ভারতের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মল্লিকা শেরাওয়াত। ২০০৩ সালে গোবিন্দ মেননের পরিচালিত খোয়াইশ এবং ২০০৪ সালে অনুরাগ বসুর পরিচালিত মার্ডার সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান এই অভিনেত্রী। এরপর বহু সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন এবং কুড়িয়েছেন প্রশংসাও। তবে মাঝে বেশ কয়েক বছর অভিনয় থেকে বিরতিতে ছিলেন তিনি।
এরপর অনেক বছর তাকে দেখা যায়নি বলিউড পাড়ায়। এবার আবারও অভিনয়ে ফিরছেন মল্লিকা শেরাওয়াত।
৪৮ বছর বয়সী মল্লিকা শেরাওয়াত বি-টাউনে আগের মতো অভিনয় করতে চান। ভুল প্রমাণ করতে চান যে, বয়স বাড়লেই নায়িকাদের গ্ল্যামার শেষ হয়ে যায় না।
তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি আগামী দুই দশক বলিউডে সক্রিয় থাকবেন।
এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মল্লিকা বলেন, ‘বলিউডে একটা ধারণা আছে একজন অভিনেত্রী যখন তার বয়সের শীর্ষে পৌঁছায়, তখন তার আর দ্বিতীয় সুযোগ থাকে না। সে নতুনদের ভিড়ে হারিয়ে যায়। এই প্রথা আমি ভাঙতে চাই। দুই দশক ধরে আমি এখনো অভিনয়ের জন্য ফিট রয়েছি, পরিচালকরা আমার জন্য চরিত্র লিখছেন। এর পরও যারা বলে মল্লিকা আর ফিট নয়, তাদের চিন্তাধারা পুরোনো।’
এদিকে বয়স বৃদ্ধির পরও মল্লিকা তার নিজের বাহ্যিক চেহারা এবং শারীরিক গঠন নিয়ে গর্বিত।
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “আমি ‘মার্ডার’ সিনেমার সময় যেমন ছিলাম, ঠিক তেমনই আছি। একই শরীর, একই উচ্ছ্বাস এবং এ জন্য আমি গর্বিত। কোনো প্লাস্টিক সার্জারি বা বোটক্স করিনি। আমি খুব শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন করি। সময়মতো ঘুমাই, মদপান করি না, সিগারেটও খাই না। তাহলে কেনই বা এসব কৃত্রিম ইনজেকশন বা বোটক্স দরকার? আপনি যদি আপনার চেহারা এসব কেমিক্যালের সঙ্গে মেলান, সেটা আপনার নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে। আমি কাউকে বিচার করি না, তবে আমি কখনো এসব করব না।”
ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে মল্লিকা শেরাওয়াত তার শৈশবের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ছোটবেলায় খুব বিদ্রোহী ছিলাম। আমার মা-বাবা আমাকে সবকিছু দিয়েছিলেন, কিন্তু স্বাধীন চিন্তার সুযোগ দেননি। আমি চেয়েছিলাম আমার জীবন আমার মতো করে কাটাতে। যখন আমি বাড়ি ছেড়ে মুম্বাই আসি, তখন স্বাধীনতাটা পাই। এখানে কোনো পিতৃতান্ত্রিকতা নেই। আমরা মেয়েরা নিজেরাই নিজেদের বেঁধে রেখেছি। আমাদেরই তা ভেঙে বের হতে হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আর্থিক স্বাধীনতা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যতক্ষণ না আপনার কাছে আর্থিক স্বাধীনতা থাকে, আপনার নিয়ন্ত্রণ অন্যদের হাতে; ততদিন আপনি স্বাধীনতার স্বাদ পাবেন না।’
বর্তমানে মল্লিকা মুম্বাইয়ে ফিরে এসেছেন এবং জানান, দেশে ফিরে আসার অনুভূতিটা অন্যরকম ভালো লাগা, যেটা তিনি লস অ্যাঞ্জেলসে থাকার সময় মিস করতেন। তবে কবে থেকে তিনি কাজে ফিরছেন সে বিষয়ে কিছু জানাননি।