মাদক মামলায় আয়নাবাজির সেই যুবলীগ নেতা নাজমুল হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৩ মে) ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আমিনুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. মিলন এ তথ্য জানান।
এদিন নিজের সাজা অন্যজনকে দিয়ে খাটানোর ঘটনায় সাত বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি যুবলীগ নেতা নাজমুল বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এ সময় তার আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে রোববার নাজমুল হাসানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কালবেলায় ‘মাদক মামলায় যুবলীগ নেতার আয়নাবাজি’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। মাদক মামলায় উত্তরার যুবলীগ নেতা নাজমুলের সাজা হলেও তার পরিবর্তে ভাড়ায় জেল খাটেন মিরাজুল নামে এক ব্যক্তি। সাজা খাটলেও চুক্তিমতো পুরো টাকা পাননি সেই মিরাজুল। টাকা চাইলে তাকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে ফের জেলে পাঠানো হয়।
পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে কালবেলা। সেদিনই বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এরপর আদালত মামলাটি ফের তদন্তের নির্দেশ দেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি অধিকতর তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হলে এক মাসেও আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি। এমনকি মামলার অধিকতর তদন্ত-সংক্রান্ত কোনো তথ্যই নেই থানা পুলিশ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছে। গত ২০ মার্চ ফের ‘‘যুবলীগ নেতার ‘আয়নাবাজি’ মামলার তথ্য নেই কারও কাছে” শিরোনামে আরেকটি সংবাদ প্রকাশ করে কালবেলা।
এরপর গত ২৪ এপ্রিল সেই নাজমুলকে ঢাকার উত্তরা থেকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। তবে পরদিন তাকে রহস্যজনকভাবে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে কোর্টে চালান দেওয়া হলে সেদিনই আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে যান নাজমুল। একই দিন মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসানের পরিবর্তে অপর এক ব্যক্তির কারাভোগ করার ঘটনায় আসামির প্রকৃত পরিচয় কীভাবে শনাক্ত করা হয়েছিল—এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিচারককে লিখিতভাবে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার আসামিকে কী প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করেছিলেন, এর প্রমাণপত্রসহ হলফনামা আকারে লিখিত জবাবও ওই সময়ের মধ্যে তাকে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন