কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০৬:৫৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব প্রধান বিচারপতির

বাণিজ্যিক আদালত শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান বিচারপতি। ছবি : কালবেলা
বাণিজ্যিক আদালত শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান বিচারপতি। ছবি : কালবেলা

দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও বিচার ব্যবস্থার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি পৃথক বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

রোববার (১৭ আগস্ট) সিলেটের দ্য গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে বাণিজ্যিক আদালত শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কোনো পৃথক বিচারিক ফোরাম নেই। এখন কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যিক বিরোধগুলোকে ছোটখাটো দেওয়ানি মামলার সঙ্গে একই সারিতে নিষ্পত্তি করতে হওয়ায় দ্রুত, কার্যকর বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এটি আমাদের বিচারকদের প্রতি কোনো সমালোচনা নয়। তাদের নিষ্ঠা প্রশ্নাতীত। বরং এটি একটি কাঠামোগত অসংগতি। এর ফলে মামলার জট যেমন বাড়ছে, তেমনি ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও বিনিয়োগ পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত শুধু অর্থ ঋণ আদালতে প্রায় পঁচিশ হাজারের বেশি মামলা অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি কারও একক কোনো দাবি নয়, বরং বাণিজ্যিক মামলাগুলো বিশেষায়িত আদালতে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও কার্যকর রায়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য বৃহৎ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী সবাই দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সভা-সেমিনারে এই দাবি জানিয়ে আসছে।

প্রধান বিচারপতি বৈশ্বিক উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, রুয়ান্ডা, ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলো বাণিজ্যিক আদালত গড়ে তুলে একটি দক্ষ, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, এসব দেশের অভিজ্ঞতাগুলো বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা বহন করে। প্রধান বিচারপতি প্রস্তাবিত বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থার সাতটি মূল স্তম্ভের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো- স্পষ্ট ও একীভূত এখতিয়ার নির্ধারণ, আর্থিক সীমারেখা ও স্তরভিত্তিক কাঠামো, বাধ্যতামূলক কেস ম্যানেজমেন্ট ও কঠোর সময়সীমা, সমন্বিত মধ্যস্থতা ব্যবস্থা, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার (যেমন, ই-ফাইলিং, ডিজিটাল ট্র্যাকিং, হাইব্রিড শুনানি), সবার জন্য ন্যায়সংগত প্রবেশাধিকার এবং জবাবদিহি ও কর্মক্ষমতা পর্যবেক্ষণ।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাণিজ্যিক আদালতের কার্যক্রম হবে পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর, জবাবদিহিমূলক এবং বাণিজ্যের পরিবর্তনশীল চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আইন উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ

গণঅভ্যুত্থানের পাটাতন বিএনপিই তৈরি করেছিল : আজাদ

আপনার মোবাইল ফোন সুরক্ষিত তো?

রাতেই ফারুকীর জটিল অস্ত্রোপচার হতে পারে

খাবার খেলেই ঢেঁকুর ওঠে, এই অভ্যাস ভালো না খারাপ?

শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির মেলা

কেউ কেউ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য অনেকভাবে কথা বলছেন : এ্যানি

চবিতে শতভাগ আবাসন নিশ্চিতের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, প্রশাসনিক ভবনে তালা

খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে ছাত্রদল নেতার ব্যতিক্রমী আয়োজন

বেতন পাওয়ার পাঁচ মিনিট পরই চাকরি ছাড়লেন কর্মী

১০

কুয়েতে ভেজাল মদে ২৩ জনের মৃত্যু, মূলহোতা বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

১১

ছাত্রশিবিরের ৩০ দফা শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে

১২

এআই-এর সহায়তায় দুই মাসে ১০ কেজি ওজন কমালেন তরুণী!

১৩

কনটেইনারবাহী গাড়িতে পালাচ্ছিলেন পুলিশ কোপানো মামলার প্রধান আসামি

১৪

মহাখালীর পেট্রল পাম্পের আগুন নিয়ন্ত্রণে

১৫

মাছ ধরতে গিয়ে খালে মিলল ৬ গ্রেনেড

১৬

ভারতের সর্বনাশে বাংলাদেশের ‘পৌষ মাস’

১৭

বিদেশে পাচার হওয়া ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির ‘তথ্য’ প্রধান উপদেষ্টার হাতে

১৮

সপ্তাহের সেরা সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তি, পদ প্রায় ১৭০০

১৯

দেশ যেন চরমপন্থা ও মৌলবাদের অভয়ারণ্য হতে না পারে : তারেক রহমান

২০
X