জাতীয় পার্টির (জেপি) কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক আব্দুস সালাম মিয়া হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নেমেছে পুলিশ। এরই মধ্যে সন্দেহভাজন হিসেবে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, ব্যক্তিগত কোনো আক্রোশের কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে যেহেতু তিনি একটি রাজনৈতিক দলের নেতা এবং ঠিকাদারির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাই রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক কারণও মাথায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে। গতকাল সোমবার পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গেটের সামনে মূল সড়কে থামে একটি প্রাইভেটকার। ওই গাড়ি থেকে নামেন এক তরুণ ও তরুণী। তারা গাড়ি থেকে এক ব্যক্তির নিথর দেহ টেনে বের করে ফেলে রেখে দ্রুতই চলে যান। কিছুক্ষণ পড়ে থাকার পর দেহটি ফুটপাতের দোকানিরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। শুরুতে পরিচয় না মিললেও গভীর রাতে জানা যায়, নিহত ব্যক্তি জেপি কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক আব্দুস সালাম মিয়া। পাশাপাশি তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন ঠিকাদার ছিলেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার রুবাইয়াত জামান কালবেলাকে জানান, আব্দুস সালাম মিয়া হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েকজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পারিবারিক, রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক বিষয়গুলো মাথায় নিয়েই এ হত্যা মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত সালামের ছোট ভাই থানায় মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
সালামের ছোট ভাই আবদুল করিম খলিফা কালবেলাকে জানান, তার ভাইয়ের শরীরজুড়ে পেটানোর চিহ্ন রয়েছে। মনে হয়েছে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙেছে। তা ছাড়া দুই পায়ের আঘাত দেখে মনে হচ্ছে, খুনিরা ড্রিল মেশিন দিয়ে তার দুই পা ছিদ্র করে নির্যাতনের পর হত্যা করেছে। এই ঘটনায় দ্রুত খুনিদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, যেহেতু লাশ গাড়ি থেকে নামিয়ে ফুটপাতে রাখা হয়েছে, তাই ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলেই হত্যাকারী কারা তা খুঁজে বের করা যাবে। গাড়িটা কার সেটা নম্বর পেলেই জানা যাবে।
এদিকে হাসপাতাল সূত্র জানায়, সালামকে যখন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়, তখন তার দুই পায়ে ব্যান্ডেজ মোড়ানো ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, জেপির ওই নেতাকে নির্যাতনের পর হয়তো কোথাও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। এরপর হাসপাতালে নেওয়ার পথে গাড়িতে মারা যাওয়ার পর ধরা পড়ার ভয়ে লাশটি রাস্তাতেই ফেলে দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন