আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরব রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। সরকার ও সংশ্লিষ্টদের চাপে রাখতে নানা কৌশল নিচ্ছে বিভিন্ন গোষ্ঠী। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। এই ভিসানীতির ফলে বিপাকে পড়তে পারেন বহু সরকারি কর্মকর্তা। বিশেষ করে যাদের পরিবার বা পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন, অথবা যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ রয়েছে।
এই শঙ্কা ভাবিয়ে তুলেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকেও। ওইসব কর্মকর্তা নির্বাচনের সময় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
তবে বসে নেই আওয়ামী লীগও। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্নভাবে সম্পর্ক রয়েছে এমন সরকারি কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করছে আওয়ামী লীগ। মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার পর এ ধরনের আমলাদের চিহ্নিত করতে তৎপর হয়েছে দলটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন ভিসানীতি ঘোষণার পর জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক কর্মকর্তার মধ্যে দেখা দেয় উৎকণ্ঠা। বিশেষ করে যেসব কর্মকর্তার স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা কিংবা ভাইবোন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস কিংবা পড়াশোনা করছেন। দেশটিতে যাদের সম্পদ রয়েছে তারা আরও বেশি দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাই আগামী নির্বাচনে তাদের পক্ষে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। এ কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত কর্মকর্তাদের আগামী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রাখতে চায় না দলটি।
এদিকে তালিকা করার বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে রাজি হননি ক্ষমতাসীন দলের কোনো নেতা। তারা বলছেন, নির্বাচনকালে সরকারি কর্মকর্তাদের কাকে কোথায় দায়িত্ব দেওয়া হবে—তা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়। এখানে দলের কোনো ভূমিকা নেই। তবে কেউ দলীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারেন, এমনটা জানা গেলে অবশ্যই সেই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে ভাবা হবে।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক আমলা রশিদুল আলম কালবেলাকে বলেন, বিএনপি নানারকম তালিকা করে সরকারি কর্মকর্তাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। এভাবে ভয় দেখিয়ে কোনো কাজ হবে বলে মনে হয় না। ভিসানীতি বা অন্যকিছু দিয়ে এসব কর্মকর্তাকে নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকা রাখতে প্রভাবিত করা যাবে না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ২৫ মে বাংলাদেশের জন্য আলাদা ভিসানীতি ঘোষণা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এতে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা সৃষ্টিকারী ও তাদের স্বজনদের ভিসা দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয় দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দেবে; তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। দেশটি ইতোমধ্যে নাইজেরিয়া, উগান্ডা ও সোমালিয়াসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
তবে এসব দেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে নির্বাচনের অল্প কিছুদিন আগে অথবা পরে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেওয়া হয়েছে জাতীয় নির্বাচনের অন্তত সাত মাস আগে।
মন্তব্য করুন