কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৩, ০২:৩৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স কী ও কেন

ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স কী ও কেন

যাদের ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা আছে তারা দুধে থাকা চিনি (ল্যাকটোজ) হজম করতে পারে না। এতে করে দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া বা পান করার পরে পেট খারাপ, গ্যাস এবং ফোলাভাব হয়। এ অবস্থাকে ল্যাকটোজ ম্যাল-অ্যাবজর্বশনও বলা হয়। এটি মারাত্মক রোগ না হলেও লক্ষণগুলো অস্বস্তিকর। জানাচ্ছেন ডা. আবীর হাসান-

আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রে ল্যাকটেজ নামের একটি এনজাইমের কম উপস্থিতির কারণে ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা দেখা দেয়।

লক্ষণ

ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতার লক্ষণ সাধারণত ল্যাকটোজযুক্ত খাবার খাওয়ার আধা ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টা পর দেখা দেয়। উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে—ডায়রিয়া, বমি ভাব, বমি, পেটে ব্যথা, ফোলাভাব ও গ্যাস।

কেন হয়?

ল্যাকটেজ নামের এনজাইমটি দুধের ল্যাকটোজকে দুটো সাধারণ চিনিতে রূপান্তর করে। একটি হলো গ্লুকোজ, আরেকটি গ্যালাকটোজ। এ চিনি জাতীয় উপকরণ দুটি অন্ত্রের দেয়ালের মাধ্যমে রক্তের সঙ্গে মেশে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যায়।

ল্যাকটেজ কম থাকলে তখন তা ল্যাকটোজ ভাঙতে পারে না। এতে ওই ল্যাকটোজ শোষিতও হয় না। রয়ে যায় কোলনে। তখন ল্যাকটোজের সঙ্গে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শ ঘটলেই দেখা দেয় লক্ষণগুলো।

এ ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স দুই ধরনের—প্রাইমারি, সেকেন্ডারি ও কনজেনিটাল। প্রাইমারি ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের বেলায় ল্যাকটেজের পরিমাণ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হুট করে বেশি পরিমাণে কমে যায়। তখন দুগ্ধজাতীয় খাবার হজম করা সম্ভব হয় না। আর কোনো অসুখ, অস্ত্রোপচার বা আঘাতজনিত কারণে যদি ল্যাকটেজ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় সেটা হলো সেকেন্ডারি। সেকেন্ডারি ইনটলারেন্সের সমস্যা থাকলে রোগীর অন্ত্রে সংক্রমণ, ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এসব সমস্যা দেখা দেয়।

কনজেনিটাল ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স বেশ বিরল। এতে শিশু কম ল্যাকটেজ নিয়ে জন্মায়। এটা পুরোপুরি বংশগত।

ঝুঁকি

সাধারণত বয়সের সঙ্গে এ সমস্যা বাড়ে। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি খুব একটা দেখা যায় না।

অপরিণত শিশুর জন্ম হলেও এ সমস্যা থাকতে পারে।

ক্ষুদ্রান্ত্রে সিলিয়াক ডিজিজ বা ব্যাকটেরিয়ার কারণেও ল্যাকটেজ উৎপাদন বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে।

কিছু কিছু ক্যান্সার ট্রিটমেন্টও ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স ঘটায়। বিশেষ করে পাকস্থলীতে রেডিয়েশন থেরাপি নিলে এ সমস্যা দেখা দেয়।

কী খাবেন কী খাবেন না

ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকলে কিছু কিছু খাবার বাদ দিলে সুস্থ থাকা সম্ভব। যেমন—দুধ, দুগ্ধজাত খাবার, কফি, কোল্ড ড্রিঙ্কস, মিল্ক ব্রেড, প্যানকেক, আইসক্রিম, পুডিং, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ, মার্জারিন, সালাদ ড্রেসিং ইত্যাদি।

অন্যদিকে খেতে পারবে ল্যাকটোজ ফ্রি মিল্ক, সয়া দুধ, কাঠবাদামের দুধ, ফলের রস ও ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার।

কারও শরীরে অল্প ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স দেখা দিলে তার যতটুকু দুধ খাওয়ার কথা, তার অর্ধেক পরিমাণ খেতে হবে। তবে তাকে দুধের সঙ্গে কিছু না কিছু যেমন—রুটি, বিস্কুট, সাধারণ পাউরুটি, চিড়া ইত্যাদি খেতে হবে।

শিশুদের সয়া দুধের সঙ্গে গ্লুকোজ মিশিয়ে দিলে সেটা হজম হয়। অনেক সময় দুধের সঙ্গে কোকো পাউডার মেশালেও ল্যাকটোজ ভাঙে। ফলে আর অসুবিধা হয় না।

দই হজমের সহায়ক। এতে উপকারী ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে। শিশুদের তাদের বৃদ্ধির জন্য দুধের চর্বি যেমন—ক্রিম, মাখন এসব খাওয়ানো যায়।

লেখক : রেসিডেন্ট চিকিৎসক, বিএসএমএমইউ

তথ্যসূত্র : মায়োক্লিনিক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বজ্রপাতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু

দুই বাংলাদেশি যুবককে ফেরত দিল বিএসএফ

বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী জনগণের পাশে রয়েছে : নীরব

শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা আজ

ছক্কার ঝড় তুলে ম্যাচসেরা সাইফের মুখে আত্মবিশ্বাসের কথা

আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করে তৃপ্ত জাকের

আবারও ভারতের কাছে কুপোকাত পাকিস্তান

সাবেক যুবদল নেতার উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার 

আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা

কাশিয়ানীতে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

১০

দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চান মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীরা

১১

নির্বাচনের জন্য দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি : লায়ন ফারুক 

১২

সাইফ ঝড়ে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

১৩

আফগানদের বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

১৪

বৃষ্টিসহ আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

১৫

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ও কার্টিন ইউনিভার্সিটির চুক্তি স্বাক্ষর

১৬

স্মার্ট কার্ডের সংকট কাটাতে আসছে ‘ব্ল্যাংক কার্ড’

১৭

সেই বিয়ের কথা স্বীকার করলেন পরীমনি

১৮

দুর্গোৎসবে টাইমস স্কয়ারে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আবহ

১৯

‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ২০০৯’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি

২০
X