হেমন্তের ১৫ দিন অতিবাহিত হতে না হতেই মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়ে গেছে বোনা আমন ধান কাটা। কৃষকদের অনেকেই আবার ধান কেটে জমি তৈরি করছেন মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষের জন্য। তবে তুলনামূলকভাবে ধানের ফলন ভালো না হওয়ায় লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ছড়িয়ে ছিটিয়ে কৃষকরা দল বেঁধে ধান কাটছেন। অনেক কৃষক ধান কাটার জন্য রোজ হিসেবে দিনমজুর নিয়েছেন। অনেকে আবার পুরো ক্ষেত চুক্তিতে ধান কাটাচ্ছেন।
তবে কৃষকদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে পানি কম হওয়ায় এ বছর বোনা আমনের ফলন আশানুরূপ হয়নি। যা হয়েছে তাতে দিনমজুর খরচ দিয়ে লাভ হবে না বরং লোকসানই হবে।
উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের খেরুপাড়া গ্রামের কৃষক বারেক মোল্লা জানান, আমি এ বছর দুই বিঘা জমিতে বোনা আমন বুনেছি। কিন্তু পানি বেশি না হওয়ায় ধান ভালো হয়নি। সার আর জন খরচ দিয়ে আমার লোকসান হবে। কারণ দুই বিঘা জমিতে সর্বোচ্চ ৭ থেকে ৮ মণ ধান হবে। এতে খরচ উঠানোই কষ্টকর হবে।
ঝিটকা উজানপাড়া গ্রামের নুরু উদ্দিন জানান, আমি তিন বিঘা জমিতে বোনা আমন বুনেছি। ফলন মাঝারি হইছে। তবে যে হারে খরচ হয়েছে, তাতে খরচের টাকা হয়তো উঠবে। ফলন যা হইছিল তাতে বর্ষার পানি যদি আরও কিছু দিন থাকতো, তাহলে আরও ভালো ফলন হতো। আমাদের এলাকায় ভরপুর একটা বর্ষা দরকার। তাতে জমিতে নতুন পলি পড়তো এবং সব ধরনের ফলনই ভালো হতো।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি বছরে বোনা আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০৭০ হেক্টর জমি আর আবাদ হয়েছে ৩৫৭০ হেক্টর জমিতে। রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৫ হেক্টর আবাদ হয়েছে ৩৫ হেক্টর জমিতে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. সোহেল জানান, চলতি বছরে পানি একটু কম হওয়ায় চরাঞ্চলসহ নিচু এলাকায় রোপা আমনের চাষের পরিমাণ বেশি হয়েছে। এ ছাড়াও বোনা আমনও আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। তবে পানি একটু কম হলেও আমাদের যে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা আছে, তা পূরণ হবে আশা করি। আর কৃষক যাতে ধানের বীজ, সার ঠিক মতো পায় সে জন্য আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ মনিটরিং ছিল।
মন্তব্য করুন