নরসিংদীর ৫টি আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে মনোনয়ন পাননি ১৭ জন আওয়ামী লীগ নেতা। নৌকা না পেয়ে তাদের অনেকেই এখন স্বতন্ত্রের মিছিলে যোগ দিয়েছেন। এদের একজন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা। নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন তিনি।
সিরাজুল ইসলাম মোল্লা কালবেলাকে বলেন, এর আগেও আমি এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। নেত্রী আদেশ দিয়েছেন সবাইকে নির্বাচনে অংশ নিতে। আমি আমার পরিবার ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা সবাই সিদ্ধান্ত দিয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য। তাই স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য ইতিমধ্যে মনোনয়ন নিয়েছি। আশা করি, শিবপুরের ভোটাররা আমাকেই ভোট দিয়ে সংসদে পাঠাবে।
এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ফজলে রাব্বি খান রাব্বি। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঞা মোহনও দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পাননি। তবে মোহন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন না বলে জানা গেছে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও এল জিআরডি মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূইঁয়াকে পরাজিত করে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২১০৪ সালে আবার দলীয় মনোনয়ন লাভ করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজুল ইসলামের কাছে পরাজয় বরণ করেন। এরপর ২০১৮ নির্বাচনে মোহন আবার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। চতুর্থবার এসে মোহন দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ খান হত্যার খুনিদের সঙ্গে তার যোগসাজশে রয়েছে এমন অভিযোগের ফলেই তিনি এবার মনোনয়ন লাভ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাকে মনোনয়ন না দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ খানের ভাতিজা ও সাবেক এমপি রবিউল আওয়াল খান কিরণের ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ফজলে রাব্বি খান রাব্বিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
সরকারদলীয় প্রার্থী রাব্বি বলেন, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে শিবপুরবাসী চির কৃতজ্ঞ। আশা করি, শিবপুরের জনগণ ভোটের মাধ্যমে আমাকে সংসদে পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মানিত করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল সদর থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ও মনোহরদী বেলাবো থেকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য শিল্পপতি আসলাম সানি ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান বীরু এবং রায়পুরা থেকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন বলেন, আমিও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি। দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এর মানে এই নয় যে, আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। যারা মনোনয়ন চেয়েছেন তাদের অনেকেই আমার সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। সভাপতি হতে পারেননি। তারা আজ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। এটাই নিয়ম। নৌকায় ছাড়া আমি অন্য কোথাও ভোট দিতে পারব না। যারা স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করবে তারা নৌকা প্রতীক ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকে কীভাবে ভোট দিবে তা আমার জানা নেই।
শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম ভূঞা রাখিল বলেন, মনোনয়ন চেয়ে পাইনি। দল থেকে যে মনোনয়ন পেয়েছে তার নির্বাচনই করতে হবে। সিরাজুল ইসলাম মোল্লা হেভিওয়েট প্রার্থী হলেও দলের বাইরে গিয়ে আমাদের নির্বাচন করার সুযোগ নেই।
আর্কাইভ 
| ২৭ জুলাই ২০২৪ 
