দৈনিক কালবেলায় ২৪ অক্টোবর (মঙ্গলবার) ‘সংকট দেখিয়ে বাড়ছে সবজির দাম’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত থেকে বাছাইকৃত মতামত প্রকাশ করা হলো।
মো. শাহাদাত সরকার রনি নামে পাঠক লিখেছেন, দেশের সরকার কি সবজিও বাইরের দেশ থেকে আমদানি করে। হয়তো বৃষ্টির কারণে কিছু সবজির জমিতে ক্ষতি হয়েছে। তার মানে এই নয় যে, সবকিছুর দাম এত বৃদ্ধি পাবে। সরকারের তদারকি করে ঠিক আছে কিন্তু সেটা শুধু ক্যামেরার সামনে আর সব সময় যা দেখি তার সাথে কোনো মিল নাই। কিন্তু কেন?
মো. আর এ নবীন নামে অপর এক পাঠক লিখেছেন, আসলে কোনো সংকট নাই। যা আছে সবই সরকারের অব্যবস্থাপনা, সিন্ডিকেট, মুদ্রাস্ফীতি, অকারণে বেশি বেশি টাকা ছাপানো ইত্যাদি। এর মূল কারণ হলো সরকার ক্ষমতায় অবৈধভাবে টিকে থাকার জন্য এসব সিন্ডিকেট মুদ্রাস্ফীতি কমাতে পারছে না। তারা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রশাসন ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের ওপর কোনো কথা বলতে পারে না। এটা নিয়ে সরকারের কোনো টেনশন নেই। জনগণের যা হবার হোক!
অন্যদিকে মোখলেসুর রহমান নামে অপর এক পাঠক সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, সঠিক মতামত দিতে গেলে, সংকট সৃষ্টিকারী সিন্ডিকেট ও মাফিয়াদের রোষানলে পড়ে জীবনটা তেজপাতা হয়ে যেতে পারে! তাই নীরবে নিভৃতে অশ্রু বিসর্জন দিয়ে, স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি: ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি ছাড়া আমাদের দুঃখ দুর্দশা দেখার ও শোনার কেউ নেই! হে প্রভু! তুমি মহাবিচার দিবসে, এই সংকট সৃষ্টিকারী মুনাফাখোর মাফিয়া সিন্ডিকেটদের কঠিন আজাবের মুখোমুখি করিও! আমীন!’
আবার মো. আশেক নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, এই কথাটার কোনো যুক্তি আছে সংকটের সাথে আর সবজির সাথে সম্পর্ক কি? সবজি তো আর বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে না। তাহলে সবজির দাম বেড়ে যাবে কেন? এগুলো শুধু দলীয় সিন্ডিকেটের কারণে আজকে দেশের বাজারে এই অবস্থা। এগুলো সরকার চাইলে একদিনেই ঠিক করে ফেলতে পারে। শুধু দলীয় সিন্ডিকেটের কারণে সরকার এগুলোর দিকে মাথা ঘামাচ্ছে না। সরকার এখন ক্ষমতা আর দল নিয়ে ব্যস্ত। তাই দেশের মানুষ কি খাচ্ছে, কীভাবে খাচ্ছে, দেশের বাজার কি রকম, কি পরিস্থিতি সেটা সরকার জানে না। তাই দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে দেশকে বাঁচাতে হলে আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবর্তী পরিবার এবং দেশের জনগণকে একতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
মো. নজরুল ইসলাম নামে এক পাঠক সিন্ডিকেট ও বাজার মনিটরিংয়ে সরকারের দুর্বলতাকে দায়ী করেছেন। তিনি লিখেছেন, প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক সবজির উৎপাদন কম হয়েছে সত্য। তাই বলে সবজির দাম এত বৃদ্ধি পাওয়ার কথা নয়। আমাদের দেশে বাজার সিন্ডিকেট আছে সত্য। সরকারের মনিটরিংয়ের অভাব আছে সত্য। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রী যখন বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙতে গেলে সমস্যা হবে। আবার সিন্ডিকেট চক্র সরকারের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। তখন বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন আছে। সর্বোপরি অতিরিক্ত টাকা ছাপানোর ফলে মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে। ফলে অতিরিক্ত মূল্যস্ফীতির মূল্য দিচ্ছে সাধারণ জনগণ।
