বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র আজ ৮৪ বছরে পা রাখছেন। ১৯৪১ সালের আজকের দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেই হিসাবে আজ ৮৩ বছর পূর্ণ করে তিনি ৮৪-তে পা রাখছেন।
প্রবীর মিত্রের দুই পায়ের হাঁটুতে সমস্যার কারণে ১৬ বছর ধরে ভীষণ অসুস্থ। বড় ছেলে মিঠুন ও মেজো ছেলে নিপুণের কাছেই একসঙ্গে আছেন তিনি রাজধানীর ধানমন্ডির ১ নম্বর রোডের এক বাসায়।
বাবার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মিঠুন জানান, তার বাবার ঘুমের নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যখন ইচ্ছা তখন ঘুমান। আর একটি নির্দিষ্ট রুমের বাইরে তিনি সাধারণত বের হন না। একটি ঘরেই সময় কাটে প্রবীর মিত্রের। চার বছর ধরে এই বাসাতে আছেন প্রবীর মিত্র। একদমই কোনো খোঁজখবর রাখেন না প্রবীর মিত্রের দীর্ঘদিনের কর্মস্থলের প্রিয়জনরা। এই অভিনেতার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান। তার সঙ্গে শেষবার আড্ডাও দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষমেশ তা আর হয়নি। এখন আর কাউকে দেখার ইচ্ছাও নেই তার। খুব কম কথা বলেন। মিঠুন আরও জানান, তার বাবার জন্মদিনে তার বড় বোন ফেরদৌস পারভীন বাসায় আসেন। সবাই মিলে বাবাকে একটু আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার মা নাজমুন্নাহার মারা গেছেন ২০০০ সালে। আর তার ছোট ভাই আকাশ ২০১২ সালে মারা গেছেন। এরপর থেকেই তার বাবাও যেন কেমন হয়ে যান। বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চান তিনি।
১৯৮২ সালে প্রবীর মিত্র মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এর পর থেকে চার শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি ২০১৮ সালে ‘আজীবন সম্মাননা’তেও ভূষিত হয়েছেন।
তবে একুশে পদক কিংবা স্বাধীনতা পদক পাননি তিনি। নায়ক হিসেবে প্রবীর মিত্রের প্রথম চলচ্চিত্র ছিল জহির রায়হানের শেষ সহকারী শেখ নজরুল ও ইলতুত মিস পরিচালিত ‘চাবুক’। এতে প্রবীর মিত্রের নায়িকা ছিলেন কবরী। সর্বশেষ প্রবীর মিত্র এসডি রুবেল পরিচালিত ‘বৃদ্ধাশ্রম’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এরপর আর কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি তিনি।