কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

উপদেষ্টা হয়েও পাথর তোলা বন্ধ রাখতে পারলাম না : রিজওয়ানা

বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি : সংগৃহীত
বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি নজিরবিহীন লুটপাট হয়েছে সিলেটে পর্যটন কেন্দ্রগুলোর অন্যতম কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ ‘সাদাপাথর’ এলাকায়। মনোমুগ্ধকর সেই ‘সাদাপাথর’ এলাকাটি এখন প্রায় বিবর্ণ। ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে পর্যটনকেন্দ্রটি।

এ বিষয়ে বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আগের চার বছর জাফলং-এ পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে পেরেছিলাম, এখন আমি উপদেষ্টা হয়েও পারলাম না।

সোমবার (১১ আগস্ট) এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাথর উত্তোলনে সর্বদলীয় ঐক্য দেখছি। একটি সুন্দর জিনিস কী করে হাতে ধরে কেমন অসুন্দর করতে হয় সেটা শিখতে হলে বাংলাদেশে আসতে হবে। চোখের সামনে অপূর্ব সুন্দর একটি জায়গা জাফলং চোখের সামনে নষ্ট হতে দেখলাম। ধ্বংসলীলা দেখলাম।

তিনি বলেন, শুনলাম, এই পাথরগুলো নাকি তুলতেই হবে। কেন তুলতে হবে, কেন? কারও কাছে কোনো পরিসংখ্যান নেই। অথচ পরিসংখ্যান বলছে দেশের চাহিদার মাত্র ৬ ভাগ পূরণ হয় এই পাথরগুলো তুলে। বাকি ৯৪ ভাগই আমদানি করতে হয়। ৯৪ ভাগ আমদানি করতে পারলে বাকি ৬ ভাগ কেন পারলাম না!

তিনি আরও বলেন, কেন আমরা ভিয়েতনামে গিয়ে ওদের নদীর ইকো ট্যুরিজম দেখি, কেন আমরা জাফলং-এ একটা ইকো ট্যুরিজম করতে পারলাম না! আমরা যেমন সৌন্দর্যমণ্ডিত জাফলং দেখেছি, কেন নতুন প্রজন্ম সেই জাফলং দেখতে পারল না! সেখানে আবার রাজনৈতিক ঐক্য দেখলাম।

উপদেষ্টা বলেন, ‘সিলেটে দুজন উপদেষ্টা গেলাম, সেখানে পাথর তুলতে সর্বদলীয় ঐক্য দেখলাম। আগের চার বছর জাফলং-এ পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে পেরেছিলাম, এখন আমি উপদেষ্টা হয়েও পারছি না। জাফলং রক্ষা করব বলে কোনো ঐক্য দেখলাম না। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের বাস্তবতা। জাফলংটা ধ্বংস করে দিয়ে কীসের উন্নয়ন, কার উন্নয়ন হচ্ছে? আমরা যদি পাথর না তুলে ইকো ট্যুরিজম করি, হিসাব করে দেখুন পাথর তুলে কত আয় হয় আর ইকো ট্যুরিজম থেকে কত আয় হয়! এই কম্পারেটিভ অ্যানালাইসিস কী কেউ করেছে? একজন ডিসি বলেছিলেন, ইকো ট্যুরিজমে আমরা পাথর তোলা থেকে বেশি আয় করতে পারব। একটা মানুষ সারাদিন পানিতে নেমে পাথর তোলেন, এটাকে আপনার এমপ্লয়মেন্ট বলেন! এটা এক্সপ্লয়েটেশন। এটা একদম ক্লিয়ার কেস অফ এক্সপ্লয়েটেশন।’

ধলাই নদীর উৎসমুখে সীমান্তের জিরো লাইন সংলগ্ন ১০ নম্বর এলাকার নাম ‘সাদাপাথর’। সেই সাদাপাথর এলাকায় প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটকের পদচারণা ঘটে কেবল সৌন্দর্যের টানে। লুটপাটের কারণে মনোমুগ্ধকর সেই ‘সাদাপাথর’ এলাকাটি এখন প্রায় বিবর্ণ।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের অনেকে বলেছেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এখানে দিনে ও রাতে লুটপাট চলেছে। প্রতিরাতে অন্তত শতাধিক গাড়ি পাথর কোম্পানীগঞ্জ থেকে বের হয়ে যেতে দেখেছেন এলাকাবাসী।

পাথর লুটের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতা জড়িত বলে তাদের অভিযোগ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আ.লীগ নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পড়ে ছিল ৯ রাউন্ড গুলির খোসা

উত্তরায় যুব-স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের অবস্থান

জবি ছাত্রী হলে ছাত্রদলের উপহার সামগ্রী বিতরণ

চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়ার অঙ্গীকার কফিল উদ্দিনের

বরগুনায় জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ

কক্সবাজারে মার্কেটে আগুন

৮ দলের কর্মসূচি নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পোস্ট

চট্টগ্রামে বিজিবি মোতায়েন, সর্বোচ্চ সতর্কতায় পুলিশ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নদীগুলোর নাব্যতা পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নেবে : বাচ্চু

নিক্সনের গানম্যানের নেতৃত্বে তৈরি হচ্ছিল পেট্রোল বোমা ও ককটেল : পুলিশ

১০

দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন

১১

অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীর পাশে ছাত্রদল নেতা দয়াল

১২

একজন উপদেষ্টা ধানমন্ডিতে ভোটার হতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন : ব্যারিস্টার অসীম

১৩

‘গণভোটের চেয়ে আলুচাষিদের ন্যায্যমূল্য পাওয়া বেশি প্রয়োজন’

১৪

খতমে নবুওয়তের মহাসম্মেলন সফলে ঢাকায় গণমিছিল

১৫

চলন্ত পিকআপ থেকে ককটেল বিস্ফোরণ

১৬

ইস্তানবুল হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড মিরপুর শাখার উদ্বোধন

১৭

ধানের শীষে ভোট দিলে জনগণ নিরাপদে থাকবে : মাসুদুজ্জামান

১৮

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ১৪ স্পটে অবস্থান নেবে শিবির

১৯

দুই ইউপি সদস্যসহ আ.লীগের ৫ নেতা গ্রে’প্তা’র

২০
X