বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, ষোল বছর কোথায় ছিলাম জানতে চান? ষোল বছর পালিয়ে ছিলাম। ষোল বছর জেলখানায় ছিলাম, হাসপাতালে ছিলাম, রক্তাক্ত শরীর নিয়ে পরিবারের বোঝা হয়ে আমরা ছিলাম। শুধু বিএনপি করার কারণে কত শত সূর্য সৈনিকদের সংসার ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
রোববার (২৫ মে) নেত্রকোনার বারহাট্টায় বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সোহেল বলেন, আমাদের অনেক সহযোদ্ধা ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। মিথ্যা মামলায় মাসের পর মাস গেলেও যখন জেল থেকে বের হয় না তখন তার প্রেমিকা তার স্ত্রী তালাক দিয়ে অন্যের বাড়িতে চলে গেছে। এভাবে কত সংসার ধ্বংস হয়ে গেছে শুধু বিএনপি করার কারণে। আর আজকে শুনতে হয় ষোল বছর কোথায় ছিলেন, কী করেছেন। আমরা জানতে চাই ষোল বছর আপনারা কোথায় ছিলেন?
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে যদি বিএনপি না থাকত, তাহলে নেপালের মতো ভারতের রুপি নিয়ে বাজারে গিয়ে বাজার করতে হতো। টিপাইমুখ বাঁধের প্রতিবাদ জিয়ার সৈনিকেরা করেছিল। টিপাইমুখের বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে জিয়ার সৈনিক ইলিয়াস আলী ঘরে বসে থাকতে পারেনি। লংমার্চ নিয়ে ছুটে গিয়েছিল বর্ডারে। সে সুবাদে ইলিয়াস আলীর সন্তান তার পিতাকে খুঁজে পায় না। ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তার স্বামীকে খুঁজে পায় না। এখন বলেন আমরা ভারতের দালালি করি।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে বলেছি। পরক্ষণেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। একদল বলছে ভোটের কথা বলা যাবে না। আমরা কি প্রধান উপদেষ্টার কাছে সিনেমা দেখতে যাব। একটি পলিটিক্যাল পার্টি চাইবে মানুষের ভালোবাসা, জনগণের জন্য কাজ করার সুযোগ ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।
সোহেল বলেন, আমরা তো ভাই আওয়ামী লীগ না। টাকলা মুরাদের মতো নায়িকা চাই না। আমরা মমতাজের মতো সংসদে গিয়ে গান গাইতে চাই না। চাই না ওবায়দুল কাদেরের মতো খেলা হবে ডায়লগ দিতে। আমরা শহীদ জিয়ার সৈনিক। আমরা চাই জনগণের জন্য কাজ করার পরিবেশ।
এনসিপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, তোমরা দল করেছ ভালো হয়েছে। দল কর, জনগণের মাঝে যাও, কাজ কর। কিন্তু এখন শুনি সেই এনসিপি নাকি ক্ষমতায় যাওয়ার পরিবেশ না আসা পর্যন্ত নির্বাচনে যাবে না। আরে ভাই নির্বাচন এত ছোট জিনিস নয়। এই যে বারহাট্টায় এসেছি এখানে কোনো গ্রামে আপনাদের সংগঠন আছে? নেই। কিন্তু বাংলাদেশে এমন কোনো গ্রাম বাকি নেই যেখানে বিএনপির কোনো কর্মী নেই, সমর্থক নেই।
বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাক আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মো. আনোয়ারুল হক।
প্রধান বক্তা ছিলেন শরীফুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক, ময়মনসিংহ বিভাগ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, অ্যাডভোকেট শাহ ওয়ারেছ আলী মামুন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক, ময়মনসিংহ বিভাগ।
মন্তব্য করুন