অন্যদিকে জাহিদ হাসান নামে এক পাঠক বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, বাণিজ্যমন্ত্রীর কাজ বাজার নিয়ন্ত্রণ করা... না করতে পারলে পদত্যাগ করাই উচিত।
অপর এক পাঠক আবু তাহের মজুমদারও সরকারের তদারকির অভাবকে দায়ী করেছেন। তিনি লিখেছেন, সরকারের সঠিক তদারকির অভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণহীন।
এ ছাড়া নূর আহমেদ সিদ্দিকী নামে এক পাঠক লিখেছেন, দেশটা তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে। ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি জ্যামিতিক হারে বাড়ছে সবজির দাম। মানুষের নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যাচ্ছে। গরিবরা মানুষের কাছে হাত পাততে পারে কিন্তু মধ্যবিত্তরা লজ্জায় ক্ষিধের কথা কাউকে বলতেও পারে না, সইতেও পারে না। দেশে কৃষিমন্ত্রী, আর খাদ্যমন্ত্রীর কাজ কি?
আয়য়ান হোসেন তন্ময় নামে অপর এক পাঠক লিখেছেন, বাজারে গেলে বুক ফেটে কান্না আসে।
মীর কাশেম নামে আরেক পাঠক লিখেছেন, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের যোগসাজশে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সবজিসহ সব খাদ্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। তারা সুযোগসন্ধানী। নানা অজুহাতে বারবার দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট মারতেছে। সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দুর্বৃত্ত সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য দমনে অপরাগতা জানিয়েছে! ভুক্তভোগী আমজনতা এমন দুর্বৃত্তপনা সিন্ডিকেট থেকে মুক্তি চায়। স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ চায়।
মো. কাইয়ুম ভূইয়া লিখেছেন, কৃষক তার ন্যায্যমূল্য পায় না। কিন্তু সিন্ডিকেট, পরিবহন চাঁদাবাজ এবং দালালের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ১০ গুণ হয়ে যায়। এক কেজি বেগুনের খরচ হয় ১০ টাকা কিন্তু বাজারে ১০ গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
আতিকুর রহমান আতিক এমন পরিস্থিতির জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনা, অযোগ্য এবং অদক্ষ ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়াকে দায়ী করেছেন।
সাইদুর রহমান নামে অপর এক পাঠক লিখেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রথমেই বাজার মনিটরিং দরকার। প্রশাসনের মাধ্যমে।
তবে মো. কবির নামে এক পাঠক ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের যুদ্ধের কারণে সব্জির দাম বেশি।
শামীম খান বলেন, ‘সংকট নয়, রাস্তার মোড়ে মোড়ে চাঁদাবাজি আর অতি মুনাফাভোগী সিন্ডিকেট এর মূল কারণ।’
সুমন পাটোয়ারী বলেন, সংকট দেখিয়ে জিনিসের দাম বাড়ানো এগুলো রাজনৈতিক ফায়দা লুটা ছাড়া আর কিছু না।
তবে হাসান নামে এক পাঠক এমন পরিস্থিতির জন্য সরাসরি সরকারকে দায়ী করেছেন। তিন লিখেছেন, ‘এর জন্য একমাত্র বর্তমান ক্ষমতাসীনরাই দায়ী।’
আব্দুস সালাম বলেন, সরকারের ব্যর্থতা উন্নয়ন উন্নয়ন স্লোগান দিয়ে দেশের মানুষকে জিম্মি করে ভোটার অধিকার হরণ করে এবং জিনিসপাতির দাম নিয়ন্ত্রণ না করতে পারা এটা সম্পূর্ণ সরকারের ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতা নিয়ে সরকার এবং সরকারের দলীয় নেতাকর্মী এবং মন্ত্রীরা পদত্যাগ করা উচিত।
মন্তব্য করুন