ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম
প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:২০ পিএম
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:২০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুবার্ষিকী

বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন আজীবন

শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী। ছবি : সৌজন্য
শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী। ছবি : সৌজন্য

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখ। রাত তখন ১২টা বেজে ২০ মিনিট। দিন তারিখের হিসাবে ভারতের জন্য এক গভীর সংকট। আকাশবাণী দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর কণ্ঠস্বর ভেসে এলো- ‘আমাদের দেশ, আমাদের জাতির এক সংকট মুহূর্তে আমি আপনাদের উদ্দেশ্যে বলছি।' ধীর, স্থির কণ্ঠস্বর। অবিচলিত। বিশ্বাসে অটুট। দুর্নিবার। স্থিতপ্রজ্ঞ।

‘ঘণ্টাকয়েক আগে ৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার কিছু পর পাকিস্তান আমাদের বিরুদ্ধে পুরোমাত্রায় যুদ্ধ শুরু করেছে। পাকিস্তানের বিমানবাহিনী অকস্মাৎ আমাদের অমৃতসর, পাঠানকোট, শ্রীনগর, অবস্তীপুর, উত্তরলাই, যোধপুর, আম্বালা ও আগ্রা বিমানঘাঁটিতে হানা দিয়েছে। পাক স্থলবাহিনী আমাদের আত্মরক্ষা ঘাঁটি সুলেমানকী, খেমকরণ, পুষ্প ও অপরাপর এলাকায় গোলাগুলি বর্ষণ করে চলেছে।’...

রাত্রির নিথরতা খান খান করে জাতির কর্ণধার শ্রীমতী গান্ধীর কণ্ঠ আবার ভেসে এলো। প্রতিধ্বনিত হলো বেতার যন্ত্রে : ‘আজ বাংলাদেশের যুদ্ধ ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে । আমার সরকারের এবং ভারতীয় জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে এক বিরাট দায়িত্ব।... ‘আমাদের জনগণ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইচ্ছাপ্রণোদিত, অকারণ এ আক্রমণ চূড়ান্তভাবে প্রতিরোধ করতে যে সক্ষম হবেন তাতে আমার কোনো সন্দেহ নেই।'

ইন্দিরা গান্ধীর সেই ধীর, স্থির কণ্ঠস্বর রাত্রির নিস্তব্ধতা নিথরতা খান খান করে ভেঙে দেয়। ভারতীয় জাতির কর্ণধার শ্রীমতী গান্ধীর কণ্ঠ আবার ভেসে এলো। প্রতিধ্বনিত হলো বেতার যন্ত্রে। সংকট মুহূর্তে দেশবাসীর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে বললেন।

১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারত পার্লামেন্টে তাঁর দেওয়া ভাষণে গোটা ভারতবাসীকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করলেন। পার্লামেন্ট সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে পাকিস্তানের আক্রমণের মোকাবিলায় দৃঢ় সংকল্পের কথা জানালেন। কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই, ডিএমকে, মুসলিম লীগ, জনসংঘ, স্বতন্ত্র সদস্য- সবারই একই চাওয়াকে তিনি এক রেখায় দাঁড় করালেন। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত স্বীকৃতি দিল এক নতুন জাতির, এক নতুন দেশের। বিশ্বের বুকে জন্ম হলো আর একটি রাষ্ট্রের। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের।

ইন্দিরা গান্ধী জানতেন, তার এই চাওয়াকে বিশ্বের ক্ষমতাশালী পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সহজে মেনে নিবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন এদের সরাসরি বিরোধিতাকে উপেক্ষা করে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপন করেন। উদ্দেশ্য একটাই, আর সেটা হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। ফলে ১৯৭১ সালে ব্রেজনেভ-ইন্দিরার বৈঠকের প্রেক্ষাপট ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ইন্দিরা গান্ধী মস্কো সফরে এসে ভারত-সোভিয়েত মৈত্রী চুক্তি সম্পাদনে সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান ব্রেজনেভকে ধন্যবাদ জানান।

মস্কোতে ইন্দিরা গান্ধী তার বক্তৃতায় শুধু লিওনিদ ব্রেজনেভের নাম উল্লেখ করে বলেন, I am very happy to have come to your country and talked with your leaders. I am especially happy that the General Secretary, Mr. Brezhnev, was able to join the talks. I believe that our talks have been useful and that they will certainly lead to better understanding between us. (The Years of Endeavour; Selected speeches of Indira Gandhi August 1969-August 1972; p. 725)। বলাবাহুল্য, সোভিয়েত-ভারত মৈত্রী চুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম প্রধান শক্তিকে কাছে পায় বাংলাদেশ। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে যেমন বৃহৎ শক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নকে পাশে পেয়েছে। সোভিয়েত নেতাদের ইন্দিরা গান্ধীর পাশে দাঁড়ানোর এই চাওয়ার পেছনে ছিল তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা।

বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও বাঙালির প্রতি ইন্দিরা গান্ধীর আগ্রহের পেছনের কারণ ছিল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯৩৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী যখন শান্তি নিকেতনে পড়তে আসেন তিনি শুধু গুরুদেবকেই পেলেন না, শিক্ষক হিসেবে পেলেন ক্ষিতিমোহন সেন, নন্দলাল বসু এবং প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতো মনীষীদের। কবিগুরু তাকে এতটাই স্নেহ করতেন, যার কারণে তিনি ইন্দিরা গান্ধীকে ডাকতেন প্রিয়দর্শিনী নামে। রবীন্দ্রনাথ ইন্দিরাকে পেয়ে খুশি হয়েছিলেন। শান্তি নিকেতন থেকে ইন্দিরা বিদায় নেওয়ার পর জওহরলালকে ১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে চিঠি লিখেছিলেন, তাতে ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি তার ইতিবাচক পরিচয় পাওয়া যায়। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন : ‘ইন্দিরা চমৎকার মেয়ে; সে তার শিক্ষক ও সহপাঠীদের মনে একটা মধুর স্মৃতি রেখে গেছে তোমার চারিত্রিক দৃঢ়তা ও আদর্শ সে পেয়েছে ।’

ইন্দিরা গান্ধী শান্তি নিকেতনের সেই দিনগুলোর কথা কখনো ভোলেননি। শান্তি নিকেতনে তিনি কী পেয়েছিলেন- এমন উত্তরে বলেছিলেন, শান্তি নিকেতনে এসে জানলাম, শিখলাম- শিল্পকলা জীবনের সঙ্গে মেশানো। গুরুদেবই আমাকে শিখিয়েছেন। ‘জীবন আর শিল্প একসূত্রে গাঁথা।’

রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি ও আদর্শ তাই তাকে টেনে নিয়ে গেছে বাংলা ও বাঙালির প্রতি ভালোবাসায়। বাংলাদেশের সংগ্রামে নিজের জীবন বিপন্ন করেও তার প্রতিদান দিয়েছেন। যার প্রমাণ মেলে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর কলকাতা সফরের সময়। সেদিন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণার কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন : ‘গুরুদেবের দূরদৃষ্টি ও জীবনদর্শন আমাদের উভয়কেই অনুপ্রাণিত করেছে। তার বিরাটত্বের এটাই বড় প্রমাণ যে, তিনি আমাদের ও আপনাদের জনগণকে সমানভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ভারত সরকারের আমন্ত্রণে কলকাতা সফরে যান। ওই দিনের দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রসঙ্গ বারবার এসেছে। ১৯৭২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় আনন্দবাজার পত্রিকায় সংবাদ শিরোনাম ছিল- ‘দুই দেশকে অনুপ্রাণিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ।’ বঙ্গবন্ধুর কলকাতা সফরের পুরো অনুষ্ঠানেই ছিল রবীন্দ্র চেতনা দিয়ে সাজানো। ওই দিনের জনসভাস্থলে সমবেত কণ্ঠে শুরুতে গাওয়া হয় ‘বাঁধ ভেঙে দাও’ এবং সবশেষে ‘আমার সোনার বাংলা’ এবং ‘জনগণমন’- কবিগুরুর লেখা দুটি জাতীয় সংগীত, দুই প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রের।

