পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে চট্টগ্রামে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম মিলাদ আয়োজন—৫৪তম জশনে জুলুস। আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে আয়োজিত এ মহাসমাবেশে কোটি মুসল্লির ঢল নামবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বছরের মতো এবারও জশনে জুলুসের নেতৃত্ব দেবেন দরবারে সিরিকোটের সাজ্জাদানশীন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মা.জি.আ)। বড় ভাই সৈয়দ মুহাম্মদ তাহির শাহ (মা.জি.আ.) বয়সজনিত অসুস্থতার কারণে চট্টগ্রামে আসতে না পারায় ২০২৪ সাল থেকেই জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তবে এবার তার সঙ্গে আছেন সৈয়দ মুহাম্মদ তাহির শাহর (মা.জি.আ.) সন্তান সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ ও সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহর (মা.জি.আ) সন্তান সৈয়দ মেহমুদ আহমদ শাহ। গতকাল জুমার নামাজ শেষে মুরাদপুরস্থ জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার মাঠে লাখো মুসল্লির উপস্থিতিতে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ। এর আগে সকাল থেকেই চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও ফটিকছড়ি, রাউজান, হাটহাজারী, পটিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, সন্দ্বীপসহ নানা উপজেলা থেকে মুসল্লিরা জামিয়ার মাঠে আসেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লির ঢলে মুরাদপুর ও আশপাশের সড়কগুলো পরিণত হয় মহামিলনমেলায়।
জুমার নামাজেও ইমামতি করেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মা.জি.আ.)। নামাজ শেষে লাখো মুসল্লি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, ভ্রাতৃত্ব, দেশের অগ্রগতি ও মানবতার মুক্তির জন্য একসঙ্গে হাত তুলে মোনাজাত করেন। পরে খানকা শরিফে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন দরবারের সাহেবজাদা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (মা.জি.আ.) ও সৈয়দ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ (মা.জি.আ.)। মূল বক্তব্যে আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মা.জি.আ.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম শুধু মুসলিম জাতির জন্য নয়; বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য রহমত। আমরা তার স্মৃতি ধরে রাখতে এবং উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করতে এ জশনে জুলুস আয়োজন করি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ মনজুর আলম মঞ্জু, সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মিডিয়া কমিটির আহ্বায়ক আক্তার পারভেজ সোহেল, অ্যাডভোকেট মোসাহেব উদ্দিন বখতিয়ার, সদস্য অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, মোহাম্মদ তৈয়বসহ অন্য নেতারা।
জশনে জুলুস কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি হাজারো স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। শোভাযাত্রায় ড্রামসেট প্রবেশ, খাদ্যদ্রব্য নিক্ষেপ ও নারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মিডিয়া কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল বলেন, ‘আজ লাখো নয়, কোটি মানুষের সমাগম হবে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ আয়োজনে মুসল্লিদের নির্বিঘ্ন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
আজ সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম ষোলশহরে আলমগীর খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে জুলুস। শোভাযাত্রা বিবিরহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, ২ নম্বর গেট, জিইসি মোড়, ফের ২ নম্বর গেট হয়ে ষোলশহর-মুরাদপুর-বিবিরহাট অতিক্রম করে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে এসে শেষ হবে। দুপুরে সেখানে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
মন্তব্য করুন