

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তপশিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তপশিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক দল ও ইচ্ছুক প্রার্থীদের ভোটে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনে অনেকেই প্রার্থী হতে চান। তবে জনমনে একটি প্রশ্নে রয়েই যায়, সবাই কি নির্বাচনে প্রার্থী হতেপারবেন? বাংলাদেশের সংবিধান ও নির্বাচনের আইন অনুযায়ী, দেশের সব নাগরিক যেমন নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না, তেমনি ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রেও সবাই ভোট দেওয়ার যোগ্য নন।
সংবিধানে আছে, নির্বাচনে অংশ নিতে হলে কোনো ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং তার বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হতে হবে। তবে আইন ও সংবিধানের ধারা অনুযায়ী প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধি-নিষেধও রয়েছে।
অন্যদিকে আদালত ঘোষিত ফেরারি বা পলাতক কোনো আসামি এখন থেকে আর কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাবেন না।
চলুন প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা-অযোগ্যতাগুলো জেনে নেওয়া যাক-
নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নিয়ে বাংলাদেশের সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) একাধিক বিধান রয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, সেই সঙ্গে তার বয়স কমপক্ষে ২৫ বছর হতে হবে। তবে শুধু বয়সসীমা পূরণ করলেই প্রার্থী হওয়া যায় না—এ ক্ষেত্রে আরও কিছু শর্ত ও বিধিনিষেধ মানতে হয়।
সংবিধানের পাশাপাশি ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ ধারাতেও সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, কেউ যদি সরকারের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন, তাহলে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
দুর্নীতির অভিযোগে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত, অপসারিত বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত হলে এবং ওই ঘটনার পর পাঁচ বছর পূর্ণ না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। একইভাবে সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে—সামরিক বা বেসামরিক চাকরি থেকে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণের পর তিন বছর পার না হলে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। সরকার বা কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও এই একই শর্ত প্রযোজ্য হবে।
কোনো ব্যক্তি সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কে জড়িত থাকলেও তিনি সংসদ সদস্য পদে লড়তে পারবেন না।
এ ছাড়া বিদেশি কোনো রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান বা তহবিল গ্রহণকারী কোনো বেসরকারি সংস্থার কার্যনির্বাহী পদে কর্মরত থাকলে, কিংবা ওই পদ থেকে পদত্যাগ বা অবসর নেওয়ার পর তিন বছর পূর্ণ না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না।
অন্যদিকে, যারা ঋণখেলাপি, ঋণের জামিনদার অথবা টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি কিংবা সরকারের কোনো সেবাদানকারী সংস্থার বিল খেলাপি—তারাও নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
এদিকে সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী, আদালত ঘোষিত ফেরারি বা পলাতক আসামি এখন থেকে কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বা অন্য কোনো পদে অধিষ্ঠিত থাকলেও তিনি প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
মন্তব্য করুন