দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে না যাওয়ার ঘোষণা দিলেন তৃণমূল বিএনপির সভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী। শমসের মবিন বলেছেন, আমরা জোটে যাব কি যাব না এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ৩০০ আসনে আমরা এককভাবে নির্বাচন করব। মানুষ ভোট দেবে ব্যক্তি দেখে, প্রতীক মাথায় রেখে নয়।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে সিলেটের গোলাপগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা শহরে র্যালি ও আলোচনা সভা শেষে এ কথা বলেন তিনি।
শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতানার দল হিসেবে তাদের কার্যক্রম তৃণমূল বিএনপি অনুসরণ করে। তবে নির্বাচনে তাদের সঙ্গে কোনো জোটে যাবে না।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন গত নির্বাচনের আগে বিএনপি ছেড়ে বিকল্পধারায় যোগ দেন। এবারের নির্বাচনের আগে তিনি নব গঠিত তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব নেন। দলের মনোনয়নে এবার সিলেট-৬ আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন সমশের।
এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি এ এলাকার বর্তমান সংসদ সদস্যও। গত নির্বাচনে নাহিদকে ছাড় দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন শমসের। এবার জোটগত নির্বাচন হলে কে কাকে ছাড় দেবেন এ নিয়ে চলছিল জোড় আলোচনা। তবে শমসের মবিন চৌধুরী মঙ্গলবার স্পষ্টতই জানিয়েছেন, তার দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে যাবে না।
আগামী ৭ জানুয়ারি সরকার একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিবে বলে আশা প্রকাশ করে শমশের মবিন আরও বলেন, এবার জনগণ প্রতীক দেখে নয়, যোগ্য ব্যক্তি দেখে ভোট দেবে।
তিনি বলেন, আমরা মানুষের মুক্তির জন্য দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু মানুষের অধিকার পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা হয়নি। বাজারে জিনিসপত্রে অগ্নিমূল্য। রাস্তায় কাজ করলে ঠিকাদাররা লুটপাট করে। মানুষ কথা বলতে পারে না। ভোটের অধিকারর প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষ যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
সাবেক এ কূটনীতিবিদ বলেন, আমি একজন যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা তাই সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আমাকে ভোট দেবে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আলহাজ শফিকুর রহমান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শমসের মুবিন চৌধুরী। মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গোলাম দস্তগীর খান ছামিনের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আকমল আলী, আব্দুল মুতলিব, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ চৌধুরী, সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জিল্লুর রহমান, কাউন্সিলর ফজলুল আলম, মঞ্জিল আহমদ ও জহিরুল ইসলাম।
এর আগে তিনি গত সোমবার রাতে উপজেলার দারানহর (একমাইল) বাজারে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। সেখানে বিপুলসংখ্যক এলাকার লোকজন ছাড়াও তৃণমূল বিএনপির উপজেলা শাখার আহ্বায়ক ছানা মিয়াসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে ১২ ডিসেম্বর পাকহানাদার বাহীনীদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা। স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিবছর এ দিন টিকে গোলাপগঞ্জ মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করে করেন ওই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষরা।
মন্তব্য করুন