কিশোরগঞ্জের ভৈরবের লুন্দিয়া গ্রামের বিবাদের জেরে সৌদি আরবে অবস্থানরত প্রবাসীদের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে লুন্দিয়া গ্রামের পাগলা বাড়ির রইছ মিয়া ও শেখ বাড়ির আনু মিয়া নামে দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাতে দেশটির রাজধানী রিয়াদের একটি মূল সড়কে দুপক্ষের দুই শতাধিক প্রবাসীর মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে তারা পালিয়ে যান। এ সময় শেখ বাড়ির পক্ষের দুজনকে আটক করা হয়।
জানা গেছে, লুন্দিয়া গ্রামের পাগলা বাড়ির সোলাইমান ৯ বছর পর দেশে ফিরে শুক্রবার বিকেলে তার বাবার কবর জিয়ারত করতে যান। সঙ্গে ছিলেন একই বাড়ির আবুল কাশেম। সেখান থেকে ফেরার পথে পূর্বশত্রুতার জেরে শেখ বাড়ির কামাল ও উজ্জ্বল তাদের পথ রোধ করে হামলা করেন। এ সময় কাশেম গুরুতর আহত হন। এ ঘটনা জানাজানি হলে রিয়াদে অবস্থানরত ওই গ্রামের প্রবাসীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দুপক্ষের দুই শতাধিক প্রবাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে পাগলা বাড়ির পক্ষের নেতৃত্ব দেন বাবু মিয়া, সালাম মিয়া ও খোকন মিয়া এবং শেখ বাড়ির পক্ষে নেতৃত্ব দেন রহমত আলী ও আবুল কালাম।
সূত্র বলছে, লুন্দিয়া গ্রামের তিন শতাধিক লোক সৌদি প্রবাসী। এর মধ্যে দুই শতাধিক লোকের অবস্থান রিয়াদে। তাদের অধিকাংশই পাগলা বাড়ি ও শেখ বাড়ি বংশের। ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল আধিপত্য নিয়ে পাগলা বাড়ি ও শেখ বাড়ির মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। সে সময় ভৈরব থানায় দুটি মামলা হয়। আসামি করা হয় পাগলা বাড়িসহ আশপাশের বিভিন্ন বংশের লোকদের। মামলাগুলো বর্তমানে পিআইবির কাছে তদন্তাধীন এবং দুই মামলার ২০৫ আসামি জামিনে রয়েছেন। সেই সংঘর্ষে নিহতের বড় ভাই উজ্জ্বল ও খালেক দলবল নিয়ে শুক্রবার প্রতিপক্ষের সোলাইমান এবং কাশেমকে পেয়ে হামলা করেন। এর জেরে রিয়াদ শহরে অবস্থানরত লুন্দিয়া গ্রামের প্রবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
পাগলা বাড়ির বংশের নেতৃত্বে থাকা হাজি আব্দুল মজিদ বড় মিয়া বলেন, গ্রামে যাতে আর কোনো সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটে, এর জন্য আমি প্রতিপক্ষসহ সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।
শেখ বাড়ির নেতৃত্বে থাকা মোমেন শিকদার জানান, গ্রামে শুক্রবারও যে ঘটনা ঘটেছে তা আমরা বসে এরই মধ্যে (শনিবার দুপুরে) মীমাংসা করেছি। আর সৌদি আরবের রিয়াদে যা ঘটেছে, তাদের বলে দিয়েছি মীমাংসা করতে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাকছুদুল আলম বলেন, বিদেশে যে ঘটনাই ঘটুক লুন্দিয়া গ্রামের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
মন্তব্য করুন