

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সুমন খলিফা হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। হত্যায় জড়িত স্ত্রীসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী।
গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী বাউল শিল্পী সোনিয়া আক্তার (২২), ফতুল্লার কাশীপুর ইউনিয়নের উত্তর নরসিংহপুর এলাকার আবুল কাশেম মাস্টারের ছেলে সোনিয়ার পরকীয়া প্রেমিক মেহেদী হাসান ওরফে ইউসুফ (৪২), তার শ্যালক চর কাশীপুরের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুর রহমান (২৮), সহযোগী উত্তর নরসিংহপুরের মৃত বাদশার ছেলে বিল্লাল হোসেন (৫৮), সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ির আব্দুল হাই হাওলাদারের ছেলে আলমগীর হাওলাদার (৪৫) ও দিদার বক্সের ছেলে নান্নু মিয়া (৫৫)।
নিহত সুমন খলিফা (৩৫) বরিশালের আগৈলঝড়ার আন্দারমানিক গ্রামের মন্টু খলিফার ছেলে। তিনি স্ত্রী সোনিয়া আক্তারকে নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ভাড়া থাকতেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, নিহত সুমন খলিফা বেকার ছিলেন। তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দুমাস আগে একটি গানের অনুষ্ঠানে পরিচয়ের সূত্র ধরে তার সঙ্গে মেহেদী হাসানের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে মেহেদীর কাছ থেকে টাকা ধার নিতেন তিনি। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথাও বলতেন তারা। প্রেমের বিষয়টি সুমন খলিফা জেনে যাওয়ায় সংসারে কলহের সৃষ্টি হয়। পরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক।
তিনি আরও বলেন, গত ৩০ নভেম্বর রাতে সুমন ও সোনিয়া বাসা থেকে বেরিয়ে পঞ্চবটি এলাকায় একটি গানের অনুষ্ঠানে যান। রাত ১১টার দিকে স্ত্রীকে রেখে অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যান সুমন খলিফা। তখন মেহেদী হাসান টাকা ধার দেওয়ার কথা বলে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে সুমন খলিফাকে নিয়ে যান মধ্য নরসিংহপুর একটি পরিত্যক্ত জায়গায়। পরে প্রেপ্তারকৃতরা মিলে সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে চলে যায়। পরদিন সকালে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা মন্টু খলিফা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ফতুল্লা থানায় হত্যা মামলা করেন।
মিজানুর রহমান বলেন, মামলাটির তদন্ত করতে গিয়ে নিহতের স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিকের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলে। ফলে মঙ্গলবার রাতে নিহতের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার ও পরকীয় প্রেমিক মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান ও তার শ্যালক আব্দুর রহমান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে অন্যদের গ্রেপ্তার ও ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি, একটি সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। মামুন নামে আরেকজন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন