কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কিছু দৈনন্দিন অভ্যাসেই বাড়ছে পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

পিত্তথলির পাথর অনেক সময় নীরবে শরীরে তৈরি হয়, কোনো লক্ষণই বোঝা যায় না। কিন্তু একবার পিত্তনালিতে বাধা তৈরি হলে শুরু হতে পারে তীব্র পেটব্যথা, বমি, বদহজমসহ নানা সমস্যা।

চিকিৎসকদের মতে, আমাদের প্রতিদিনের কিছু ভুল অভ্যাসই অজান্তে এই সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ম্যানিপাল হাসপাতাল বান্দর, পুনে-এর সার্জিক্যাল গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডা. অনিকেত পায়াগুডে হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনই পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ অভ্যাসের কথা তুলে ধরেছেন।

ডা. পায়াগুডে জানান, আগের তুলনায় এখন কম বয়সেই অনেকের পিত্তথলিতে পাথর ধরা পড়ছে। পিত্তথলিতে জমে থাকা শক্ত কলেস্টেরল বা অন্যান্য উপাদান একসঙ্গে হয়ে পাথর তৈরি করে। বেশির ভাগ সময় এগুলো কোনো সমস্যা না করলেও পিত্তনালিতে আটকে গেলে দেখা দেয় তীব্র ব্যথা, বমিভাব, বমি ও হজমের সমস্যা। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে অস্ত্রোপচার পর্যন্ত লাগতে পারে।

যে ৫টি অভ্যাস পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি বাড়ায়

বারবার খাবার বাদ দেওয়া : নিয়মিত খাবার না খেলে দীর্ঘ সময় পিত্তথলিতে পিত্ত জমে থাকে। এতে পিত্ত ঘন হয়ে কলেস্টেরল জমার সুযোগ পায় এবং ধীরে ধীরে পাথর তৈরি হতে পারে। নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেলে পিত্তথলি ঠিকভাবে খালি হয়।

অতিরিক্ত ভাজা ও চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া : ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড, প্রসেসড খাবার ও অতিরিক্ত তেল-চর্বি পিত্তে কলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। দীর্ঘদিন এ ধরনের খাবার খেলে গলস্টোন হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

শারীরিক পরিশ্রমের অভাব : সারাদিন বসে থাকা বা খুব কম নড়াচড়া করলে শরীরের বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। এতে পিত্তের চলাচলও কমে যায়। স্থূলতা গলস্টোনের বড় ঝুঁকির কারণ, তাই নিয়মিত হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

হঠাৎ দ্রুত ওজন কমানো (ক্র্যাশ ডায়েট) : খুব দ্রুত ওজন কমালে লিভার বেশি কলেস্টেরল তৈরি করে। এতে পিত্তের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং পাথর তৈরি হতে পারে। ধীরে ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমানোই সবচেয়ে নিরাপদ।

খাবারে ফাইবার ও পানি কম থাকা : ফাইবার কম খেলে হজম ভালো হয় না এবং পিত্ত সঞ্চালনও ধীর হয়ে পড়ে। শাকসবজি, ফলমূল ও হোলগ্রেনজাত খাবার পিত্তথলিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে পিত্ত তরল থাকে এবং পাথরের ঝুঁকি কমে।

কখন অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে?

সব গলস্টোনের জন্য অস্ত্রোপচার দরকার হয় না। তবে বারবার ব্যথা, সংক্রমণ, প্যানক্রিয়াটাইটিস বা পিত্তনালিতে বাধা তৈরি হলে চিকিৎসকেরা সাধারণত ল্যাপারোস্কোপিক কোলেসিস্টেকটমি (ছোট ছিদ্র করে পিত্তথলি অপসারণ) করার পরামর্শ দেন। জটিল অবস্থায় খোলা অস্ত্রোপচারও লাগতে পারে।

সঠিক খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পানি পান এবং হঠাৎ ওজন কমানোর প্রবণতা এড়িয়ে চললে পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। দীর্ঘদিন পেটব্যথা, বদহজম বা বমিভাব থাকলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ছবিতে প্রথমে কী দেখছেন বলে দেবে, মানুষ আপনাকে কেমনভাবে দেখে

আগুনে ভস্মীভূত ২০০ বছর আগের সওদাগর বাড়ি

মাঠেই হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেলেন ঢাকা ক্যাপিটালসের সহকারী কোচ জাকি

স্ত্রীকে হত্যার পর শ্বশুরকে ফোন, ঘাতক সেই জালাল গ্রেপ্তার 

যে ৬ অভ্যাস আপনাকে দ্রুত বয়স্ক করে তুলতে পারে

গণঅধিকার পরিষদ থেকে পদত্যাগ করলেন রাশেদ

কুয়াশার চাদরে ঢাকা কুড়িগ্রাম, শীতে বিপর্যস্ত চরবাসী

ভোটার হলেন তারেক রহমান

‘খুদে মেসি’ সেই সোহান চান তারেক রহমানের সাক্ষাৎ

স্বর্ণ, রূপা ও প্লাটিনামের দামে নতুন রেকর্ড

১০

অনুশীলনের সময় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ঢাকার সহকারী কোচ

১১

ইসিতে তারেক রহমান

১২

জুস ক্যাটাগরিতে দেশের সেরা ব্র্যান্ডের পুরস্কার পেল প্রাণ ম্যাংগো

১৩

১৫ বছর পর অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট জয়ের স্বাদ ইংল্যান্ডের

১৪

শীতে কেন বেশি ঘুম পায় ও শরীর ঝিমিয়ে থাকে, জানাচ্ছে বিজ্ঞান

১৫

পাঙাশ মাছ খাওয়া কতটা নিরাপদ, পুষ্টিবিদরা কী বলছেন

১৬

আধার কার্ড ‘কেড়ে নিয়ে’ ১৪ ভারতীয়কে পুশইন

১৭

সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে আগুন, ঘুমন্ত কর্মীর মৃত্যু

১৮

১৪ ঘণ্টা পর দৌলতদিয়া নৌরুট সচল, যানবাহনের দীর্ঘ সারি

১৯

কিছু দৈনন্দিন অভ্যাসেই বাড়ছে পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি

২০
X