কুড়িগ্রামে স্কুলমাঠে অবৈধভাবে পশুর হাট বসাতে ব্যর্থ হওয়ায় কালবেলার চিলমারী উপজেলা প্রতিনিধি এস এম রাফিকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির উপজেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জেয়ারা খাতুন রুজির বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, সম্প্রতি প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া চিলমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট বসানোর আয়োজন করেছিলেন স্থানীয় এ নেত্রী। এরপর দুদিন পশু কেনাবেচাও হয়েছিল।
এ নিয়ে কালবেলায় ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিষয়টি সেনাবাহিনীর নজরে আসে। এরপর বিএনপি নেত্রী রুজিকে কুড়িগ্রামে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে তলব করে হাট সরানোর নির্দেশ দেন। এরপর হাট সরাতে বাধ্য হন বিএনপির সেই নেত্রী।
এরপর কালবেলায় সংবাদ পরিবেশন করায় উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক এস এম রাফিকে দলীয় ট্যাগ দিয়ে টাকা দাবির অভিযোগ তুলেন তিনি। জেয়ারা খাতুন রুজি সাংবাদিক এস এম রাফির ফেসবুকে গিয়ে মন্তব্য করে বলেন, তুমি (সাংবাদিক রাফি) যে টাকা আমার কাছে চেয়েছিলে, এটা আমার দেওয়া সম্ভব হয়নি, কারণ আমি অন্যায় করি নাই। ভালো হয়ে যাও। সেটাই ভালো হবে।
রুজি আরও উল্লেখ করে লেখেন, আওয়ামী লীগের দোসর সাংবাদিক রাফি। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তোমার ফেসবুকে পোস্ট করা ৫ আগস্টের আগের ছবি আমার সংরক্ষণে আছে খুব যত্ন সহকারে। জলের মধ্যে ছোট মাছ বেশি লাফালাফি করে। আওয়ামী লীগের দোসর তুমি। তোমার সব ইতিহাস আমাদের কাছে আছে। রোজি অন্যায় করে না, তাই টাকাও কাউকে দেয় না। ভালো হওয়ার পরামর্শ থাকলো। নইলে পূর্ব ইতিহাস উন্মুক্ত হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের দোসর সাংবাদিক রাফি। সব সময়ই মিথ্যা নিউজ করার অভ্যাস পরিত্যাগ করো। টাকা চেয়েছিলে আমার কাছে পাওনি, তাই মিথ্যা নিউজ করছো। তোমার পত্রিকার হেড অফিস কালবেলা, তোমার নামে অভিযোগ দিচ্ছি। আওয়ামী লীগের দোসর সাংবাদিক রাফি। আওয়ামী লীগকে অনেক তেল মাখতে দেখেছি তোমাকে। এখনও আওয়ামী লীগের এজেন্ট হয়ে কাজ করতেছো।
বিএনপি নেত্রী রুজি বলেন, রাফি আর রকি সাক্ষাতে আসেন, কথা হবে। চাঁদা চাইছেন জন্য তো উঠানো হইছে। কত টাকা চাঁদা দাবির প্রশ্নে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নাই।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের সাক্ষাতে এসে কথা বলতে সমস্যা কোথায়, এত বড় সাংবাদিক হইছেন সাক্ষাতে কথা বলতে পারেন না বলে ফোন কেটে দেন।
সাংবাদিক রাফি বলেন, নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে স্কুলমাঠে পশুর হাট বসিয়েছিলেন বিএনপি নেত্রী জেয়ারা খাতুন রুজি। এ নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করায় সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে স্কুলমাঠ থেকে হাট সরিয়ে নেন ওই নেত্রী।
তিনি আরও বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে বিএনপি নেত্রী তার অবৈধ হাট আয়োজন সরিয়ে নিতে বাধ্য হন। এতে তার উদ্দেশ্য হাসিল না হওয়ায় তিনি আমার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো শুরু করেছেন। আমি অনিয়ম, দুর্নীতি ও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করি। এটাই হয়তো তাদের সহ্য হয় না।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি রেশমা সুলতানা বলেন, মহিলা দলের নেত্রী হয়ে পশুর হাট আয়োজন কোনোভাবেই কাম্য নয়। এটা আমাদের জানা ছিল না। আর সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়। এটা করে থাকলে তা ঠিক করেনি। বিষয়টি নিয়ে আমি কথা বলব।
মন্তব্য করুন