প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপানে নারীর স্বাস্থ্য চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। ফলে নারীর গর্ভধারণ ও গর্ভের সন্তানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।
আজ শনিবার সকালে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন কেন জরুরি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় নারী এমপিরা এসব কথা বলেন। ঢাকার কারওয়ান বাজারে আইসিটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে সভার আয়োজন করে নারী মৈত্রী।
সভায় নারী এমপিরা বলেন, সংসদ সদস্যরা আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখে। তাই নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সংসদ সদস্যদের ফোরাম গঠনের প্রস্তাব করেন তারা। অবিলম্বে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাশ ও তা কার্যকর করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ওপর তাগিদ দেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি। প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন এমপি শবনম জাহান শিলা, আরমা দত্ত, নার্গিস রহমান, লুৎফুন নেসা খান, আফরোজা হক রিনা, আদিবা আনজুম মিতা, বাসন্তী চাকমা, সালমা চৌধুরী, উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, সাবেক সংসদ সদস্য শিরিন নাঈম পুনম, আলোচক ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নারী সুরক্ষা নিশ্চিতে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় নারীর কণ্ঠস্বরকে বলিষ্ঠ করা, নারীদের একাত্মতা ও সংহতির মাধ্যমে তামাক আইন সংশোধন এবং তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বৃদ্ধির দাবি উত্থাপন করার লক্ষ্যে নারী মৈত্রী কাজ করছে। সে লক্ষ্যে নারী মৈত্রী সংসদের নারী সদস্যদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় পর্যায়ের ফোরাম গঠন করেছে, যা তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও কর বৃদ্ধির দাবিতে নিরলস সমর্থন ও পরামর্শ দেবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি ধোঁয়াহীন তামাক ব্যবহার করে বলে মুখের ক্যানসার, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া তামাকের কারণে অন্তঃসত্ত্বাদের গর্ভপাত হচ্ছে, সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মায়ের মৃত্যুও হচ্ছে। এজন্য নারী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনীর খসড়া দ্রুত পাশ করার দাবি জানান তারা।
বক্তারা বলেন, তামাক নারী স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। তামাকের কারণে যেসব রোগ হচ্ছে, সেই রোগের চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে অনেক পরিবার দেউলিয়া হচ্ছে যাচ্ছে। তাই তামাক বর্জন করার এখনই উপযুক্ত সময়।
তারা আরও বলেন, নারী স্বাস্থ্যের নীরব ঘাতক ধোঁয়াবিহীন তামাক। নারীদের মধ্যে বৃহত্তর একটি জনগোষ্ঠী তামাকের কারণে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শুধু তাই নয়, পাবলিক প্লেসে ধূমপানের কারণে অধূমপায়ী নারী ও শিশুরাও পরোক্ষ ধূমপানে মারাত্মক স্বাস্থ্যগত ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে সবাইকে রক্ষার জন্য দ্রুত বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটির সংশোধনী পাশ করতে হবে। কেননা, যত দ্রুত আইন পাশ হবে, তত বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।
মন্তব্য করুন