকা হয়ে গেল, বুঝতেই পারছি না।’
কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে মিললেও পাড়া-মহল্লায় ক্রেতাদের ১৩০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। তবে কম দামেই মিলছে আলু, প্রতি কেজি ২০ টাকায়। আদা ও রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায় এবং দেশি রসুন ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। থাইল্যান্ডের আদা ২০০ টাকা এবং চায়না আদা ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছ ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও সপ্তাহখানেক আগে এসব মাছ ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে পাওয়া যেত। এক কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়, আর দেড় কেজির রুই ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায়। মাছ বিক্রেতা মো. সেলিম বলেন, ‘এ সপ্তাহে কিছু মাছের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।’
বাজারে পটোল, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ও ঢ্যাঁড়শ প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ৩০ টাকায়, যদিও সপ্তাহখানেক আগে আরও ৫ টাকা বেশি ছিল। তবে দুই সপ্তাহ আগে প্রতিটি ৫০ টাকায় কিনতে হয়েছে ক্রেতাদের।
সপ্তাহ তিনেক আগে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া লম্বা বেগুন গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। সবুজ গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। তাল বেগুনের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকা কেজিতে পৌঁছেছে।
বরবটির দাম ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। লাউয়ের দামও ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে।
উচ্ছের দাম ১০ টাকা কমে এখন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কচুরলতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, যদিও মাসখানেক আগে কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি ডজন ডিম ১৩০ টাকা, হালি লাল ডিম ৪৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা এবং হাইব্রিড সোনালি ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগেও মুরগির দাম একই ছিল।
গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মন্তব্য করুন