শুরুতে বঙ্গবন্ধুকে শুধু কলকাতা ও ভারতের জনগণের পক্ষ থেকেই নয়, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের শিষ্যা হিসেবেও শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী স্বাগত জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর সম্মানে কলকাতায় যে একটিমাত্র সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল সেটিও রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’। আনন্দবাজার পত্রিকায় এই অনুষ্ঠানের মনোরম বিবরণ পাওয়া যায়। এতে বলা হয়েছিল, ‘‘... ভোজসভা থেকে অতিথিরা চলে যান রাজভবনের দোতলায় পূর্ব প্রান্তের ঘরে। সেখানে রবিতীর্থের শিল্পীরা ‘চিত্রাঙ্গদা’ নৃত্যনাট্যটি অভিনয় করেন। এক ঘণ্টা অনুষ্ঠান চলে। দুই প্রধানমন্ত্রী মুগ্ধ দৃষ্টিতে বসে অভিনয় দেখেন। অভিনয়ের পর তারা শিল্পীদেরসহ ছবি তোলেন। ‘চিত্রাঙ্গদা’ নৃত্যনাট্যে সংগীতাংশে ছিলেন, শ্রীমতী সুচিত্রা মিত্র ও শ্রী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।’’ শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানার্থে দেওয়া রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যে রবীন্দ্র সংগীত বাজানো হয়েছিল তার মধ্যে ছিল- ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর, যে রাতে মোর দুয়ারগুলি, ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু’ ইত্যাদি।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের পেছনে যেমন ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা ছিল, ঠিক তেমনই বাংলাদেশ পুনর্গঠনেও তিনি অনন্য ভূমিকা রাখেন। বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্যদের ২৫ মার্চ ১৯৭২-এর মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শুধু তাই নয়, ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ঢাকার জনসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী নতুন দিনের নতুন বাংলাদেশে তার সহযোগিতার রূপ তুলে ধরেন স্বগতভাবে। এতে দিল্লির সহযোগিতা থাকবে কিন্তু প্রভাব থাকবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন ‘বাংলার বীরেরা সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা করেছেন। এবার নিজস্ব নীতির ভিত্তিতে দেশকে গড়ে তুলুন। স্বাধীনতা অর্জনে বাঙালি জাতির ত্যাগ, তিতিক্ষা ও সংগ্রামের প্রশংসা করে শ্রীমতী গান্ধী আরও বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের এই দুর্জয় শক্তিকে বাঙালি জাতি যদি দেশ গঠনের কাজে লাগায় তবে তাহাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন সফল হবেই।’

বাংলাদেশ সম্পর্কে ইন্দিরা গান্ধী ভারতের মনোভাব ব্যক্ত করছিলেন জনতার স্বতঃস্ফূর্ত মুহুর্মুহু জয়ধ্বনির মধ্যে। তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দীর্ঘ পথ। সারা পথ লোকে লোকারণ্য। মিছিলের স্রোত। শুধু পতাকা আর পতাকা। বাংলাদেশ আর ভারতের। আর থেকে থেকে উত্তাল জনতার জয়ধ্বনি হচ্ছিল ইন্দিরা গান্ধী, বঙ্গবন্ধু এবং ভারত বাংলাদেশ মৈত্রীর। সেদিন উচ্ছ্বসিত পত্র-পত্রিকার ব্যানার শিরোনাম হলো কবিতার ভাষায় ‘আজিকে উষার শুভ্র লগনে উদিছে নবীন সূর্য গগনে।’

ঢাকা সফরে এসে ইন্দিরা গান্ধী ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপ নেন, তা শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও মৈত্রীর ইতিহাসে সূচনা করে এক নতুন অধ্যায়ের। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দুই প্রধানমন্ত্রী শান্তি, মৈত্রী ও সহযোগিতার এক ঐতিহাসিক চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেন। দু’দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক সংহতির প্রতিশ্রুতিও দেন। এ চুক্তি অনেকটা আগস্ট ১৯৭১ সালে স্বাক্ষরিত ভারত সোভিয়েত মৈত্রী চুক্তির অনুরূপ। অথচ এই চুক্তির অপপ্রচার করে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলো হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে বছরের পর বছর।

বস্তুত, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নটি ইন্দিরা গান্ধীর কাছে ছিল গণতন্ত্রের এক আদর্শের লড়াই। বাংলাদেশ সমস্যার রাজনৈতিক ও মানবিক সমাধানই প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী গান্ধী চেয়েছিলেন। তাই তো দেশ-বিদেশের রাজধানীতে গিয়ে শ্রীমতী গান্ধী প্রতিটি রাষ্ট্রের প্রধানের কাছে বাংলাদেশের পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন। বলেছিলেন : ‘দুনিয়াতে আদর্শের জন্য অনেক লড়াই হয়েছে। যে লড়াইয়ের মোকাবিলা মিত্র বাহিনী ও মুক্তি বাহিনী করেছে সেটিও ছিল আদর্শের। সে আদর্শ স্বাধীনতার, গণতন্ত্রের, মানবতার। কোনো বৈষয়িক লাভের জন্য নয়। পররাজ্য গ্রাসের জন্যও নয় এ লড়াই।’

শ্রীমতী গান্ধীর এ সাফল্যের মূলে রয়েছে তার দূরদর্শিতা। ঘটনাকে যত তাড়াতাড়ি আঁচ করে নিতে পারেন তিনি, আর কেউ তেমন পারেন কিনা সন্দেহ। প্রতিটি ঘটনা ঘটার আগে তার বাস্তব সম্ভাব্যতা সম্পর্কে শ্রীমতী গান্ধীর সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক, অনন্য, নির্ভুল পদক্ষেপ। এই শিক্ষা তিনি পেয়েছিলেন তার পিতা জওহরলাল নেহরুর কাছ থেকে। ইন্দিরা গান্ধীকে তিনি যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার উদ্দেশে লেখা পত্রাবলি দিয়ে রচিত হয়েছে ‘গ্লিম্পসেস অব ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি বা ‘বিশ্ব-ইতিহাস প্রসঙ্গ’। পিতা জওহরলাল নেহরুর আদর্শের যথার্থ এই যোগ্য উত্তরসূরিকে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে তাকে আজীবন স্মরণীয় করে রাখবে।

১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর প্রাণ হারালেন ইন্দিরা গান্ধী। নিজের দুই দেহরক্ষীর গুলিতে লুটিয়ে পড়লেন। মাত্র ৬৬ বছর বয়সে ক্ষমতা থাকা অবস্থায় নিহত হলেন।

তার শাসনকালে সবচেয়ে বড় অবদান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিজের জীবন বিপন্ন করেও অসামান্য সহযোগিতা করে গেলেন। বিশ্বের বুকে যার ফলে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম। ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুদিনে আমরা জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।

ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম : অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাক্তন উপউপাচার্য, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কঠোর ট্রাম্প / পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না বিদেশি শিক্ষার্থীরা

৩০ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

৩০ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

চাঁদা না দেওয়ায় বিএনপি নেতার হাত-পা ভাঙলেন ছাত্রদল নেতা

আজ মিলবে ট্রেনের ৯ জুনের ফিরতি টিকিট 

চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে পাহাড়ধস ও জলাবদ্ধতার শঙ্কা

ঈদের জামা না পেয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা

বিরুলিয়ায় মাহামুদুল হাসান আলাল চেয়ারম্যানের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

স্বাস্থ্য পরামর্শ / ব্লাড ক্যান্সার কী, কেন হয় এবং প্রতিকারের উপায়

১০

গভীর রাতে ফারুককে সরিয়ে দিল এনএসসি, দায়িত্ব নিচ্ছেন বুলবুল

১১

আবারো মহানুভবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তারেক রহমান

১২

‘জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়েই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়’

১৩

টিআরএনবি’র কর্মশালা / আইসিএক্স বাতিলে অবৈধ ভিওআইপি ও রাজস্ব ফাঁকির আশঙ্কা বিনিয়োগকারীদের

১৪

থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য রবির রক্তদান কর্মসূচি

১৫

রাজধানীতে বৈজ্ঞানিক সম্মেলন বাইউসকন-২০২৫ অনুষ্ঠিত

১৬

জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি ডিএনসিসির কন্ট্রোলরুম স্থাপন

১৭

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড গভীর রাতে প্রজ্ঞাপন / ফারুকের মনোনয়ন বাতিল, দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত বুলবুল

১৮

জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ

১৯

ব্যবসায়ীর হাতের কবজি কাটার অভিযোগ বিএনপির কর্মীর বিরুদ্ধে 

২০
X